ঈদ মানে খুশি, আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে সময় কাটানো, আর একটুখানি প্রশান্তি খোঁজা। কিন্তু আপনি জানেন কি, আমাদের শরীরেও এমন একটি হরমোন আছে যা এই প্রশান্তি নষ্ট করতে পারে? এর নাম কর্টিসল। চলুন জেনে নিই কর্টিসল কী, কেন এটি ক্ষতিকর, এবং ঈদের ছুটিকে কাজে লাগিয়ে কীভাবে কর্টিসল কমিয়ে আরও প্রাণবন্ত থাকা যায়।
কর্টিসল কী এবং কেন ক্ষতিকর?
কর্টিসল হলো আমাদের শরীরের স্ট্রেস হরমোন। এটি আমাদের দেহকে চাপের সময় দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানাতে সাহায্য করে—যেমন: বিপদের সময় পালিয়ে যাওয়া বা লড়াই করার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া। কিন্তু যখন কর্টিসলের মাত্রা দীর্ঘ সময় ধরে বেশি থাকে, তখন তা হয়ে দাঁড়ায় বিপজ্জনক:
- উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়
- ওজন বাড়াতে সাহায্য করে, বিশেষ করে পেটের চর্বি
- ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়
- মন খারাপ, উদ্বেগ ও বিষণ্নতা তৈরি করে
- রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়
কর্টিসল কমানোর প্রাকৃতিক উপায়
শরীর ও মনের ওপর চাপ কমালে কর্টিসলের মাত্রা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে। নিচে কিছু কার্যকরী পন্থা দেওয়া হলো:
- ঘুম ঠিক রাখুন – প্রতিদিন ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমান
- ব্যায়াম করুন – হালকা হাঁটা, যোগব্যায়াম বা ড্যান্স
- গভীর শ্বাসপ্রশ্বাস ও মেডিটেশন
- খুশিমুখে সময় কাটান – হাসলে কর্টিসল কমে
- প্রাকৃতিক আলোতে সময় কাটান – সূর্যের আলো মানসিক সুস্থতা বাড়ায়
- ক্যাফেইন ও চিনিযুক্ত খাবার কম খান
- ধন্যবাদ বা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন প্রতিদিন
ঈদের ছুটিতে কর্টিসল কমানোর ৫টি সহজ পন্থা:
- প্রাকৃতিক পরিবেশে একটু সময় কাটান। ঈদের ছুটিতে গ্রামের বাড়ি গেলে মাঠে-ঘাটে একটু হাঁটুন। শহরেই থাকলে ছাদে বা পার্কে বসে প্রকৃতি উপভোগ করুন।
- আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে খোলামেলা গল্প করুন। পছন্দের মানুষের সঙ্গে খোলামেলা কথা বললে কর্টিসল হরমোন কমে যায়।
- ঈদের খাবার মানেই বিরিয়ানি ও সেমাই—তবে একটু পরিমাণমতো খান। সঙ্গে রাখুন ফল, সালাদ ও লেবু-জল।
- প্রিয় গান শুনুন বা ধর্মীয় সংগীত শুনুন। মিউজিক থেরাপি সত্যিকারের শান্তি দিতে পারে।
- ঈদের নামাজ ও ধ্যানের মাধ্যমে মানসিক প্রশান্তি খুঁজুন। আধ্যাত্মিক চর্চা শরীরের স্ট্রেস কমাতে অসাধারণ ভূমিকা রাখে।
কর্টিসল যেমন জীবন বাঁচাতে সাহায্য করে, তেমনি অতিরিক্ত কর্টিসল আমাদের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্য নষ্ট করে দেয়। ঈদের ছুটি শুধু আনন্দের সময় নয়, বরং কর্টিসল কমিয়ে নিজেকে নতুন করে পাওয়ার এক দারুণ সুযোগ।