৫৩
কোরবানি ঈদ মানেই আনন্দ, উৎসব, আর রান্নার ব্যস্ততা। মাংস কাটাকাটি, পরিষ্কার, মসলা মাখানো, রান্না—সবই চলে একসঙ্গে। কিন্তু এতসব কাজের মাঝে সবচেয়ে অবহেলিত থাকে আমাদের শরীর, বিশেষ করে হাতের ত্বক।
ঈদের দিন ও পরদিন মাংস ধোয়া, ঝাল-মসলা মাখানো, ও তেল-মসলাযুক্ত রান্না করার কারণে অনেকের হাতের ত্বক হয়ে পড়ে রুক্ষ, শুষ্ক, জ্বালাপোড়া করা এবং কখনো কখনো চামড়া ফেটে যায়। এই সমস্যার প্রতিকার ও প্রতিরোধে কিছু সহজ কিন্তু কার্যকর যত্নের নিয়ম মেনে চললেই আপনি রাখতে পারেন আপনার হাতকে সুন্দর ও সুস্থ।
কেন হয় এই সমস্যা?
- দীর্ঘ সময় পানি ও কাঁচা মাংসে হাত লাগানোর কারণে ত্বকের প্রাকৃতিক তেল নষ্ট হয়ে যায়
- মসলার ঝাঁজ ও ঝালের সংস্পর্শে ত্বকে জ্বালাপোড়া, অ্যালার্জি বা লালচে হয়ে যাওয়া
- ডিশওয়াশার বা কেমিক্যাল জাতীয় ক্লিনার ব্যবহারে ত্বকে র্যাশ
- ধুলাবালি ও রান্নার গরমে অতিরিক্ত ঘাম, যা ত্বকের পিএইচ ব্যালেন্স নষ্ট করে

কেমিক্যালযুক্ত সাবান বাদ দিয়ে হালকা ফেস ওয়াশ বা বেবি সাবান দিয়ে হাত ধুলে ত্বক শুষ্ক হয় না, ছবি: দ্যা মমস কো ব্লগ
সমস্যা এড়াতে প্রস্তুতিমূলক ব্যবস্থা
- রান্না বা মাংস কাটাকাটির সময় সিলিকন বা রাবারের গ্লাভস ব্যবহার করলে ত্বকের সঙ্গে সরাসরি ঝাল-মসলা বা কাঁচা মাংসের সংস্পর্শ হয় না।
- কেমিক্যালযুক্ত সাবান বাদ দিয়ে হালকা ফেস ওয়াশ বা বেবি সাবান দিয়ে হাত ধুলে ত্বক শুষ্ক হয় না।
- বারবার পানি ব্যবহার করার ফলে হাত শুকিয়ে যায়। কাজের ফাঁকে একটি হালকা, অ্যালকোহল ফ্রি হ্যান্ড ক্রিম বা অলিভ অয়েল ব্যবহার করুন।
ঈদের পর হাতের যত্নে করণীয়
- একটি পাত্রে হালকা গরম পানি, ১ চা চামচ বেকিং সোডা ও ১ চা চামচ লেবুর রস মিশিয়ে তাতে ৫–১০ মিনিট হাত ডুবিয়ে রাখুন। এটি ত্বক পরিষ্কার ও নরম করবে।
- চিনি ও মধু মিশিয়ে হাতে ২-৩ মিনিট স্ক্রাব করুন। এটি মৃত কোষ দূর করে ত্বককে মসৃণ করে।
- দই, মধু ও সামান্য অলিভ অয়েল মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরি করুন। ১৫ মিনিট হাতে লাগিয়ে রেখে ধুয়ে ফেলুন। এটি ত্বকে কোমলতা ফিরিয়ে আনে।
- রাতে ঘুমানোর আগে ভ্যাসেলিন, গ্লিসারিন বা নারিকেল তেল হাতে ভালো করে লাগিয়ে নিন। চাইলে সিলিকন গ্লাভস পরে ঘুমাতে পারেন।
যেগুলো এড়িয়ে চলবেন:
- অ্যালকোহলযুক্ত স্যানিটাইজার বেশি ব্যবহার
- থালাবাসন ধোয়ার সময় গ্লাভস ছাড়া ডিটারজেন্ট ব্যবহার
- অতিরিক্ত লেবু বা কাঁচা হলুদ সরাসরি ত্বকে লাগানো (এতে র্যাশ হতে পারে)