Home স্থাপত্য ও প্রকৌশল আটলান্টিস দ্য পাম

আটলান্টিস দ্য পাম

নিজস্ব প্রতিবেদক
১৭৭ views

একের পর এক চমক দেখাচ্ছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বাণিজ্যিক রাজধানী দুবাই। পর্যটন নগর হিসেবে বেশ আগেই পরিচিতি পেয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটি। আকাশচুম্বী অট্টালিকা, অভিজাত হোটেল, রিসোর্ট-কৃত্রিম দ্বীপপুঞ্জ, রঙিন আলোকরশ্মির মাধ্যমে চোখধাঁধানো নগরে পরিণত দুবাই। বিলাসবহুল জীবনযাপনেও নেই জুড়ি। প্রতিনিয়ত এ নগরের সৌন্দর্য উপভোগে ছুটে আসেন অসংখ্য ভ্রমণপ্রিয় পর্যটক, ব্যবসায়ী, ধনাঢ্য ব্যক্তি, খ্যাতিমান তারকারা। শুধু তা-ই নয়, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান, প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরাও অবকাশ যাপনে বেছে নেন নগরটি। এসব প্রমোদভ্রমণকারীদের ভ্রমণকে আরও আনন্দদায়ক করতে গড়ে উঠেছে অভিজাত হোটেল। এসব হোটেলের মধ্যে অন্যতম আটলান্টিস দ্য পাম। জৌলুশময় এই হোটেলটি সম্পর্কে এবারের লেখনী।

অন্যতম অভিজাত হোটেল

পৃথিবীর অন্যতম অভিজাত হোটেল আটলান্টিস দ্য পাম। পারস্য উপসাগরের বুকে কৃত্রিম দ্বীপশহর পাম জুমেরায় এই হোটেলটি অবস্থিত। বিলাসবহুল এই হোটেলের যেকোনো রুম ও সুইট থেকেই পারস্য উপসাগরের নয়নাভিরাম নীল জলরাশি উপভোগ করা যায়। হোটেলটিতে রয়েছে ১ হাজার ৫৪৪টি রুম ও সুইট। সুইটে আয়োজন করা হয় সভা-সেমিনারসহ নানা ধরনের জাতীয়, আন্তর্জাতিক, পারিবারিক ও ব্যবসায়িক অনুষ্ঠান। ধনকুবেরদের বিয়ে ও সুন্নতে খৎনার মতো অনুষ্ঠান হয় এখানে।

Pinterest.jpg 22 1 11zon

চোখধাঁধানো আভিজাত্য
হোটেলের মেঝেতে রয়েছে নয়নাভিরাম মার্বেল টাইলস। ওপরে রয়েছে বিভিন্ন ঝাড়বাতির আলোর ঝলকানি ও কারুকাজ, যা দেখে চোখ কপালে উঠে যায়। প্রতিটি কক্ষে আছে চোখধাঁধানো নামীদামি সব আসবাব। এ ছাড়া দামি দামি শো-পিস ও পেইন্টিংসের দেখা মিলবে হোটেলের প্রায় সবখানেই। এই হোটেলের বিভিন্ন অংশে স্বর্ণের ব্যবহার যে কারও নজর কাড়বে। বাথরুমে রয়েছে সোনায় মোড়ানো বেসিন, বাথটাব ও শাওয়ার। হোটেলসজ্জায় ব্যবহৃত প্রতিটি উপাদানেই রয়েছে আভিজাত্যের ছোঁয়া।

অ্যাকুরিয়ামে সাগরতলের অনুভূতি

বিশ্বের সবচেয়ে বড় ওয়াটার পার্ক রয়েছে এই হোটেলে। এ ছাড়া রয়েছে টেনিস ক্লাব, স্কুবা ডাইভিং, ওয়াটার স্কিইং, স্পা, ২৪ ঘণ্টা রুম সার্ভিস, ইনডোর ও আউটডোর পুল, ওয়াটার স্লাইড, লেজি রিভার, ওয়েভ পুল ও হট টাব গেমস রুম নাইটক্লাবসহ নানা বিনোদনের সুবিধা ও শপিং সেন্টার।

Pinterest.jpg 55 3 11zon

তাবৎ দুনিয়ার সুস্বাদু ও দামি খাবার

এই হোটেলে ঐতিহ্যবাহী আরবীয় খাবারের পাশাপাশি বিদেশি খাবারেরও বড় সংগ্রহশালা রয়েছে। বুফে ও ননবুফে উভয়ভাবেই নেওয়া যায় খাবারের স্বাদ। রয়েছে ৩২টি রেস্টুরেন্ট ও বার, যেখানে মিলছে তাবৎ দুনিয়ার সুস্বাদু ও দামি খাবার। ভোজনরসিকেরা এই স্বাদ নিতে ছুটে আসেন হোটেলটিতে।

ব্যস্ততম কিডস ক্লাব

এই হোটেলে বড়দেরই শুধু অবকাশ যাপনের ব্যবস্থা রয়েছে এমনটা নয়। রয়েছে শিশুদের চিত্তবিনোদনের জন্য কিডস ক্লাব। সেখানে ৪-১২ বছরের শিশুরা নানা ধরনের খেলায় মেতে উঠতে পারে। শিশুরাও বড়দের মতো এসব জোনে রাখা বিভিন্ন খেলনা ব্যবহার করে মনকে রাঙায়। তাদের আনন্দ ও মনমাতানো দৃশ্য দেখে তাদের বাবা-মায়েরা পুলকিত হন। এখানে এসে একাকার হয়ে যায় সব অঞ্চলের শিশুরা।

হরেক রকম ভাষার ব্যবহার

আরবি, হিন্দি, ইংলিশ, স্প্যানিশ, রাশিয়া, ফ্রেঞ্চসহ বিশ্বের ১৭টি ভাষা ব্যবহার হয় এই অভিজাত হোটেলে। তাই বিশ্বের যেকোনো প্রান্ত থেকে এলেও ভাষার জন্য বেগ পেতে হয় না।

জুমেরা সৈকত

২৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে ছোট্ট এ সৈকতটি মূলত সার্ফিং, প্যারাসেলিং ও সুইমিংয়ের জন্য বিখ্যাত। আর সঙ্গে রয়েছে বিশ্বখ্যাত সেভেন স্টার হোটেল বুর্জ আল আরবের হাতছানি। শুধু কি তা-ই, আসার পথে পাম জুমেরা ও জুমেরা বিচ রেসিডেন্সটাও আকর্ষণ করে এখানকার অতিথিদের। দিনের আলো নিভে গেলেও সৌন্দর্যে এতটুকু ভাটা পড়ে না সৈকতে। বরং ভিন্ন ভিন্ন ঘরানার আলোর রোশনাইয়ে আলোকিত হয় পুরো জুমেরা।

খরচাপাতি

বিলাসবহুল এই হোটেলের সবচেয়ে দামি সুইটে এক রাত থাকার জন্য গুনতে হয় ৬০ হাজার মার্কিন ডলার বা প্রায় ৬৫ লাখ টাকা। তবে রুম ও সুইটের সুবিধা অনুযায়ী এর খরচ বিভিন্ন রকম হয়। তবে বিলাসবহুল এই হোটেলটির ভেতরে খাবারের জন্য অনেক রেস্টুরেন্ট রয়েছে, যেখানে শুধু অর্থশালী ও ধনকুবেররা খেতে যেতে পারেন।  

আরও যা পড়তে পারেন

কমেন্ট করুণ