Home সর্বশেষ আর্থিক সঙ্কটে কর্মী ছাঁটাই করছে হিটলারের ‘পিপল কার’!

আর্থিক সঙ্কটে কর্মী ছাঁটাই করছে হিটলারের ‘পিপল কার’!

চঞ্চল ঘোষ
৭২ views

এডলফ হিটলারের স্বপ্নের কার ‘ভক্সওয়াগেন’। যা ‘পিপল কার’ নামেও পরিচিত। বর্তমান গাড়ির মার্কেটে ব্যাপক প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হচ্ছে এটি। বিশেষ করে এশিয়ান গাড়ি নির্মাণকারী কোম্পানিগুলোর সঙ্গে বাজারে পেরে উঠছে না জার্মানির এই গাড়ি কোম্পানি। আর্থিক সঙ্কটে এরইমধ্যে ছাঁটাই করেছে বহু কর্মী।

১৯৩৮ সালে উলফসবার্গে প্রতিষ্ঠিত ভক্সওয়াগেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর জার্মানির অর্থনীতিকে শুধু পুনরুজ্জীবিতই করেনি, বিশ্বে গাড়ি প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান হিসেবে শীর্ষস্থানও দখল করে নেয়। ১৯৩৮ সালে বার্লিন অটো শো অনুষ্ঠানে এই গাড়ির উদ্বোধন করেন হিটলার।

প্রযুক্তিপ্রেমী হিটলার ১৯৩০ সালেই পিপল কার বা ভক্সওয়াগেন তৈরির চিন্তাভাবনা শুরু করেন, যেন জার্মান নাগরিকরা গাড়ি ব্যবহার করতে পারে। আর যেটি হবে সস্তা। ১৯৩৩ সালে দেশটির চ্যান্সেলর হওয়ার পর গতি পায় তার পরিকল্পনা। বিখ্যাত গাড়ির ইঞ্জিনিয়ার ফার্নান্দো পোর্শেকে এটি নকশা তৈরির দায়িত্ব দেন তিনি।

তখন এই আইকনিক কারের নাম দেওয়া হয় ভক্সওয়াগেন বিটল। পোর্শে হিটলারের কথা অনুযায়ী নকশা তৈরি করেন। দুজন বয়স্ক মানুষের সঙ্গে তিনজন শিশু অনায়াসে বসার ব্যবস্থা রাখা হয় গাড়িতে। যেটি দামে হবে সস্তা আর জার্মানরা সহজেই এটির সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারবে।

তবে পোর্শের বৈজ্ঞানিক জ্ঞানের সঙ্গে এই গাড়ির নকশায় যোগ হয় হিটলারের রাজনৈতিক দর্শন। যার মধ্যে লুকিয়ে ছিল হিটলারের সামরিক অভিলাষ। কিন্তু ১৯৩৯ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে এটি আর পিপল কারে রূপান্তর করার সুযোগ হয়নি। উল্টো হিটলারের সামরিক ইচ্ছায় প্রতিফলন ঘটে এই গাড়ি ব্যবহার করার ক্ষেত্রে।

Hitler

প্রযুক্তিপ্রেমী হিটলার ১৯৩০ সালেই পিপল কার বা ভক্সওয়াগেন তৈরির চিন্তাভাবনা শুরু করেন, ছবি: বিবিসি

 

১৯৪১ সালে শুধু ৪১টি গাড়ি নির্মাণ করেছিল ভক্সওয়াগেন। যা পিপল কার হিসেবে গণ্য হয়। কিন্তু এরপর এটি পিপল কার নয়, বরং সামরিক কার হিসেবে উপযোগী করে তোলা হয়। যুদ্ধ শেষে ১৯৪৫ সালে ৪,৩২৯ গাড়ির উৎপাদন করে ভক্সওয়াগেন। যার সবকয়টি ছিল সামরিক যান।

অবশ্য পরবর্তীতে আবার নতুন করে যাত্রা করে কোম্পানিটি। এবার এর দায়িত্বে আসে ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ। দ্রুতই জার্মানির ভঙ্গুর অর্থনীতিকে শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড় করানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। হিটলার না থাকলেও তার স্বপ্নের কার এখনও রয়েছে।

তবে দীর্ঘ সময় ধরে জার্মানির অর্থনীতিতে ব্যাপক অবদান রাখা এই কার এশিয়ান মার্কেটে তীব্র প্রতিযোগিতার মুখোমুখি। এতে আর্থিক সঙ্কটে পড়ে হাজার হাজার কর্মীকে ছাটাই করেছে কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি স্থানীয় তিনটি কারখানা বন্ধ করার সিদ্ধান্তও নিয়েছে নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানটি।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস থেকে অনূদিত

আরও যা পড়তে পারেন

কমেন্ট করুণ