Home বাণিজ্য এলএনজি সরবরাহকারীর নতুন তালিকায় শেল, বিপি, আরামকোসহ ২৩ কোম্পানি

এলএনজি সরবরাহকারীর নতুন তালিকায় শেল, বিপি, আরামকোসহ ২৩ কোম্পানি

নিজস্ব প্রতিবেদক
১১৬ views

বাংলাদেশে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) সরবরাহকারীর তালিকায় যুক্ত হতে যাচ্ছে শেল, বিপি, আরামকো ও গ্লেনকোরের মতো বৈশ্বিক ২৩ জ্বালানি কোম্পানিগুলো। অন্তর্বর্তী সরকারের জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা ফাওয়াজুল কবির খান রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের আমলে ভিটল, গানভোর এবং এক্সিলারেট অ্যানার্জি— এই তিনটি কোম্পানির কাছ থেকে এলএনজি আমদানি করত বাংলাদেশ। তবে গত আগস্ট মাসে আগস্ট শেখ হাসিনার পলায়ন ও তার নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের পর ক্ষমতায় আসা অন্তর্বর্তী সরকার এক্ষেত্রে অন্যান্য কোম্পানির প্রবেশের সুযোগ করে দেয়।

১৭ কোটি মানুষ অধ্যুষিত বাংলাদেশ তার অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটানোর জন্য ২০১৮ সাল থেকে এলএনজি আমদানি করা শুরু করে। প্রতি বছরই দেশে বাড়ছে এলএনজির চাহিদা। ২০২৩ সালে মোট ৫২ লাখ মেট্রিক টন এলএনজি আমদানি করেছে বাংলাদেশ, যা আগের বছর ২০২২ সালের চেয়ে দ্বিগুণ।

এলএনজি ক্রয় বাবদ প্রতি বছর বাংলাদেশকে ব্যয় করতে হয় ৬ হাজার কোটি টাকা। মূলত শিল্পপ্রুতিষ্ঠানের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করা হয় এ জ্বালানি। প্রতি বছর যে পরিমাণ এলএনজি আসে বাংলাদেশে, তার অর্ধেকেরও বেশি আমদানি করা হয় সরকারি উদ্যোগে, কাতার এবং ওমান থেকে।

বাকি অংশ আমদানি করেন বেসরকারি আমদানি কারকরা। ২০১৮ সাল থেকে এ পর্যন্ত ভিটল, গানভোর এবং এক্সিলারেট অ্যানাার্জি— এই তিন কোম্পানির কাছ থেকেই এলএনজি কিনে আসছিল বাংলাদেশের ব্যবসায়ী-আমদানিকারকরা।

জ্বালানি উপদেষ্টা জানিয়েছেন, নতুন প্রায় ২৪টি কোম্পানিকে এলএনজি আমাদানির জন্য তালিকাভুক্ত করা হলেও ভিটল, গানভোর এবং এক্সিলারেট অ্যানার্জিকে বাদ দেওয়া হয়নি।

বাংলাদেশের রাষ্ট্রায়ত্ত তরলীকৃত গ্যাস উৎপাদনকিারী প্রতিষ্ঠান রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড (আরপিজিসিএল) এবং পেট্রোবাংলা গত নভেম্বর মাসে এলএনজি আমদানির জন্য আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে আবেদনপত্র আহ্বান করেছিল। সেসব আবেদনপত্রের মধ্যে থেকে যাচাই-বাছাই শেষে আরামকো, শেল, বিপিসহ ২৩টি কোম্পানিকে চূড়ান্ত করা হয়।

রয়টার্সকে বাংলাদেশের জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, “আরামকো, শেল, বিপিসহ এলএনজি উৎপাদন ও রপ্তানিকারী প্রায় সব জায়ান্ট প্রতিষ্ঠান আমাদের কাছে আবেদন করেছিল। সেগুলোর মধ্যে থেকে এই ২৩টিকে চূড়ান্ত করা হয়েছে। আমরা এই খাতটিকে আরও প্রতিযোগিতাপূর্ণ করতে চাই। সবচেয়ে কম দামে যে কোম্পানি আমাদের এলএনজি দেবে, আমরা তার কাছ থেকেই পণ্য কিনব।”

তবে ঠিক কী পরিমাণ অর্থ সাশ্রয় হবে, তা নির্ভর করবে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড (আরপিজিসিএল) কতটা এলএনজি কিনবে, তার ওপর। সেটা কখন ঘটবে, তা নিশ্চিত করে বলেননি জ্বালানি উপদেষ্টা।

সব মিলিয়ে ৩৩টি কোম্পানির একটি তালিকা রয়টার্স দেখেছে, যারা বাংলাদেশে এলএনজি সরবরাহ করতে চায়। তাদের মধ্যে ২২টি নতুন সরবরাহকারী রয়েছে। সৌদি আরামকোর বাণিজ্যিক শাখা আরামকো ট্রেডিং কোম্পানি, বিপি সিঙ্গাপুর, শেল ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডিং মিডল ইস্ট এবং গ্লেনকোর সিঙ্গাপুর নতুন সরবরাহকারী হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়েছে।

অনুমোদন করা তালিকায় ভিটল এশিয়া, গুনভর সিঙ্গাপুর ও এক্সিলারেট এনার্জির নাম রয়েছে। এসব কোম্পানি আগে থেকেই বাংলাদেশে এলএনজি সরবরাহ করে।

বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য চাইলে গ্লেনকোর কথা বলতে রাজি হয়নি। সৌদি আরামকো, বিপি, শেল, ভিটল, গুনভর ও এক্সিলারেট এনার্জি মন্তব্য জানতে চেয়ে অনুরোধ করা হলেও তাতে দ্রুত সাড়া দেয়নি।

গত নভেম্বরে আরপিজিসিএল স্পট বাজার থেকে এলএনজি কেনার জন্য দরপত্র আহ্বান করেছিল। নতুন তালিকা করার আগে বাংলাদেশের এলএনজি সরবরাহকারীর তালিকায় ২৩টি কোম্পানি ছিল। আরপিজিসিএলের মূল কোম্পানি পেট্রোবাংলার একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, নতুন তালিকা তৈরির কারণে পুরোনো তালিকা বাদ হয়ে যাবে।

বাংলাদেশ বছরে প্রায় ১০০টি এলএনজি কার্গো আমদানি করে। এর মধ্যে কাতার ও ওমান থেকে আসে ৫০টির বেশি কার্গো। জ্বালানি উপদেষ্টা জানিয়েছেন, বাকি এলএনজি বেসরকারি সরবরাহকারীরা খোলাবাজার থেকে কিনে বাংলাদেশে পাঠায়।

আরও যা পড়তে পারেন

কমেন্ট করুণ