Home সর্বশেষ গরমে চা-কফি কতটা নিরাপদ?

গরমে চা-কফি কতটা নিরাপদ?

উপমা ইসলাম রুপা
৪০ views

প্রচণ্ড রোদ আর হাঁসফাঁস করা গরমে অনেকেই ক্লান্ত হয়ে পড়েন। আর এই ক্লান্তি দূর করতে বা একটু চনমনে বোধ করতে এক কাপ চা বা কফিতে ভরসা রাখেন। অফিসে কাজের ফাঁকে, বন্ধুদের আড্ডায় কিংবা ঝিমুনি কাটাতে চা বা কফি যেন আমাদের জীবনের অংশ। তবে এই গরমে চা-কফি শরীরের জন্য কতটা নিরাপদ? চলুন জেনে নেয়া যাক গরমে চা-কফি কীভাবে ক্ষতি করছে-

ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতা বাড়ায়
চা ও কফির মধ্যে থাকে ক্যাফেইন। যা প্রাকৃতিক ডাইউরেটিক (diuretic)। অর্থাৎ এটি আমাদের দেহ থেকে পানি বের করে দেয় প্রস্রাবের মাধ্যমে। গরমকালে এমনিতেই ঘাম হয়ে শরীরের অনেকটা পানি বেরিয়ে যায়। শুধু পানি নয়, সোডিয়াম, পটাসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম এর মতো গুরুত্বপূর্ণ ইলেকট্রোলাইটও ঘামের মাধ্যমে বের হয়ে যায়। এই অবস্থায় যদি আপনি দিনে ৩-৪ কাপ চা বা কফি খান, তাহলে শরীরে পানিশূন্যতার ঝুঁকি কয়েক গুণ বেড়ে যায়।

চা বা কফি পান করার পর কিডনি প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে দ্রুত পানি বের করে দেয়। ফলে শরীর দ্রুত পানিশূন্য হয়ে পড়ে।

businesstoday.webp11

গরম সুস্থ থাকতে গ্রিন টি বা হার্বাল চা বেছে নিতে পারেন, ছবি ; বিজনেজ টুডে।

বদহজমের সমস্যা বাড়ে

চা ও কফি খেলে বদহজমের সমস্যা হয়। বিশেষ করে খালি পেটে খেলে। গরমে হজমশক্তি এমনিতেই দুর্বল থাকে। এর মধ্যে অতিরিক্ত চা বা কফি বদহজম, অম্বল বা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বাড়িয়ে দিতে পারে।

ঘুমের ব্যাঘাত
গরমে ঘুম এমনিতেই অস্বস্তিকর হয়। তার ওপর রাতে কফি বা চা খেলে ঘুম আসতে দেরি হতে পারে। এতে শারীরিক ক্লান্তি কমার বদলে আরও বেড়ে যায়।

হৃদস্পন্দন বেড়ে যাওয়া ও উদ্বেগ
চা বা কফির অতিরিক্ত ক্যাফেইন অনেক সময় হৃদস্পন্দন বাড়িয়ে দেয়। বিশেষ করে গরমে যখন শরীর এমনিতেই দুর্বল থাকে। এতে উদ্বেগ, মন খারাপ বা হাত কাঁপার মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে।

amazingfoodanddrink.111

পানিশূন্যতা সহ অন্যান্য জটিলতা কমাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি, রসালো ফল ও সবজি খেতে হবে, ছবি ; অ্যামেইজিং ফুড&ড্রিংক ওয়েব।

তাহলে গরমে চা বা কফি একেবারে খাবো না?

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা গরমে চা ও কফি কম খাওয়ার পরামর্শ দেন। কারণ এগুলো ডিহাইড্রেশন সৃষ্টি করতে পারে।

এ নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. এস এম হাসান মাহমুদ বলেন, যদি চা-কফি ছাড়তে না পারেন তাহলে পানিশূন্যতা, দুর্বলতা এবং অন্যান্য জটিলতা থেকে বাঁচতে চা বা কফির সঙ্গে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি, শসা, তরমুজ, লেবুর শরবত কিংবা অন্যান্য রসালো ফল ও সবজি খেতে হবে।

তবে দিনে দুই কাপের বেশি চা বা কফি না খাওয়াই ভালো। খুব গরম চা-কফি না খেয়ে কিছুটা ঠান্ডা করে খান। দুপুরের পর চা বা কফি এড়িয়ে চলুন, যেন রাতে ঘুমে ব্যাঘাত না ঘটে।

বিকল্প হিসেবে ঠান্ডা লেবু পানি, ডাবের পানি, হালকা গরম গ্রিন টি বা হার্বাল চা বেছে নিতে পারেন।

খালি পেটে চা বা কফি না পান করে, খাবারের ৩০ মিনিট পর পান করুন।

চা-কফি আমাদের জীবনের আনন্দের ছোট্ট এক অংশ। কিন্তু গরমে শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য তা সংযমের সঙ্গে খাওয়া জরুরি। নিজের অভ্যাস একটু বদলালেই গরমকালটা কাটবে অনেকটা সতেজ ও প্রাণবন্ত।

 

আরও যা পড়তে পারেন

কমেন্ট করুণ