রাতে ঘুম আসতে চায় না? তাই রাত জেগে মোবাইলে চ্যাট বা ওয়েব সিরিজ দেখে কাটিয়ে দেন? তাতে কি সমস্যা কমে? বরং সকাল থেকেই মাথা যন্ত্রণা, ক্লান্তি ভাবে কাজে উৎসাহই হারিয়ে যায়। আর ঘুম কম হওয়ার জন্য মাথাব্যথা, অতিরিক্ত ঝিমুনি— এ সব কিছুর কারণ আপনার ওয়াইফাই নয় তো! বাড়িতে ওয়াইফাই রাউটার নিশ্চয়ই দিনভর চলে। রাতেও চালু থাকে। অতএব সারা রাতই রাউটার থেকে বেরোনো তড়িৎচুম্বকীয় তরঙ্গ আপনার শরীরে ঢুকতে থাকে। এতে ক্ষতি হতে পারে শরীরের।
ওয়াইফাই রাউটার থেকে নানা জটিল রোগ হতে পারে, এমনকি ক্যানসারের ঝুঁকিও বাড়ে, এমন নানা মতামত বিভিন্ন সময়ে দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। কয়েক মাস আগেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছিল, মাথার কাছে রাতভর ওয়াইফাই রাউটার চললে, যে তড়িৎচুম্বকীয় তরঙ্গ শরীরে ঢোকে তার থেকে ক্যানসার বা ব্রেন টিউমারের ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে।
ওয়াইফাই চালু রেখে মাথার কাছে ফোন নিয়ে ঘুমালে, অনিদ্রা, মাথা যন্ত্রণা বা মাইগ্রেনের সমস্যা দেখা দিতেই পারে, এমনটাই বলছেন স্নায়ুরোগ চিকিৎসকরা। তারা জানান, ওয়াইফাইয়ের তরঙ্গ হল ‘নন-আয়নাইজিং’। সাধারণত রাউটার থেকে যে তরঙ্গ বার হয় তার কম্পাঙ্ক ২.৪ থেকে ৫ গিগাহার্ৎজ। এই মাত্রার কম্পাঙ্ক থেকে শরীরের বড়সড় ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে না। ব্রিটেনের ক্যানসার রিসার্চ সেন্টারও একই কথা জানিয়েছে। ওয়াইফাই থেকে ক্যানসার হওয়ার কোনও রকম ঝুঁকিই নেই।
বৈদ্যুতিক যন্ত্র মানে তার ভাল এবং খারাপ দুই দিকই থাকবে। রাউটারের তড়িৎচুম্বকীয় বিকিরণ ক্যানসারের কারণ না হলেও, ‘স্লিপিং ডিজঅর্ডার’-এর কারণ হতেই পারে। নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট পরিষেবা পেলে রাতভর মোবাইলে চোখ রাখা, মাথার কাছে ফোন নিয়ে ঘুমোনোর কারণে ঘুমের সমস্যা দেখা দেবে। যার ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হবে চোখের। ফোন বা ল্যাপটপের নীল রশ্মি রেটিনার ক্ষতি করবে। চোখে জ্বালা, চোখ থেকে জল পড়া এবং চোখ শুষ্ক হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যা বেড়ে যাবে।
উচ্চ গতিসম্পন্ন ইন্টারনেট পরিসেবা আঠার মতো মানুষকে আটকে রাখে। একের পর এক সিনেমা, সিরিজ শেষ করতে গিয়ে ঘুম নষ্ট হয়। দীর্ঘ দিন ধরে এই অভ্যাস চলতে থাকলে ‘স্লিপ ডিজঅর্ডার’ এবং ইনসমনিয়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় একে বলে ‘নারকোলেপ্সি’। এই সমস্যায় রাতে ঘুম আসতে চায় না, আর দিনের বেলায় প্রচণ্ড ক্লান্তি ও ঝিমুনি আসে।
আরও একটি সমস্যা হতে পারে, তা হল স্মৃতিশক্তি কমে আসা। নানা গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যারা দিনরাত মোবাইল, ল্যাপটপে বুঁদ হয়ে থাকেন, তাদের স্মৃতিশক্তি ক্রমেই দুর্বল হয়ে পড়বে। পরবর্তী সময়ে অ্যালঝাইমার্সের ঝুঁকিও বাড়তে পারে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
