ক্রেতার চোখে মুখে বিস্ময় থাকলেও খুশি গরু বিক্রেতারা। রাজধানীর তেজগাঁওয়ের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট খেলার মাঠে বসা কোরবানির পশুর হাটজুড়ে এই দৃশ্য-ই দেখা গেছে। গরুর দাম চড়া। এ জন্য আগত ক্রেতারা কেনার চেয়ে দরদাম করছেন বেশি।
রামপুরা থেকে এই বাজারে গরু কিনতে এসেছেন সাবেক এক ব্যাংক কর্মকর্তা। আব্দুল আহাদ নামের এই ব্যক্তি মাঝারি সাইজের একটি গরুর দরদাম করছিলেন। শেষপর্যন্ত দামে না পোষায় গরু কেনা হয়নি।
হ্যালো বাংলাদেশকে তিনি জানান, মাঝারি সাইজের গরু। এক লাখ ২০ হাজার বলেছে। আমি এক লাখ সাত হাজার বলেছি ব্যাপারি রাজি হয়নি। আরও একটু দেখব। এখন মনে হচ্ছে বাজার চড়া।

হাটে গরুকে খাবার দিচ্ছেন এক ব্যাপারী, ছবি: হ্যালো বাংলাদেশ
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন আরিফ হোসেন। সঙ্গে বন্ধুকে নিয়ে এসেছেন গরু কিনতে। হ্যালো বাংলাদেশকে তিনি জানান, ভাই লাখের নিচে তো কোনো গরু নেই। যেগুলো আছে সেগুলো এখন ৭০ বা ৮০ হাজার টাকা দিয়ে কেনা ঠিক হবে না। দাম চড়া। দেখি আরও যাছাই বাছাই করব। পরে সুবিধা মতো কিনব।

এই হাট থেকে এক লাখ ১৭ হাজার টাকা দিয়ে গরু কিনে নিয়ে যাচ্ছে এক ক্রেতা, ছবি: হ্যালো বাংলাদেশ
জামালপুর থেকে ২৫ গরু নিয়ে এই হাটে এসেছেন ৩০ বছর বয়সী ব্যাপারী রাশেদ হোসেন। এরই মধ্যে ১৩টি গরু বিক্রি হয়ে গেছে তার। ভালো দাম পাওয়ায় চোখে মুখে তৃপ্তির হাসি নিয়ে হ্যালো বাংলাদেশকে রাশেদ জানান, বেচা বিক্রি বেশ ভালো। আরও দুইদিন আছে। আশা করি বাকিগুলোকে বিক্রি হয়ে যাবে। কারণ আমি গরু কিনি এনে বিক্রি করি না। নিজের খামারে লালন পালন করে নিয়ে এসেছি। দাম লাখ টাকা হলেও জিনিস সেরা।

নিজের ১১টি গরুর সামনে দাঁড়িয়ে আছেন একজন ব্যাপারী, ছবি: হ্যালো বাংলাদেশ
শেরপুর, পাবনা, কুষ্টিয়া ও সিরাজগঞ্জ থেকেও ব্যাপারীরা গরু নিয়ে এসেছেন এই হাটে। তাদের গরুর মূল্যও লাখ টাকার ওপরে। আব্দুর রশিদ নামে একজন ব্যাপারী জানান, গরু লালন-পালনে খরচ আছে। ঢাকায় আনার পর আমাদের খরচ বাদ দিলে খুব বেশি লাভ থাকে না। এরপরও মানুষ কয় দাম বেশি।
ফার্মগেট থেকে আসা সাইফুল আহমেদ জানান, পুরো হাট ঘুরে অবশেষে পছন্দের গরু পেলাম। একটু দরদাম করতে হয়েছে। শেষপর্যন্ত এক লাখ ২০ হাজার টাকা দিয়ে কিনলাম। দাম চেয়েছিল এক লাখ ৪৫ হাজার।
এদিকে ইজারাদাররা জানান, ঈদের আগের দুদিন বেচাকেনা বাড়বে। এই হাটে সবধরনের গরু রয়েছে। তবে ভালো মানের দেশি গরুর দাম বেশি, এটা স্বাভাবিক।