মুসলিম জাহানের তীর্থস্থান মক্কা ও মদিনা। শহর দুটি মুসলিমদের কাছে অত্যন্ত পবিত্র। হজ ও ওমরাহ পালনে কোটি কোটি ধর্মপ্রাণ মুসলমান আসেন এখানে। এবার নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সৌদ আরব। এতোদিন আধ্যাত্মিক গুরুত্ব রক্ষার পাশাপাশি বিদেশি প্রভাব নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে এ শহরগুলোর সম্পত্তির শেয়ার কেনা বন্ধ ছিল। চলতি বছর এই আইন বাতিল করা হয়েছে। ফলে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা মক্কা ও মদিনার রিয়েল এস্টেটে বিনিয়োগ করতে পারবে।
গত ২৭ জানুয়ারি সৌদি আরবের ক্যাপিটাল মার্কেট অথরিটি-সিএমএ ভিনদেশিদের বিনিয়োগ করার বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেছে। সিএমএ জানায়, বিদেশি বিনিয়োগকারীরা পবিত্র দুই নগরীর রিয়েল এস্টেট মালিকানাধীন তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর শেয়ার কিনতে পারবেন। ২০১৯ সালে হজ ও ওমরাহ থেকে ১২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করেছিল সিএমএ। ২০৩০ সালের মধ্যে বছরে ৩০ মিলিয়ন হজযাত্রীকে স্বাগত জানানোর পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে দেশটি।
সিএমএ আরও জানায়, বিদেশি বিনিয়োগ কেবল শেয়ার ও রূপান্তরযোগ্য ঋণপত্রের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে। বিদেশিরা এই কোম্পানিগুলোর ৪৯ শতাংশের বেশি শেয়ার কিনতে পারবে না। এর আগে ২০২১ সালে প্রথমবারের মতো মক্কা ও মদিনায় রিয়েল এস্টেট ফান্ডে বিনিয়োগের অনুমতি পায় বিদেশিরা।

পাখির চোখে মক্কা নগরের একাংশ, ছবি: সার্ভ কর্পো
উপসাগরীয় অঞ্চলের বৃহত্তম শেয়ার বাজার সৌদি আরব। দেশটির শেয়ার বাজারমূল্য ১০ দশমিক ২ ট্রিলিয়ন রিয়াল বা ২ দশমিক ৭২ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। বিদেশি বিনিয়োগের ঘোষণার পর পুঁজি বাজারে রিয়েল এস্টেট কোম্পানির শেয়ারের দাম হু হু করে বেড়ে গেছে।
এই ঘোষণার পর মক্কায় রিয়েল এস্টেট মালিকানাধীন জাবাল ওমর ডেভেলপমেন্ট ও মক্কা কনস্ট্রাকশন কোম্পানির শেয়ারের মূল্য ১০ শতাংশ বেড়েছে। এ ছাড়া দাম বেড়েছে অন্যান্য কোম্পানির শেয়ারও। বিদেশিরা মক্কা ও মদিনায় বেসরকারি বা সরকারি রিয়েল এস্টেট কোম্পানির শেয়ার এবং রূপান্তরযোগ্য ঋণপত্র কিনতে পারবেন। এতে দেশটির হজ ও ওমরাহ নির্ভর অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে।
সারা বিশ্ব থেকে মুসলিম তীর্থযাত্রীদের কেন্দ্র মক্কা ও মদিনায় প্রতিবছর কোটি মানুষ হজ ও ওমরাহ করতে আসেন। এটি সৌদি আরবের হোটেলসহ অন্য সেবা খাতের নিয়মিত আয়ের উৎস। বিশ্বব্যাপী ও দেশীয় বিনিয়োগ প্রচেষ্টার পরও দেশটির অর্থনীতি এখনও তেলের আয়ের ওপর নির্ভরশীল।
তথ্যসূত্র: সৌদি গেজেট, জিও নিউজ ও ইউরোশিয়া