সুগন্ধি চাল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিচ্ছে সরকার। প্রতিবছর নির্দিষ্ট পরিমাণ সুগন্ধি চাল রপ্তানির অনুমতি দিতে পারে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। গত সপ্তাহে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের খাদ্যপরিকল্পনা ও পর্যবেক্ষণ কমিটির সভায় এ বিষয়ে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানা গেছে।
দেশে গত সাত বছরে সুগন্ধি চালের উৎপাদন দ্বিগুণ হয়েছে। কিন্তু ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে খাদ্যনিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে সুগন্ধি চাল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয় তৎকালীন সরকার। রপ্তানি বন্ধ থাকায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন চাষিরা। পাশাপাশি দেশের রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো হারাচ্ছে বিশ্ববাজারে অবস্থান। সেটা দখল করছে প্রতিযোগী ভারত ও পাকিস্তানের ব্যবসায়ীরা। যে কারণে কৃষকদের ক্ষতির কথা মাথায় রেখে দেশের রপ্তানি ও সেটা থেকে রাজস্ব আয় বাড়াতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সুগন্ধি চাল রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে যাচ্ছে বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, বাংলাদেশে প্রতিবছর চার লাখ টন সুগন্ধি চালের চাহিদা আছে। কিন্তু উৎপাদন হয় এর বেশি। ২০২২-২৩ অর্থবছরের দেশের ৩৩টি প্রতিষ্ঠানকে ২৪ হাজার ৪১৬ টন সুগন্ধি চাল রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।
এক বছরের বেশি সময় ধরে সুগন্ধি চাল রপ্তানি বন্ধ। অভিযোগ আছে, নানা উপায়ে মিথ্যা ঘোষণা ও চোরাচালানের মাধ্যমে সুগন্ধি চাল আশপাশের দেশে পাচার হয়। সেখান থেকে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোয় চলে যায়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, দেশে বছরে গড়ে সুগন্ধি চাল উৎপাদন হয় ১৮ থেকে ২০ লাখ টন। আর প্রতিবছর গড়ে রপ্তানি হয় ১০ হাজার টন। অর্থাৎ, উৎপাদনের সর্বোচ্চ ২ শতাংশ পর্যন্ত রপ্তানি করা হয়। যেখানে প্রতি বছর তিন লাখ টন সুগন্ধি চাল উদ্বৃত্ত থাকে।
২০০৯-১০ অর্থবছর থেকে বাংলাদেশ সুগন্ধি চাল রপ্তানি শুরু করে। প্রথম বছর ৬৬৩ টন সুগন্ধি চাল রপ্তানি হয়। পরের বছরগুলোতে রপ্তানির পরিমাণ বাড়তে বাড়তে রপ্তানি বন্ধের আগে ১০ হাজার ৮৭৯ টনে উন্নীত হয়।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সূত্রে জানা যায়, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৮৬ লাখ, ২০২০-২১ অর্থবছরে ৮৫ লাখ এবং ২০২১-২২ অর্থবছরে ৫১ লাখ মার্কিন ডলারের সুগন্ধি চাল রপ্তানি হয়েছে।
সরকারি তথ্য বলছে, ৭৫ লাখ বাংলাদেশি বিদেশে বসবাস করছেন, কিন্তু অভিবাসীদের অন্তর্ভুক্ত করা হলে এ সংখ্যা দাঁড়ায় ৯ থেকে এক কোটিতে। দক্ষিণ এশীয় এবং মধ্য প্রাচ্যের পটভূমির লোকেরা সুগন্ধযুক্ত চালের প্রধান ভোক্তা।