Home বিশ্ব ট্রাম্পের শুল্কনীতি : চীনের দিকে ঝুঁকছে আফ্রিকা

ট্রাম্পের শুল্কনীতি : চীনের দিকে ঝুঁকছে আফ্রিকা

চঞ্চল ঘোষ
৩৬ views

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কনীতির প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বিশ্বব্যাপী। যদিও ট্রাম্প প্রশাসন চীনকে আটকাতে পণ্যের ওপর শুল্ক বসানোর নিয়ম চালু করেছে। তবে এর ফলাফল হচ্ছে উল্টো। এই নীতির ফাঁদে পড়ে এখন আফ্রিকান দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্র নয়, বরং ঝুঁকছে চীনের দিকে।

আফ্রিকান পণ্য যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রবেশের ক্ষেত্রে শক্তিশালী আইন রয়েছে। যেটি আফ্রিকান গ্রোথ অ্যান্ড ওপারচুনিটি অ্যাক্ট (এজিওএ) হিসেবে পরিচিত। এই আইনের অধীনে হাজার হাজার পণ্য মার্কিন বাজারে বিনা শুল্কে প্রবেশের অনুমতি পেয়ে থাকে। তবে নতুন শুল্ক নীতিতে ধাক্কা খেয়েছে এই মহাদেশের পণ্য।

২০০০ সালের ওই আইনের সুবিধা আর পাবে না আফ্রিকান দেশগুলো। এতে রপ্তানি খরচ বাড়বে। উদাহারণ হিসেবে বলা যায়, নাইজেরিয়া বা এঙ্গোলার তেলের দাম বাড়বে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে। এটা শুধু আফ্রিকান তেল রপ্তানিকারকদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে না। বরং চীনের ওপর আস্থা আরও বাড়াবে। এই সুযোগ ব্যবহার করবে বেইজিং। বিশেষ করে বিনিয়োগ আর ভূরাজনীতির ক্ষেত্রে।

অর্থনৈতিক সমস্যা সমাধানে আফ্রিকান দেশগুলো সুযোগ কাজে লাগিয়ে অন্য দেশের সঙ্গে বাণিজ্য স্থাপন করছে। আর বিনিয়োগ বাড়াতে বহু দেশের ওপর নির্ভর করে তারা। বিশেষ করে দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন, অবকাঠামো ও প্রযুক্তি বিনিয়োগের জন্য চীনের সঙ্গে সম্পর্ক আরও জোরদার করছে আফ্রিকান দেশগুলো।

এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে ব্রিকস। চীন, ভারত, রাশিয়া, ব্রাজিল ও দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দেশ এর সদস্য। ২০২২ সালের এক হিসাব বলছে, আফ্রিকা ওই বছর ব্রিকস দেশগুলোয় ২৩ দশমিক শূন্য শতাংশ পণ্য রপ্তানি করেছিল। এর মধ্যে চীনে ৬৫ দশমিক শূন্য শতাংশ, ভারতে ৩১ দশমিক এক শতাংশ, ব্রাজিলে ৩ দশমিক ৬ শতাংশ ও রাশিয়ায় শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ। রপ্তানি খরচ কম থাকায় ব্রিকস ও আফ্রিকার মধ্যকার ব্যবসা আরও বাড়বে।

ট্রাম্পের শুল্ক নীতির জন্য দক্ষিণ আফ্রিকাকে ‍যুক্তরাষ্ট্রে টেক্সটাইল পণ্য পাঠাতে হলে দিতে হবে ৩০ শতাংশ শুল্ক। আর চীনে তা পাঠালে কোনো কর দিতে হবে না। চীনে পণ্য পাঠানোর ক্ষেত্রে এই সুবিধা পাচ্ছে উন্নয়নশীল দেশ তানজানিয়া আর কঙ্গো। এই ধরনের সুবিধা আরও বাড়াবে চীন ও আফ্রিকার ব্যবসায়িক পরিধি।

যুক্তরাষ্ট্র অর্থাৎ পশ্চিমা বিশ্ব শুল্ক নিয়ে যত কঠোর হবে, ততই আফ্রিকাতে প্রভাব বাড়বে চীনের। এ জন্য ট্রাম্পকে তার আমেরিকা ফাস্ট নীতি থেকে সরে আসতে হবে। কারণ ওয়ার্ল্ড ফাস্ট নীতির গ্রহণযোগ্যতা বাড়তে থাকায় মার খেতে শুরু করেছে আমেরিকা ফাস্ট নীতি। ভারসাম্যপূর্ণ বিশ্ব অর্থনীতি-ই স্থানীয় বা আন্তর্জাতিক ব্যবসায়ীদের সুযোগ দেয় বৈশ্বিক বাজারে প্রবেশ ও প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার।

লেখক : এহিজুয়েলেন মাইকেল মিচেল ওমরউয়ি, আফ্রিকান টাইমস থেকে অনূদিত

আরও যা পড়তে পারেন

কমেন্ট করুণ