ইউক্রেনে শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য যদি পুতিনের সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজি আছি। আর মানুষের মৃত্যু মেনে নেওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি। জার্মান সংবাদ মাধ্যম ডয়েচে ভেলেকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই প্রস্তাবনা দেন তিনি। ব্রিটিশ সাংবাদিক পিয়েরস মরগ্যান ৪ ফেব্রুয়ারি জেলেনস্কির সাক্ষাৎকারটি নেন।
যুদ্ধে নিহত সেনার সংখ্যা এ পর্যন্ত খুব বেশিবার জানায়নি ইউক্রেন। রাশিয়াও তাদের নিহতের সংখ্যা অধিকাংশ সময় গোপন রেখেছে। কিন্তু ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি জানিয়েছেন, এখনো পর্যন্ত যুদ্ধে ৪৫ হাজার ১০০ সেনা নিহত হয়েছেন। আর আহতের সংখ্যা তিন লাখ ৯০ হাজার। যুদ্ধ তিন বছরে পা দিয়েছে। বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অপরিসীম। এই পরিস্থিতিতে যুদ্ধ বন্ধ করতে ও সমাধানসূত্র খুঁজে বের করতে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আলোচনায় বসার কথা জানান।
তিনি আরো জানান, কূটনৈতিক পথে যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটানো সম্ভব। তবে আলোচনায় রাশিয়ার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপকে থাকতে হবে। রাশিয়া ইউক্রেনের বেশ কিছু অঞ্চল দখল করে নিয়েছে এবং ইউক্রেন কোনোভাবেই তা মেনে নেবে না। এ বিষয়ে পশ্চিমাদেশগুলোর অবস্থান নিয়ে আমি হতাশ। রাশিয়াকে ইউক্রেনের ভেতর থেকে পেছনে সরানোর ব্যাপারে পশ্চিমাদেশগুলোর কাছে যতটা সাহায্য আশা ইউক্রেন করেছিল, তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে।
পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে নিজের অবস্থান সম্পর্কে জেলেনস্কি বলেছন, ‘আমি অবশ্যই পুতিনের প্রতি সদয় হবো না। আমি তাকে আমার শত্রু বলে মনে করি। আমার ধারণা, পুতিনও আমাকে শত্রু বলে মনে করেন।’ আমার কাছে খবর আছে এ পর্যন্ত তিন লাখ ৫০ হাজার রাশিয়ার সেনা নিহত হয়েছে যুদ্ধে। আহতের সংখ্যা সাত লাখ।
জেলেনস্কি জানিয়েছেন, যুদ্ধ বন্ধ করতে ট্রাম্প কী ভূমিকা নেন, তা গুরুত্বপূর্ণ। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তার প্রতিনিধিরা নিয়মিত আলোচনা করছেন এবং দ্রুত মার্কিন প্রতিনিধিরা ইউক্রেনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে আলোচনায় বসবেন।
তবে জেলেনস্কি পুতিনের সঙ্গে বসতে রাজি থাকলেও বেঁকে বসেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট। পুতিন ইতিমধ্যে জানিয়ে দিয়েছেন, জেলেনস্কির সঙ্গে কোনোভাবেই বৈঠকে বসবেন না তিনি।
এদিকে মসনদে বসার পরই ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি ইউক্রেন যুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘটাবেন। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে আর সামরিক সাহায্য করবে না এবং রাশিয়ার ওপর আরো কড়াকড়ি আরোপ করবে। তবে বাস্তবে এ পর্যন্ত ট্রাম্প কোনো পদক্ষেপ নেননি।