২০ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় জার্মানির পূর্বাঞ্চলীয় শহর ম্যাগডেবার্গের একটি জনাকীর্ণ ক্রিসমাস মার্কেটে ৫০ বছর বয়সি এক ব্যক্তি তার গাড়ি ঢুকিয়ে দেন এবং দ্রুত গতিতে সেই রাস্তায় থাকা মানুষদের ওপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে দেন। হামলায় এ পর্যন্ত ৫ জন নিহত ও ২০০ জন আহত হয়েছেন। এই ঘটনাকে জার্মান কর্তৃপক্ষ ‘ইচ্ছাকৃত’ বলে অভিহিত করেছে।
ক্রিসমাস মার্কেটে গাড়ি হামলার ঘটনায় এবার সামনে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। ওই ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তি আল্লাহকে বিশ্বাস করেন না। শুধু তাই নয়, তিনি ‘ইসলামোফোবিক’ ছিলেন বলেও দাবি করা হয়েছে। জার্মান পুলিশ প্রকাশ্যে সন্দেহভাজন হামলাকারীর নাম প্রকাশ করেনি। তবে বেশ কয়েকটি স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম ওই চিকিৎসকের প্রথম নাম তালেব বেয়ানবুর্গ বলে দাবি করেছে। তিনি সৌদি আরব থেকে জার্মানিতে এসেছিলেন।
বিগত প্রায় ২ দশক ধরে জার্মানিতেই আছেন। তিনি পেশায় ডাক্তার। সাইকিয়াট্রি ও সাইকোথেরাপিতে বিশেষজ্ঞ এই ‘তালেব’। অভিযুক্ত ওই চিকিৎসক নিজেকে ‘ সাবেক মুসলিম’ হিসেবে বর্ণনা করেন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ (সাবেক টুইটার) ইসলামের সমালোচনা করে টুইট ও রিটুইট শেয়ার করে থাকেন। জার্মানির অভিবাসন নীতির সমালোচনা করতেন তিনি। এই আবহে কেন এই হামলা চালানো হয়েছে, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
এদিকে যে ক্রিসমাস মার্কেটের ব্যস্ত রাস্তায় প্রবল গতিতে গাড়ি চালিয়ে আসার ঘটনা ঘটেছে, সেই ম্যাগডেবার্গে শহরের ৪০ কিলোমিটার দক্ষিণে বার্নবার্গ নামে একটি জায়গায় প্র্যাকটিস করতেন এই ‘তালেব ‘। এদিকে সম্প্রতি তালেবের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। তাতে তাকে বলতে শোনা গেছে, ‘আমি একজন বামপন্থী হিসাবে যা আবিষ্কার করেছি তা হল বামপন্থীরা এই গ্রহের সবচেয়ে খারাপ অপরাধী ও আমি নিজেই বামপন্থী হিসাবে এটি বলছি।’
২০১৯ সালের জুলাই মাসে তালেব ‘wearesaudis.net’ নামে একটি প্ল্যাটফর্ম চালু করার বিষয়ে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন। সেই সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘ভালো ইসলাম বলে কিছু হয় না’। জার্মানির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ন্যান্সি ফ্রেজারও মেনে নিয়েছেন যে অভিযুক্ত ‘ইসলামোফোবিক’ ছিলেন।
এদিকে সরকার পক্ষের আইনজীবী দাবি করেছেন, সৌদি শরণার্থীদের প্রতি জার্মানদের আচরণ এই হামলার নেপথ্য কারণ হতে পারে। এদিকে বার্লিন ভিত্তির ইউরোপীয় সৌদি মানবাধিকার সংগঠন তাহা আল-হজি দাবি করেছে, তালেব মানসিকভাবে বিকারগ্রস্ত।
