আট দশক আগে কলকাতার হাওড়া স্টেশনে জীবনসংগ্রাম শুরু করেছিলেন আকিজ গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা সেখ আকিজ উদ্দিন। মূলত তিনি ছিলেন খুলনার ফুলতলার এক দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে আসা বাংলাদেশের প্রতিথযশা শিল্প উদ্যোক্তা।
সেখ আকিজ উদ্দিন নিজের মেধা সৃজনশীলতা আর কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে বাংলাদেশের কিংবদন্তি শিল্পপতি হয়েছেন। একের পর এক সম্ভাবনাময় ইন্ডাস্ট্রিজ গড়ে তুলে তিনি লাখো মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন। দেশের শিল্প বিকাশে প্রবাদপ্রতিম এ ব্যক্তিত্ব এক অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে আছেন। শুধু বাণিজ্যকেই জীবনের মূলমন্ত্র হিসেবে দেখেননি। তাঁর অসামান্য ভূমিকা ছিল সেবামূলক কাজেও।
পঞ্চাশের দশক থেকেই নানা ধরনের ব্যবসা করেছেন এ সফল উদ্যোক্তা। আর দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে একের পর এক ব্যবসা বাড়িয়েছেন, হয়েছেন বাংলাদেশের অন্যতম শিল্পপতি। রাজধানী ঢাকায় থিতু হয়েছেন অনেক পরে। যে কজন উদ্যোক্তা বাংলাদেশকে শিল্পায়নের পথে নিয়ে গেছেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম সেখ আকিজ উদ্দিন। তিনি যেমন ছিলেন দূরদর্শী তেমনি ছিলেন দৃঢ় প্রত্যয়ী।
বাড়ি ছাড়েন ১৬ রুপি নিয়ে খুলনার ফুলতলা উপজেলার মধ্যডাঙ্গা গ্রামের সেখ মফিজ উদ্দিন ও মতিনা বেগম দম্পতির সন্তান আকিজের পড়াশোনায় কোনো মনোযোগ ছিল না। বিদ্যালয়ে যেতেন, তবে তার চেয়ে বেশি আগ্রহ ছিল দুরন্তপনায়। মধ্যডাঙ্গা হাইস্কুলে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেন তিনি। স্কুল পালানো ছিল নিয়মিত ঘটনা। রাগ করে বাবা একদিন আকিজকে শাসন করলেন। অভিমানে কিশোর আকিজ ঘর ছাড়লেন বাবার পকেট থেকে ১৬ রুপি নিয়ে। সময়টা ছিল ১৯৪০ সাল, তাঁর বয়স তখন মাত্র ১৩ বছর।
বাড়ির পাশের রেলস্টেশন থেকে অজানার উদ্দেশে ট্রেনে উঠে বসলেন আকিজ। ট্রেনের শেষ গন্তব্য পশ্চিমবঙ্গের হাওড়া স্টেশন। আকিজকে সেখানেই নামতে হলো। তিন দিন কাটল স্টেশনেই। তখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলছে। তবে কলকাতার জীবনযাত্রা স্বাভাবিকই ছিল। একদিন হাঁটতে হাঁটতে আকিজ গেলেন জাকারিয়া স্ট্রিটে। দেখলেন, রাস্তার ওপরই নিলামে কমলালেবু বিক্রি হচ্ছে। কিছু না বুঝেই নিলামে অংশ নিয়ে ২ রুপি ৩০ পয়সায় দুই ঝুড়ি কমলালেবু কিনে ফেললেন। সেই কমলালেবু হাওড়া স্টেশনে নিয়ে বিক্রি করলেন। তখন হাওড়া ব্রিজ তৈরির কাজ চলছিল। দুই ঝুড়ি কমলালেবুতে মুনাফা হলো ৩০ পয়সা।
আকিজ ভাবলেন, বাহ্! বেশ ভালো তো। এরপর নিয়মিত ফল কেনাবেচার ব্যবসায় জড়িয়ে যান তিনি। এক মাস সেই ব্যবসা করে তিনি মূলধন সংগ্রহ করলেন প্রায় ৩০০ টাকা। তখনো তিনি শিয়ালদহ স্টেশনে থাকেন এবং দুই পয়সার ছাতু খেয়ে ক্ষুধা মেটান।
একদিন জাকারিয়া স্ট্রিটের এক হোটেলমালিক সদয় হয়ে তাঁকে নিজের হোটেলে নিয়ে আসেন। হোটেলে আসার পর কমলালেবুর ব্যবসা ছেড়ে দেন। তখন কলকাতার রাস্তায় রাস্তায় চার চাকার ঠেলাগাড়ির ওপর বিভিন্ন পণ্য সাজিয়ে ‘যা নেবেন সাড়ে ছয় আনা’-এর দোকান বেশ জনপ্রিয় ছিল। আকিজ উদ্দিন সাড়ে ছয় আনার সেই দোকান দেন। দোকানিরা হিন্দিতে ছড়া কেটে পণ্য বিক্রি করতেন। আকিজ উদ্দিন সেই ছড়াও মুখস্থ করেন। প্রায় এক বছর পরে বিনা অনুমতিতে রাস্তায় দোকান বসানোর অভিযোগে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে এবং বিচারে ৩ দিনের জেল ও ৫ টাকা জরিমানা করা হয়। জেল থেকে বের হয়ে এই ব্যবসাও তিনি ছেড়ে দিলেন।
এভাবে একদিন একজন পেশোয়ারি ব্যবসায়ীর সঙ্গে দেখা হলে তিনি তাঁর সঙ্গে আফগানিস্তানের পেশোয়ার চলে যান। সেখানে আবার ফলের ব্যবসা শুরু করেন। পাইকারি বাজার থেকে আঙুর, বেদানা কিনে খুচরা বাজারে বিক্রি করতেন। তিনি পশতু ভাষাও শিখে নেন। বাড়ি ভাড়া করেও থাকতে শুরু করেন। কিন্তু ওই বাড়িওয়ালা নিজের মেয়ের সঙ্গে বিয়ে দিতে চাইলে আকিজ উদ্দিন পেশোয়ার ত্যাগ করেন। তখন তাঁর মূলধন প্রায় সাড়ে ৪ হাজার টাকা। এরপর কিছুদিন দিল্লি ছিলেন, কিন্তু ভালো না লাগায় আবার কলকাতা ফিরে আসেন। এবার তিনি তরিতরকারির ব্যবসা শুরু করেন।
দেশভাগের পর ফেরা বাবার পকেট থেকে টাকা নিয়ে পালানোর পর বছর দশেক চলে গেছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ। দেশও ভাগ হয়ে গেছে, ভারত থেকে আলাদা হয়ে তৈরি হয়েছে পাকিস্তান। এর মধ্যে বাবা-মা মারা গেছেন। আকিজ উদ্দিন ভাবলেন, এবার নিজের দেশে ফেরা দরকার। তিনি দেশে ফেরেন ১৯৪৯ সালের দিকে। তত দিনে তাঁর হাতে এক থেকে দুই লাখ রুপি পুঁজি জমেছে। তখনকার দিনে সেটা অনেক টাকা।
ফুলতলায় ফিরে আকিজ উদ্দিন ভাবতে শুরু করলেন, কী করবেন। তবে ব্যবসার বাইরে অন্য কিছু তাঁর ভাবনায় ছিল না। খোঁজ নিয়ে জানতে পারলেন, তাঁরই কাছের এক বন্ধু বিড়ির ব্যবসা করেন। সেই বন্ধুর ব্যবসায় কিছু পুঁজি খাটালেন। এরপর বাড়ির পাশেই ফুলতলা বাজারে একটি মনিহারি দোকান দেন। দোকানে বিভিন্ন সামগ্রীর পাশাপাশি নিজে বিড়ি তৈরি করে তা বিক্রি করতে শুরু করেন। শুরুতে বানাতেন টেন্ডু পাতার বিড়ি। তত দিনে বিড়ির ব্যবসাও জমে ওঠে। পাটের ব্যবসাও করতে থাকেন আকিজ উদ্দিন। কাজ ছিল, চাষিদের কাছ থেকে পাট কিনে পাটকলে বিক্রি করা। এভাবেই একের পর এক ব্যবসার সঙ্গে নিজেকে জড়িয়ে নেন।
সীমান্তে প্রথম কারখানা
আকিজ উদ্দিনের পাতার বিড়ির ব্যবসা যখন জমজমাট, তখন টান পড়ে পাতায়। টেন্ডু পাতা আমদানি হতো ভারত থেকে। সরবরাহ সহজ করতে যশোরের নাভারনে স্থাপন করেন প্রথম বিড়ির কারখানা, ১৯৫৩ কি ৫৪ সালে। বিড়ির ব্যবসার পাশাপাশি পাটের ব্যবসাও বেশ ভালো চলছিল। ষাটের দশকে শুরু করেন পাট রপ্তানি। ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন হওয়ার আগে পাট, বিড়ি ও রাখি মালের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন আকিজ উদ্দিন।
মুক্তিযুদ্ধের সময় পাক বাহিনী ধরে নিয়ে যায়
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী আকিজ উদ্দিনকে ধরে নিয়ে যায়। ১০ দিন তাঁর কোনো সন্ধান মেলেনি। পরিবার ধরেই নিয়েছিল, তিনি আর বেঁচে নেই। এ কারণে বাড়ির আশপাশের জঙ্গলে গোপনে লাশের সন্ধানও করেন স্বজনেরা। কিন্তু পরিবারের ধারণাকে ভুল প্রমাণিত করে ১০ দিন পর তিনি ফিরে আসেন। জানা গেছে, তখন পাকিস্তানি বাহিনী মানুষ ধরে ধরে মেরে ফেলত। এটা করতে তারা সংক্ষিপ্ত বিচারের নামে একটি ব্যবস্থা চালু করেছিল। আফগানিস্তানে নিয়মিত যাতায়াত থেকে পশতু ভাষা শিখেছিলেন আকিজ উদ্দিন। পাকিস্তানি বাহিনী যখন তাঁকে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে, তখন তিনি পশতু ভাষায় সেনাদের সঙ্গে কথা বলেন। এরপর তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
স্বাধীন দেশে ব্যবসার প্রসার
১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর আকিজের ব্যবসারও প্রসার ঘটতে থাকে। যুদ্ধের পরপরই এক বিদেশি মালিকের কাছ থেকে খুলনায় অবস্থিত এসএএফ ট্যানারি কিনে নেন আকিজ উদ্দিন। একটি তেলের মিল, ইটভাটা ও মুদ্রণের কারখানাও ছিল। স্বাধীনতার কয়েক বছর পর ব্যবসার প্রয়োজনে খুলনা ও যশোর ছেড়ে একেবারে ঢাকায় চলে আসেন।
স্বাধীনতার পরে তিনি টেন্ডু পাতার পরিবর্তে কাগজের বিড়ি তৈরি শুরু করেছিলেন। আর ১৯৭৪ সাল থেকে ফিলটার বিড়ি তৈরি শুরু হয়। ১৯৭৬ সালে একবার তিনি অন্য কাজে ঢাকায় আসেন। তখনো আকিজ বিড়ি ঢাকার বাজারে পাওয়া যেত না। ঢাকায় পাওয়া যায় এমন ৩১ রকমের বিড়ি সংগ্রহ করে সব খেয়ে দেখলেন। বুঝলেন যে আকিজ বিড়ির মান মোটেই খারাপ নয়। এরপর তিনি ঢাকায় তা বাজারজাত শুরু করেন এবং বাজার দখল করেন।
১৯৭৭ সালে সরকার পুঁজি প্রত্যাহার কর্মসূচি শুরু করলে টঙ্গীর ঢাকা টোব্যাকো ফ্যাক্টরি লিমিটেড কিনে নেন ৮০ লাখ টাকায়। তাদের কে-২ ব্র্যান্ড সিগারেটের প্রচুর চাহিদা ছিল বাজারে। পরে ৭৫ লাখ টাকায় কেনেন এশিয়ান টোব্যাকো নামের আরেকটি কারখানা। সেখ আকিজ উদ্দিন ১৯৭৯ সালে যশোর জেলার নোয়াপাড়ায় অবস্থিত এস এ এফ ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেড নামের একটি চামড়ার ট্যানারির শেয়ার কিনেছিলেন। আগে এর মালিক ছিলেন একজন ব্রিটিশ নাগরিক। ১৯৮০ সাল থেকে তিনি যশোরে ইটভাটা তৈরি করে ইটের ব্যবসা শুরু করেন। একই বছর ১২টি ট্রাক নিয়ে শুরু করেন আকিজ ট্রান্সপোর্ট এজেন্সি নামে পরিবহন ব্যবসা। এ সময় যুক্ত হন পেট্রলপাম্পের ব্যবসায়, নাম ছিল আকিজ পেট্রোলিয়াম। আকিজ উদ্দিন লিমিটেডের মাধ্যমে আগে থেকেই তিনি যুক্তরাজ্য, চীন, রাশিয়া, পোল্যান্ডে কাঁচা পাট রপ্তানি করতেন। ১৯৭৯ সালে একটি যাত্রীবাহী এবং দুটি কার্গো লঞ্চ নিয়ে খোলেন আকিজ নেভিগেশন কোম্পানি। ১৯৭৪ সালে বড় ছেলের নামে যশোরের নাভারনে শুরু করেছিলেন নাসির জর্দা ফ্যাক্টরি। নাভারন প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজেজ লিমিটেডও ছিল তাঁরই কোম্পানি।
২০০০ সাল পর্যন্ত আকিজ গ্রুপের ব্যবসার অর্ধেকটা জুড়েই ছিল তামাকসংশ্লিষ্ট পণ্যের ব্যবসা। ২০১৮ সালে জাপান টোব্যাকোর কাছে তামাক ও সংশ্লিষ্ট ব্যবসা বিক্রি করে দেয় আকিজ। দাম পায় প্রায় ১২ হাজার ৪০০ কোটি টাকা।
দুবার নিঃস্ব
পঞ্চাশের দশকের মাঝামাঝি ফুলতলায় আকিজ উদ্দিনের মনিহারি দোকানটি পুড়িয়ে দেওয়া হয়। তখন তাঁর সব সঞ্চয় ছিল দোকানে। তিনি নিজেও ভেতরে ছিলেন। কোনোরকমে বের হতে পারলেও সঞ্চয় সব পুড়ে যায়। কিন্তু কয়েক দিন পরেই দোকানটি আবার চালু হয়। বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ীরা আকিজ উদ্দিনের দোকানে পণ্য পাঠিয়ে দেন। সবাই বাবাকে খুব বিশ্বাস করতেন। তাঁরা জানতেন, আকিজ উদ্দিনের কখনো টাকা মেরে চলে যাবেন না। তাই বিপদের দিনে সবাই এগিয়ে এলেন। ব্যবসা আবার শুরু হলো।
পাট রপ্তানির জন্য আকিজ উদ্দিন একজন ইংরেজি জানা ব্যক্তিকে অংশীদার হিসেবে নেন। তিনিই রপ্তানির প্রক্রিয়াগত কাজ করতেন। টাকাপয়সার হিসাব রাখতেন। একসময় ওই অংশীদার বলেন, আকিজ উদ্দিন আর কিছুর মালিক নন। তাঁর কিছুই নেই। আকিজ উদ্দিনের সঙ্গে প্রতারণা করা ব্যক্তি কয়েক বছর পর একদিন তাঁর বাড়িতে এসেছিলেন। ওই লোক আসার পর আকিজ উদ্দিন তাঁকে বসিয়ে স্ত্রীকে খাবার দিতে বলেন।’ স্ত্রী এ নিয়ে আকিজ উদ্দিনের সঙ্গে উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন। জবাবে তিনি বলেছিলেন, “তোমার বাড়িতে এসেছে, এর চেয়ে বেশি কী চাও।”’
শুরু থেকেই ব্র্যান্ডিং
আকিজ উদ্দিন যখন বিড়ি উৎপাদন করতেন, তখন বাজারে অনেক বিড়ি ছিল। এখনকার মতো প্যাকেট, মুদ্রিত নাম ছিল না। ছিল না কোনো ব্র্যান্ড। কিন্তু আকিজের বিড়ি সবাই চিনত। কারণ, বিড়ির সঙ্গে একটু লাল সুতা বেঁধে দিয়ে তিনি নিজের পণ্যকে আলাদা করতেন। তখন পণ্যের উৎপাদনের চেয়ে চাহিদা বেশি ছিল। তাই তৈরি করলেই বিক্রি হয়ে যেত। কিন্তু আকিজ উদ্দিন বুঝতেন, একটা সময় সেটা থাকবে না। তাই আলাদা পরিচিতি ছাড়া উপায় নেই। শুরু থেকেই আকিজ উদ্দিন ব্র্যান্ডিংয়ে নজর দিয়েছিলেন, মানের দিকে নজর দিয়েছিলেন। তিনি বলতেন, আকিজ যে পণ্য বানাবে, তা মানের দিক দিয়ে বাজারের শ্রেষ্ঠ হতে হবে। আকিজ উদ্দিন পাইকারি বাজারকেন্দ্রিক ব্যবসার বদলে নিজস্ব সরবরাহব্যবস্থা তৈরির ওপর জোর দিতেন। এতে তাঁর খরচ বেশি পড়ত। কিন্তু সেটা ছিল ব্যবসার শক্তি। সেই কৌশলটি আকিজ এখনো ধরে রেখেছে। আকিজ উদ্দিনে মারা যাওয়ার সময় ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার কোটি টাকার ব্যবসা ছিল। এখন সেটা কয়েক গুণ বেড়েছে। ১৩ বছরের বালক মাত্র ১৬ টাকা পুঁজি নিয়ে বাণিজ্য শুরু করে পরিণত বয়সে নিজেই একটি প্রতিষ্ঠান হয়ে উঠেছিলেন। একের পর এক গড়ে তুলেছেন অসংখ্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও কল-কারখানা। তাঁর দূরদর্শিতা ও সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার ফলেই প্রতিটি ব্যবসা পেয়েছে অনন্য সাফল্য। সে সাফল্য দেশ ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়েও সুখ্যাতি এনেছে।
বিলাসিতার বদলে ছিল পরিমিতিবোধ
আকিজ উদ্দিনের জন্ম ১৯২৯ সালে। মৃত্যু ২০০৬ সালে। ৭৭ বছরের জীবনে তাঁর ‘ট্রেডমার্ক’ পোশাক ছিল সাদা পাঞ্জাবি, সঙ্গে মোটা ফ্রেমের চশমা। জীবনভর সংগ্রাম করেছেন, বিলাসিতার বদলে ছিল পরিমিতিবোধ। প্রথম দিকে ভেসপা (দুই চাকার মোটরযান) চালাতেন। ১৯৭৭ সালের পর নিজের জন্য কোনো গাড়ি কেনেননি। বিপুল অর্থবিত্তের মালিক হলেও সন্তানদের দিয়েছেন পরিমিত জীবনযাপনের দীক্ষা।