Home বিজ্ঞান প্রথম শারীরিক প্রতিবন্ধী মহাকাশচারী হচ্ছেন জন ম্যাকফল

প্রথম শারীরিক প্রতিবন্ধী মহাকাশচারী হচ্ছেন জন ম্যাকফল

তাসনিম তাবাসসুম
৫১ views

আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (আইএসএস) গমনের জন্য প্রথমবারের মতো জন ম্যাকফল নামে শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী এক ব্যক্তিকে অনুমোদন দিয়েছে ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা (ইএসএ)। ইএসএ জানিয়েছে, আইএসএস’র দীর্ঘমেয়াদী মিশনের জন্য চিকিৎসাগত অনুমোদন পেয়েছেন ম্যাকফল। প্রস্থেটিক ব্যবহারকারী এই ব্যক্তির মহাকাশ অভিযানের সদস্য হওয়ার সম্ভাব্যতা মূল্যায়ন করে আসছে দীর্ঘদিন ধরেই।  ২০২২ সালে ম্যাকফলকে মহাকাশচারী রিজার্ভ সদস্য হিসেবে ঘোষণা করেছিল ইএসএ। 

 অনুমোদন পাওয়া ম্যাকফল (৪৩) একজন ব্রিটিশ নাগরিক। পেশায় সার্জন ও সাবেক প্যারালিম্পিয়ান। ১৯ বছর বয়সে বাইক দুর্ঘটনায় এক পা হারান তিনি। শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন মিশনে যুক্ত করাকে মাইলফলক ঘটনা হিসেবে দেখছেন অনেকে। ঘোষণাটি এমন সময় এসেছে যখন বৈচিত্র্য, সমতা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উদ্যোগগুলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রশাসনের সমালোচনার মুখে পড়েছে।

এই প্রসঙ্গে জন ম্যাকফল বলেন, “এটি আমার জীবনের অনেক বড় অর্জন। অনেক বড় কিছু। আমাকে মহাকাশ স্টেশনে গমনের অনুমোদন দেয়া একটি সাংস্কৃতিক পরিবর্তনও (কালচারাল শিফট) বটে। বিষয়টিকে নিজের জন্য “অত্যন্ত গর্বিত” বলে উল্লেখ করে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন জন ম্যাকফল।

জন ম্যাকফল

ব্রিটিশ নাগরিক জন ম্যাকফল (৪৩), ছবি: বিবিসি

তিনি আরও বলেন, এই মিশন শুধুমাত্র ব্যক্তিগত সাফল্য হিসেবে নয়, বরং বৃহত্তর সামাজিক পরিবর্তনের অংশ। আমার  বিশ্বাস এই মিশন অন্যান্য শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে। তাদেরকে উচ্চাকাঙ্ক্ষী লক্ষ্য অর্জনে অনুপ্রাণিত করবে বলেও জানান জন ম্যাকফল।  

ইএসএ-এর মানুষ ও রোবোটিক অনুসন্ধান বিভাগের পরিচালক ড্যানিয়েল নিউয়েনশ ওয়ান্ডার বলেন, “এখন তিনি অন্য সব মহাকাশচারীর মতোই, যারা মহাকাশ স্টেশনে যেতে চান, মিশন নিয়োগের জন্য অপেক্ষা করছেন। তবে তিনি কবে নাগাদ মহাকাশ যাত্রা করবেন তা এখনো নির্ধারণ হয়নি।’

নিউয়েনশ ওয়ান্ডারের মতে, আমেরিকায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর স্পেস স্টেশনে দৃষ্টিকোণ ও মূল্যবোধের বেশ পরিবর্তন এসেছে। আমরা ইউরোপীয় মূল্যবোধের সাথে অবিচল থাকব। আইএসএস-এর অংশীদারের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রও রয়েছে। ম্যাকফলকে চিকিৎসাগত অনুমোদনের বিষয়টিতে তারাও সম্মতি দিয়েছে।

প্যারালম্পিক

২০০৭ সালের প্যারালিম্পিকে দৌড়াচ্ছেন জন ম্যাকফল, ছবি: পিএইচওয়াই ডট ওআরজি

ম্যাকফলের মহাকাশ গমনের তারিখ নির্ধারণ না হওয়ার কারণও রয়েছে। অনুমোদন কেবল প্রথম ধাপ। পরবর্তী ধাপে বিশেষ করে প্রস্থেটিক ম্যাকফলের ডিভাইসগুলো মূল্যায়ন করা হবে, যাতে ম্যাকফল মহাকাশে অতিরিক্ত চ্যালেঞ্জগুলো সঠিকভাবে মোকাবেলা করতে পারেন। যে প্রযুক্তিগুলোর ওপর কাজ করছেন সেগুলো সমাজের অন্যান্য প্রস্থেটিক ব্যবহারকারীদের জন্যও উপকার বয়ে আনবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। 

ম্যাকফলের এই অর্জন মহাকাশ গবেষণায় একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। শারীরিক প্রতিবন্ধীদের জন্য এটি একটি প্রেরণার উৎস। ম্যাকফলের মতো মহাকাশচারীদের অন্তর্ভুক্ত করা মহাকাশ গবেষণার পরিসরকে আরও বিস্তৃত করবে এবং বিভিন্ন পটভূমি ও সক্ষম ব্যক্তিদের জন্য নতুন সুযোগ সৃষ্টি করবে।

সূত্র:জিও নিউজ ও স্পেস এক্সপেডিশন

আরও যা পড়তে পারেন

কমেন্ট করুণ