ভালোবাসা এক মায়াবী অনুভূতি, যা আমাদের জীবনকে করে তোলে রঙিন, অর্থবহ। তবে সব সম্পর্কই যে সুখের পরিণতিতে পৌঁছায়—তা নয়। অনেক সময় ভালোবাসার আবেশে আমরা এমন কিছু সংকেত উপেক্ষা করি, যা পরবর্তীতে দুঃখজনক পরিণতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এ ধরনের সংকেতগুলোকেই বলা হয় ‘লাল নিশান’ বা রেড ফ্ল্যাগস। এই ‘লাল নিশান’ মানে কিন্তু শুধুই সন্দেহ বা অবিশ্বাস নয়—এরা একেকটা সতর্কবার্তা, যা সময়মতো বুঝতে পারলে আপনাকে বাঁচাতে পারে এক বিষাক্ত সম্পর্ক থেকে।
এবার আসুন, দেখে নিই ভালোবাসার সম্পর্কে কিছু সাধারণ কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ ‘লাল নিশান’—যা একবার হলেও ভেবে দেখা দরকার:
- আপনার সঙ্গী যদি সবসময় জানতে চান আপনি কোথায় যাচ্ছেন, কার সঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন বা কি পরেছেন—তবে সেটি প্রেম নয়, নিয়ন্ত্রণ। ভালোবাসা মানে স্বাধীনতা ও পারস্পরিক বিশ্বাস, নজরদারি নয়।
- আপনি যদি বারবার সম্পর্কের সমস্যা নিয়ে নিজেকে দায়ী ভাবেন, অথচ অপর পক্ষ কখনও নিজের দোষ স্বীকার করেন না—তাহলে সেটি একধরনের মানসিক চাপে ফেলা। একে বলে গ্যাসলাইটিং, এবং এটি একটি বড় লাল নিশান।
- সুস্থ ঈর্ষা এক জিনিস, কিন্তু যদি ছোটখাটো ব্যাপারে সন্দেহ তৈরি হয়—যেমন বন্ধুর ফোনকল বা সামাজিক মাধ্যমে একটি কমেন্ট—এই আচরণটি পরবর্তীতে সম্পর্ককে বিষাক্ত করে তুলতে পারে।
- আপনি যদি দেখতে পান যে, আপনি আর আগের মতো হাসেন না, নিজের পছন্দের জিনিসগুলো ত্যাগ করছেন শুধু সঙ্গীর মন রাখতে—তবে সেই ভালোবাসা নয়, আত্মত্যাগ।
- একবার ভুল হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু যদি সেই একই ভুল বারবার ঘটে এবং শুধুই কথার ক্ষমা দিয়ে মাফ চাওয়া হয়—তবে সেটিও একটি লাল নিশান।
তাহলে কী করবেন?
- নিজেকে সময় দিন। এক ধাপ পিছিয়ে সম্পর্কটি বিশ্লেষণ করুন। আপনি সুখী তো?
- বন্ধু বা পরিবারের মতামত শুনুন। অনেক সময় বাইরের কেউ পরিস্থিতি আরও পরিষ্কারভাবে দেখতে পারেন।
- না বলার সাহস রাখুন। নিজের মানসিক স্বাস্থ্য সব কিছুর ওপরে।
লাল নিশান মানেই সম্পর্ক শেষ করতে হবে—তা নয়। কিন্তু সতর্ক থাকা আবশ্যক। যদি আপনি সময়মতো এসব সংকেত চিনে নিতে পারেন, তবে হয়তো এক গভীর ভুলের হাত থেকে নিজেকে বাঁচাতে পারবেন। ভালোবাসা মানে শুধু ভালোলাগা নয়, ভালো থাকা—উভয়পক্ষের। মনে রাখবেন, যে ভালোবাসা আপনাকে ছোট করে, সেটা আর যাইহোক ভালোবাসা নয়।