সৌন্দর্য চর্চায় তেলের কথা উঠলে প্রথমে চুলে তেল লাগানোর চিত্র ভেসে ওঠে। চুলের যত্নে তেল সবসময় হিরো হয়ে থাকবে। তবে বর্তমানে বিউটি ইন্ডাস্ট্রিতে মুখের ত্বকের যত্নে তেলের ব্যবহার বেড়েছে। অনেকেই মনে করেন, ত্বকে তেল ব্যবহার করলে ব্রণ বা র্যাশ হতে পারে। কথাটি পুরোপুরি ভুল নয়।
এ ধরনের সমস্যা এড়িয়ে কার্যকারিতা পেতে সঠিক তেল নির্বাচন করতে হবে। এতে ত্বক আর্দ্র, উজ্জ্বল ও সুস্থ থাকবে। সুস্থ ত্বকের জন্য সবচেয়ে ভালো নন-কমেডোজেনিক তেল। এতে রোমকূপ বন্ধ হয়ে ত্বকে ব্রণ বা র্যাশ হওয়ার ঝুঁকি থাকে না। ত্বকের জন্য সবচেয়ে উপকারি নন-কমেডোজেনিক তেল।
নন-কমেডোজেনিক তেল কী?
এটি এমন এক ধরনের তেল, যা রোমকূপ বন্ধ করে না পাশাপাশি ব্রণের সৃষ্টি রোধ করে। এগুলো সাধারণত হালকা ও সহজেই শোষিত হয়, যা তৈলাক্ত, সংবেদনশীল ও ব্রণ-প্রবণ ত্বকের জন্য আদর্শ।
ত্বকের জন্য সেরা এমন কয়েকটি নন-কমেডোজেনিক তেলের বিবরণ তুলে ধরা হলো এই আয়োজেনে। যে তেল ব্যবহারের পলে আপনার ত্বক থাকবে আর্দ্র, উজ্জ্বল ও সুস্থ।

ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতেও তেল বেশ কার্যকরী, ছবি: স্টাইল ক্রেজ
রোজহিপ অয়েল (Rosehip Oil)
রোজহিপ অয়েল ভিটামিন এ ও সি সমৃদ্ধ, যা কোলাজেন উৎপাদন বাড়িয়ে ত্বকের বুড়িয়ে যাওয়া রোধ করার ক্ষমতা রাখে। এছাড়া এই তেল ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখার পাশাপাশি ব্রণের দাগ ও রঙের অসমতা কমাতে সহায়ক।
আরগান অয়েল (Argan Oil)
যাদের ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক তাদের জন্য আরগান অয়েল বেশ ভালো। এছাড়া তৈলাক্ত ত্বকের অধিকারীরাও এই তেল ব্যবহার করতে পারেন। কারণ এটি ত্বকে সিবামের উৎপাদন নিয়ন্ত্রণ করে ব্রণ রোধ ও প্রতিরোধ করতে পারে। আরগান অয়েলে আছে ভিটামিন ই ও ফ্যাটি অ্যাসিড। ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতেও এই তেল বেশ কার্যকরী।

ত্বকের ধরন অনুযায়ী উপযুক্ত তেল নির্বাচন করুন, ছবি: ফিডাল ডটকম
মারুলা তেল
মারুলা ফলের শাঁস থেকে তৈরি হয় এই তেল। এটি প্রাকৃতিকভাবে ভিটামিন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও প্রয়োজনীয় ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ। মারুলা তেল উচ্চমাত্রার ওমেগা-৬ ও ওমেগা-৯ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ, যা ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রেখে শুষ্কতা দূর করে। ভিটামিন সি ও ই সমৃদ্ধ হওয়ায় এটি ত্বকের কোলাজেন উৎপাদন বাড়িয়ে বলিরেখা ও ফাইন লাইন হ্রাস করতে সাহায্য করে। মারুলা অয়েলে থাকা পলিফেনল ও ফ্ল্যাভোনয়েডস ত্বককে দূষণ ও ফ্রি র্যাডিক্যালের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে সুরক্ষা করে।
জোজোবা অয়েল (Jojoba Oil)
জোজোবা তেল ত্বকের সিবামের মতো আচরণ করতে পারে। তাই ত্বকের তৈলাক্ততা নিয়ন্ত্রণে এটি বেশ ভালো কাজ করে। পাশাপাশি এর রয়েছে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি গুনাগুণ, যা ব্রণ ও ত্বকের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
ত্বকের যত্নে নন-কমেডোজেনিক তেল ব্যবহার করলে ত্বক স্বাস্থ্যকর, উজ্জ্বল ও ব্রণমুক্ত থাকবে। তবে নতুন তেল ব্যবহারের আগে প্যাচ টেস্ট করে নেওয়া ভালো, বিশেষ করে সংবেদনশীল ত্বকের জন্য। ত্বকের ধরন অনুযায়ী উপযুক্ত তেল নির্বাচন করুন এবং ত্বককে দিন প্রাকৃতিক পুষ্টি ও যত্ন।