Home সারাদেশ যশোরে হাসপাতালের টয়লেটে সন্তান প্রসবে চাঞ্চল্য

যশোরে হাসপাতালের টয়লেটে সন্তান প্রসবে চাঞ্চল্য

যশোর সংবাদদাতা
views

যশোর জেনারেল হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডের টয়লেটে এক প্রসূতি সন্তান প্রসব করায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) দিবাগত গভীর রাতে টয়লেটে তার সন্তান প্রসব হয়ে যায়। এ সময় তিনি সন্তানের নাড়ি ছেঁড়া ও পরিষ্কার শুরু করেন। পরে নবজাতকের কান্নার আওয়াজে বিষয়টি জানাজানি হলে সেখান থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে প্রসূতি ওয়ার্ডে পাঠানো হয়।

এদিকে, অন্তঃসত্ত্বা নারী কেন মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি হলেন; আর টয়লেটে কেন সন্তান প্রসব হলো। এমন প্রশ্নে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। চিকিৎসক ও নার্সরা বলছেন, তথ্য গোপন করে পেট ব্যথার কথা বলে ওই নারী মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি হন। বিষয়টি খতিয়ে দেখবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

প্রসূতি ওই নারীর নাম রত্না বিশ্বাস (৩৬)। তিনি বাঘারপাড়া উপজেলার জোহরপুর ইউনিয়নের খালিয়া গ্রামের বাসিন্দা। তার ১০ বছর বয়সী এক মেয়ে ও আড়াই বছর বয়সী এক ছেলে সন্তান রয়েছে।

হাসপাতালের নার্স, চিকিৎসক ও রোগীর স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে যশোর হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছিলেন ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা রত্না রানী। ভর্তি হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরেই প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিয়ে টয়লেটে যান। টয়লেটের ভিতরেই ওই নারী কোনো ধরনের চিকিৎসা সহায়তা ছাড়াই সন্তান প্রসব করেন। শুধু বাচ্চা প্রসবই নয়, এরপর নিজের শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করেন সদ্য ভূমিষ্ঠ হওয়া ছেলে শিশুটিকে। এরপর নিজেই টয়লেটের ওয়াশরুমে থাকা বদনার পানি দিয়ে নবজাতকের শরীর পরিষ্কার করছিলেন। এ সময় শিশুর কান্নার আওয়াজ শুনে কর্তব্যরত নার্স নবজাতক ও প্রসূতিকে উদ্ধার করেন। পরে নার্সরা নবজাতককে শিশু বিভাগে ও প্রসূতিকে গাইনি লেবার ওয়ার্ডে রেফার্ড করেন। প্রসূতি নারীর লেবার ওয়ার্ডে চিকিৎসা চলছে। আর নবজাতকটিকে শিশু ওয়ার্ডের অবজারভেশনে রাখা হয়েছে। তারা দুজনেই এখন শঙ্কামুক্ত।

শুক্রবার (২০ জুন) সন্ধ্যায় হাসপাতালের শিশুবিভাগে গিয়ে দেখা যায়, অবজারভেশন ওয়ার্ডে শিশুটিকে হাসপাতালের নার্সিং ইনস্টিটিউটের দুই নার্সিং শিক্ষার্থী দেখভাল করছেন। ফুটফুটে নবজাতকটি ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে দেখছে। স্বাভাবিক বাচ্চাদের মতো পা উঠিয়ে খেলাও করছে।

দায়িত্বে থাকা নার্স রিনা সরকার বলেন, ‘বাচ্চাটির ওজন আড়াই কেজি। যা স্বাভাবিক। বাচ্চাটি সুস্থ আছে। তার মা এখনো দেখতে আসেনি। কিন্তু হাসপাতালে ঘটনাটি আলোচিত হওয়াতে অনেকেই খোঁজখবর নিতে আসছে। এই নার্সের ভাষ্য, বাচ্চাটি নিতে অনেকেই এখন আগ্রহ দেখাচ্ছে। অনেক নার্সের বাচ্চা নেই; তারাও বাচ্চাটি দত্তক নেওয়ার ব্যাপারে আগ্রাহ দেখাচ্ছে।

এদিকে হাসপাতালের কেউ কেউ বলছেন, আগে দুটি বাচ্চা থাকার পরেও এই বাচ্চাটি নিতে চাইছিলেন না হতদরিদ্র এই পরিবার। তাই গর্ভবর্তী থাকলেও হাসপাতালে ভর্তি হন সাধারণ রোগী হিসাবে। পরে টয়লেটে বাচ্চা প্রসব করে বাচ্চাটিকে পানিতে শ্বাসরোধ করে হত্যা চেষ্টা করছিল বলেও গুঞ্জন ছড়িয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আগামীকাল শনিবার তদন্ত করা হবে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

হাসপাতালের লেবার ওয়ার্ডের মেঝেতে চিকিৎসা চলছে প্রসূতি রত্মা বিশ্বাসের। তিনি বলেন, ‘কিভাবে সন্তান প্রসব হলো বুঝতে পারছি না। তবে আমি গর্ভবর্তী সেটা সকলেই জানত। তিনি বলেন, ‘নিজ সন্তানকে কেন মারতে চাইব।’

রত্নার স্বামী মাছ বিক্রেতা রমেশ বিশ্বাস জানান, রত্না দীর্ঘদিন ধরেই মানসিক সমস্যায় ভুগছে। বিষয়টি নিয়ে পরিবার থেকে চিকিৎসার চেষ্টা চলছিল। যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক হুসাইন শাফায়েত জানান, ঘটনাটি নিয়ে নানা রহস্যের জন্ম দিয়েছে। তথ্য গোপন করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তারপরে টয়লেটে সন্তান জন্মদান এসব নিয়ে তদন্ত চলছে। প্রসূতি নারীটি মানসিকভাবে অসুস্থ। শনিবার হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের দায়িত্বরতদের সাথে বসা হবে। তখন বিষয়টি পরিষ্কার হবে।

আরও যা পড়তে পারেন

কমেন্ট করুন

Hello Bangladesh

বাংলাদেশের একটি অন্যতম অনলাইন সংবাদ পোর্টাল হ্যালো বাংলাদেশ। ২০২৪ সালে যাত্রা শুরু করা ‘হ্যালো বাংলাদেশ’ সর্বোচ্চ মান বজায় রেখে কনটেন্ট প্রকাশে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা দেশ বিদেশের সংবাদ, প্রযুক্তি, সংস্কৃতি, ইতিহাস, বিনোদন এবং উদ্ভাবনসহ নানা বিষয়ে প্রতিদিনের আপডেট আপনাদের কাছে পৌঁছে দিতে সদা প্রস্তুত।

Edtior's Picks

Latest Articles

u০০a৯২০২২u০০a০Soledad.u০০a০All Right Reserved. Designed and Developed byu০০a০Penci Design.