ক্যান্সার চিকিৎসায় যুগান্তকারী সাফল্যের ইঙ্গিত মিলল সাম্প্রতিক এক গবেষণায়। যুক্তরাষ্ট্রের মিসিসিপি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা সামুদ্রিক শশার মধ্যে এক বিরল শর্করার সন্ধান পেয়েছেন, যা ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি ও ছড়িয়ে পড়া রুখে দিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
গবেষকরা জানিয়েছেন, অন্যান্য প্রতিরোধকের মতো এটি রক্ত জমাট বাঁধার প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করে না, ফলে ভবিষ্যতে এই উপাদান অনেক বেশি নিরাপদ ওষুধ তৈরিতে কাজে লাগতে পারে। বর্তমানে যৌগটিকে পরীক্ষাগারে রাসায়নিকভাবে তৈরি করার চেষ্টা করছেন তারা।
বিজ্ঞান পত্রিকা ‘গ্লাইকোবায়োলজি’-তে প্রকাশিত হয়েছে এই গবেষণা। বিজ্ঞানীদের দাবি, ‘হলোথুরিয়া ফ্লোরিডানা’ প্রজাতির সামুদ্রিক শশায় ‘ফিউকোসাইলেটেড কনড্রয়টিন সালফেট’ নামক একটি যৌগ পাওয়া যায়। এই যৌগ ‘সালফ-২’ নামের একটি উৎসেচককে (জৈব অনুঘটক) নিষ্ক্রিয় করে দেয়। ক্যান্সার কোষ এই উৎসেচকটিকে ব্যবহার করেই নিজেদের বৃদ্ধি ঘটায় এবং শরীরের অন্যত্র ছড়িয়ে পড়ে (মেটাস্ট্যাসিস)। ফলে এই উৎসেচকের কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে গেলে আর ছড়িয়ে পড়তে পারবে না ক্যান্সার।

সামুদ্রিক শশার মধ্যে এক বিরল শর্করার সন্ধান পেয়েছেন মিসিসিপি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা, ছবি : সায়েন্স ডেইলি
গবেষণাপত্রটির প্রধান লেখক মারওয়া ফারাগ বলেন, ‘সামুদ্রিক প্রাণিরা এমন কিছু যৌগ তৈরি করে যার গঠন অনান্য স্থলচর প্রাণির মধ্যে প্রায় পাওয়াই যায় না। সামুদ্রিক শশার মধ্যে প্রাপ্ত শর্করা যৌগগুলো সেই কারণেই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রচেষ্টা সফল হলে, তা ভবিষ্যতে আরও নিরাপদ, নির্ভরযোগ্য ও পরিবেশবান্ধব ক্যান্সারের ওষুধ তৈরিতে কাজে লাগবে।’
বিজ্ঞানীদের ভাষায়, ‘ওষুধ হিসেবে এটিকে তৈরি করার অন্যতম সমস্যা হল এর স্বল্প জোগান। তাই আমাদের রাসায়নিক সংশ্লেষণের পথেই হাঁটতে হবে।’
তবে আশা জাগালেও এই আবিষ্কারকে চিকিৎসায় কাজে লাগানোর পথে একটি বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে। বাণিজ্যিক উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় বিপুল পরিমাণ সামুদ্রিক শশা প্রকৃতিতে পাওয়া সম্ভব নয়।
সূত্র : সায়েন্স ডেইলি, ইকোনমিক টাইমস ও সাস্টেনিবিলিটি টাইমস