Home বাংলাদেশ ব্যাটারিচালিত থ্রি-হুইলার নিয়ে কাজ করছে বিআরটিএ

ব্যাটারিচালিত থ্রি-হুইলার নিয়ে কাজ করছে বিআরটিএ

জুবায়ের আহমেদ
১৬ views

সিএনজিচালিত অটোরিকশার আদলে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা নিয়ে কাজ করছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। এর জন্য একটি নীতিমালা ইতোমধ্যে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের পাঠানো হয়েছে। এই নীতিমালার আওতায় আরও থাকবে ব্যাটারিচালিত অটোটেম্পো, থ্রি-হুইল ভ্যান।

সম্প্রতি বিআরটিএ এর কয়েকটি সূত্র থেকে এ তথ্য জানা গেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে বলা হয়, ‘বৈদ্যুতিক থ্রি-হুইলার ব্যবস্থাপনা নীতিমালা, ২০২৫’ নামে এই নীতিমালা তৈরি হচ্ছে।

প্রস্তাবিত এ নীতিমালায় যানবাহনের নিবন্ধন, গতি, চলাচল সীমা, চালকের লাইসেন্স, নির্মাণমান ও ভাড়া নিয়ন্ত্রণের বিষয়গুলো স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।

নীতিমালায় বলা হয়েছে, বৈদ্যুতিক থ্রি-হুইলার জাতীয় যানবাহনগুলো মহাসড়কে চলতে পারবে না। এগুলো নির্ধারিত রুট ও এলাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে। এই বিধিনিষেধ আরোপের অন্যতম উদ্দেশ্য হচ্ছে সড়ক দুর্ঘটনা হ্রাস ও নিরাপদ পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলা।

এই ব্যাটারি চালিত থ্রি-হুইলারের নিবন্ধন, লাইসেন্স ও স্পেসিফিকেশন বাধ্যতামূলক করা হবে। বিআরটিএ অনুমোদিত ‘স্পেসিফিকেশন’ অনুযায়ী এসব বাহন তৈরি করতে হবে। রাজধানী ও ‘এ’ ক্যাটাগরির পৌরসভায় চলাচলের জন্য নিতে হবে বিআরটিএর নিবন্ধন। চালকদের জন্য ড্রাইভিং লাইসেন্স বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। গতি সীমা ধরা হয়েছে সর্বোচ্চ ৫০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা।

এ জাতীয় বাহনের ভাড়া নির্ধারণ করবে বিআরটিএ। চালকদের ‘কন্ট্রাক্ট ক্যারিজ’ হিসেবে নির্ধারিত এলাকার মধ্যে যাত্রী পরিবহন করতে হবে, অস্বীকৃতি জানানো যাবে না। বাহনের অর্থনৈতিক আয়ুষ্কাল নির্ধারণ করবে সরকার এবং মেয়াদ শেষ হলে সেটি ‘স্ক্র্যাপ নীতিমালা’ অনুযায়ী সরিয়ে ফেলতে হবে।

এছাড়া নীতিমালায় ব্যক্তি সর্বোচ্চ তিনটি ও কোনো কোম্পানি সর্বোচ্চ ২৫টি বৈদ্যুতিক থ্রি-হুইলার নিবন্ধনের জন্য আবেদন করতে পারবে। নিবন্ধনের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট এলাকায় জনসংখ্যা, সড়ক নেটওয়ার্ক ও অর্থনৈতিক গুরুত্ব বিবেচনায় সংখ্যা (সিলিং) নির্ধারণ করবে বিআরটিএ। এই সিলিং পরিবর্তনের জন্য সরকারের অনুমোদন নিতে হবে।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) নিরাপদ ও মানসম্মত ব্যাটারিচালিত থ্রি-হুইলার তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে। ইতোমধ্যে তারা একটি আপগ্রেডেড ইজিবাইক, একটি পূর্ণাঙ্গ থ্রি-হুইলার ও একটি ফোর-হুইলার প্রটোটাইপ তৈরি করেছে। বুয়েটের প্রকল্পে সহায়তা করছে বাংলাদেশ জ্বালানি ও বিদ্যুৎ গবেষণা কাউন্সিল (বিইপিআরসি)। এই যানবাহনের মডেল নিরাপত্তা ও ব্রেকিং ব্যবস্থায় উন্নত। প্রতিযোগিতামূলক দামে বাজারজাত করা সম্ভব বলেও জানানো হয়েছে।

নতুন যান সিএনজির বিকল্প নয়, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার সঙ্গে মিলবে না
বিআরটিএ নতুন যে ব্যাটারি চালিত যান নিয়ে পরিকল্পনা করছে তা বিদ্যমান সিএনজির বিকল্প হবে না, আবার নতুন তৈরি হওয়া ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার সঙ্গে মিল থাকবে না বলে জানান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। তারা জানান, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে যে রিকশার কথা বলা হচ্ছে তা, দুই আসনবিশিষ্ট হবে। এদিকে বিআরটিএ যে ব্যাটারিচালিত থ্রি হুইলার নিয়ে কাজ করছে তা আকারে একটি পূর্ণাঙ্গ সিএনজির মত হবে, আসন সংখ্যাও বেশি। তবে তা আপাতত সিএনজির বিকল্প হবে না। বরং ব্যাটারিচালিত রিকশার ওপর চাপ কমাতে এটি আনা হচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিআরটিএ চেয়ারম্যান আবু মমতাজ সাদ উদ্দিন আহমেদ হ্যালো বাংলাদেশকে বলেন, আমি নতুন এসেছি, তাই এ বিষয়ে অবগত নই। তিনি ইঞ্জিনিয়ারিং শাখায় যোগাযোগ করতে বলেন।

ইঞ্জিনিয়ারিং শাখার উপপরিচালক (ইঞ্জিনিয়ারিং-২) মো. ফারুক আহমেদ হ্যালো বাংলাদেশকে বলেন, ‘এ যানবাহন নিয়ে কাজ চলমান। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এর সহায়তায় একটি নিরাপদ ও মানসম্মত ব্যাটারিচালিত থ্রি-হুইলার তৈরি করা হচ্ছে। এবং নীতিমালার আওতায় এটি চালানো হবে।

এছাড়াও এসব ব্যাটারি চালিত যানের নানা যন্ত্রাংশ উৎপাদনের ক্ষেত্রে বিএসটিআইয়ের অনুমোদন লাগবে।

ঢাকায় পরীক্ষামূলক প্রয়োগের পরিকল্পনা
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, প্রথম অবস্থায় নতুন এই ব্যাটারিচালিত থ্রি-হুইলার রাজধানীতে চলাচলের অনুমতি দেয়া হবে৷ পর্যায়ক্রমে দেশের বিভিন্ন জেলা শহরে অনিরাপদ ইজিবাইক সরিয়ে এই মডেল চালু করা হবে।

আরও যা পড়তে পারেন

কমেন্ট করুন