যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ইরান হুমকি হয়ে উঠেছিল এমন দাবির পক্ষে কোনো সুস্পষ্ট প্রমাণ দিতে পারেননি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এমন দাবি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে গবেষণা করা অলাভজনক সংস্থা কুইন্সি ইনস্টিটিউট ফর রেসপনসিবল স্টেটক্রাফটের নির্বাহী সহ-সভাপতি ত্রিতা পার্সি।
কাতারভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমন দাবি করেন তিনি। আল জাজিরাকে বলেন, ‘তা না ছিল অস্তিত্বের জন্য হুমকি, না ছিল আসন্ন। চলমান পরিস্থিতির বাস্তবতা আমাদের মনে রাখতে হবে, সেটি হলো- আগে আক্রান্ত না হয়েও দুটি পারমাণবিক শক্তিধর দেশ একটি অ-পারমাণবিক রাষ্ট্রের ওপর হামলা করেছে।’

শনিবার লস অ্যাঞ্জেলেসে যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভ করেছে সাধারণ মানুষ, ছবি : সিএনএন
ইরান আগে ইসরায়েলে হামলা করেনি, উপরন্তু দেশটি যুদ্ধ শুরু করেছে। যুক্তরাষ্ট্রও ইরানের হামলার শিকার হয়নি, তবে এই মুহূর্তে সংঘাত তারাই শুরু করেছে বলেও ত্রিতা পার্সি দাবি করেন।
ইরানের ওপর এই হামলা ‘পৃথিবীজুড়ে ধাক্কা’ দেবে, কেননা যেসব দেশ মনে করছে যে, তারা যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের নজরে পড়তে পারে, তাদের পক্ষে পারমাণবিক প্রতিরোধ ক্ষমতা ছাড়া নিজেদের নিরাপদ ভাবা কঠিন হবে। তাই আশঙ্কা করছি, আমরা আরও পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্তার দেখব। তবে আমি মনে করি, এই হামলা কমবেশি নিশ্চিত করে দিয়েছে যে, ইরান আগামী পাঁচ থেকে দশ বছরের মধ্যে পারমাণবিক অস্ত্রধারী রাষ্ট্র হয়ে উঠবে।’

কুইন্সি ইনস্টিটিউট ফর রেসপনসিবল স্টেটক্রাফটের নির্বাহী সহ-সভাপতি ত্রিতা পার্সি, ছবি : ইনফ্লুয়েন্স ওয়াচ
ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের (আইসিজি) ইরান-বিষয়ক বিশেষজ্ঞ আলী ভায়েজ বলেন, ‘পারমাণবিক স্থাপনায় হামলায় উদ্বেগের ব্যাপার হলো, এই ধরনের আঘাত ইরানকে দ্রুত পারমাণবিক বোমা তৈরির দিকে ঠেলে দিতে পারে।’
ইসরায়েলের হামলায় ইরানের সামরিক বাহিনীর প্রধান মোহাম্মদ বাঘেরি ও ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ডের (আইআরজিসি) প্রধান হোসেইন সালামিসহ বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন সামরিক ও নিরাপত্তা কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। এদের সঙ্গে ছয়জন পরমাণুবিজ্ঞানী নিহত হওয়ার তথ্য দিয়েছে ইরান।
ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনায় ইসরায়েলের হামলা মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনাকে এক নতুন মাত্রায় নিয়ে গেছে। এর ফলে পারমাণবিক নীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে পারে তেহরান।
সূত্র : আল জাজিরা