নতুন প্রজন্মের জনপ্রিয় সামাজিক প্ল্যাটফর্ম টিকটক, ইনস্টাগ্রাম ও ইউটিউবে এএসএমআর ভিডিওর ছড়াছড়ি। পেশাদার থেকে আনাড়ি সবাই এই ভিডিও তৈরিতে মেতে উঠেছেন। এস্থেটিক বা নান্দনিক বিষয়টি জেন-জি প্রজন্মের একটি ট্রেন্ড। সেই ট্রেন্ডকে আরো এক ধাপ এগিয়ে নিয়েছে এএসএমআর। অটোনোমাস সেন্সরি মেরিডিয়ান রেসপন্স বা এএসএমআর হলো একটি শারীরিক এবং মানসিক অভিজ্ঞতা, যা নির্দিষ্ট উদ্দীপনার প্রতিক্রিয়ায় আনন্দদায়ক এবং শিথিলতামূলক অনুভূতির সংমিশ্রণ ঘটায়।
এই শিল্পে এমন কিছু শব্দ বা ভিজ্যুয়াল নিয়ে কাজ করা হয় যা শরীরে শিহরণ বা শিথিলতার অনুভূতি সৃষ্টি করে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লাখ লাখ মানুষের মনোযোগ আকর্ষণ করেছে এই ভিডিওগুলো। এএসএমআর-এর জনপ্রিয়তার প্রধান কারণ হলো এর প্রশান্তিদায়ক প্রভাব। এই প্রজন্ম প্রায়ই স্কুল, অফিস এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে সৃষ্ট মানসিক চাপের মুখোমুখি হয়। তাই তারা দ্রুত এবং সহজে শিথিল হওয়ার উপায় খোঁজে। এএসএমআর ভিডিওগুলো ব্যবহারকারীদের মানসিক চাপ কমাতে, মনোযোগ বাড়াতে এবং ঘুমাতে সাহায্য করে। সাধারণত এএসএমআর ভিডিওগুলোর মধ্যে রয়েছে ফিসফিস, টোকা দেওয়া, কাগজের শব্দ, প্যাকেট খোলা, পালক ঘষা, বাবল ফাটানো ইত্যাদি যার সবই মানসিক প্রশান্তির জন্য তৈরি করা হয়েছে। ডিজিটাল যুগে দ্রুত গতির এই জীবনে জেনারেশন জেড-এর মধ্যে উদ্বেগ ও চাপ কমাতে এই মিষ্টি পুনরাবৃত্ত শব্দগুলো বিশেষভাবে কার্যকর। এএসএমআর-এর আরেকটি জনপ্রিয়তার কারণ এখানে শিল্পীর নিজস্ব সৃষ্টিশীলতার প্রকাশ ঘটানো যায়। অনেক এএসএমআর শিল্পীরা এমন কনটেন্ট তৈরি করেন যা নৈকট্যের অনুভূতি জাগায়। প্রচলিত মিডিয়ার বিপরীতে এএসএমআর যতটা সবার ঠিক ততটাই নিজের।

তাছাড়া, জেনারেশন জেড ব্যক্তিগত অভিব্যক্তি এবং বৈচিত্র্যময় কনটেন্টকে গুরুত্ব দেয়। এএসএমআর সম্প্রদায় এই বৈচিত্র্যের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। যেখানে বিভিন্ন থিম এবং পরিস্থিতি নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন শিল্পীরা। হেয়ারড্রেসার হিসেবে ভূমিকা পালন থেকে শুরু করে জটিল শব্দ দৃশ্যপট তৈরি করা আনকোরা এই বিষয়গুলো জেনারেশন জেড-এর সাথে মানানসই।
বিষণ্ণ এই পৃথিবীতে এএসএমআর শান্তির একটি আশ্রয়। যা জেনারেশন জেড-এর জন্য শিথিলতার একটি প্রধান উৎস হয়ে উঠেছে। বিনোদন এবং মননশীলতার মিশ্রণ এই শিল্পকর্ম নতুন প্রজন্মের ডিজিটাল অভ্যাসের একটি স্থায়ী অংশ হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে।