Home বাংলাদেশ ডিমও এখন মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে

ডিমও এখন মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে

নিজস্ব প্রতিবেদক
১৬৯ views
ছবি: ফ্রিপিক

সরবরাহ কম থাকার অজুহাতে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য ডিমের দাম দফায় দফায় বাড়ানো হচ্ছে। দুদিনের ব্যবধানে হালিপ্রতি ৫ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়েছে। এ জন্য এ খাত সংশ্লিটরা একজন আরেকজনকে দোষারোপ করছেন, দিচ্ছেন নানা যুক্তি। ডিমের সিন্ডিকেট আবার সক্রিয় হয়েছে বলেও কেউ কেউ মনে করছেন।

যদিও ডিমের দাম স্বাভাবিক রাখতে গত ১৫ সেপ্টেম্বর উৎপাদন, পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে ডিমের দাম নির্ধারণ করে দেয় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। উৎপাদক পর্যায়ে প্রতিটি ডিম ১০ টাকা ৫৮ পয়সা, পাইকারিতে ১১ টাকা এবং খুচরা পর্যায়ে ১১ টাকা ৮৭ পয়সা দাম নির্ধারণ করা হয়। তবে সরকার নির্ধারিত দামে বাজারে ডিম পাওয়া যাচ্ছে না।

ক্ষুদ্র খামারিরা বলছেন, বাজারে ডিমের কোনো সংকট নেই। করপোরেট প্রতিষ্ঠান ও তেজগাঁওয়ের ব্যবসায়ীরা  সিন্ডিকেট করে দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছেন। ডিমের বাজার অস্থির হওয়ার জন্য তারা দায়ী।

তবে করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, বৃষ্টিপাত ও বন্যায় বিভিন্ন স্থানে সবজির ক্ষতি হওয়ায় ডিমের ওপর চাপ বেড়েছে। আগামী এক মাসের মধ্যে বাজারে ডিমের চাপ কমবে।

তেজগাঁওয়ের পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, তারা এখন প্রতিটি ডিম ১২ টাকা ৮৫ পয়সা থেকে ১২ টাকা ৯০ পয়সায় বিক্রি করছেন। দু-তিন দিন আগেও দাম ১২ টাকা ৬৫ পয়সা থেকে ১২ টাকা ৭০ পয়সা ছিল। আরও কিছুদিন আগে বিক্রি করেছেন ১২ টাকায়।

সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) প্রতিবেদনই বলছে, খুচরা বাজারে অনেকটাই বেশি দামে কিনতে হচ্ছে ডিম।
বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন বলছে, দেশে ডিমের কোনো অভাব নেই। কুমিল্লা, নোয়াখালী ও ফেনীসহ কয়েকটি জেলায় বন্যার কারণে ডিমের উৎপাদন ২০ লাখ কম হলেও অন্যান্য জেলায় উৎপাদন বেশি রয়েছে। তেজগাঁওয়ের ব্যবসায়ী ও করপোরেটরা সিন্ডিকেট করে দাম বাড়িয়েছে।

এ বিষয়ে তেজগাঁও পাইকারি ডিম ব্যবসায়ী সমিতি জানায়, সারা দেশে দিনে ডিমের চাহিদা রয়েছে ছয় কোটি। তেজগাঁও এলাকায় বিক্রি হয় ১৪-১৫ লাখ ডিম। যারা এই ধরনের কথা বলে তারা প্রমাণ দেখাক। বাজারে সবজি ও মাছের সরবরাহ বাড়লে ডিমের ওপর চাপ অনেক কমবে। শীতের সবজি উঠলে আগামী নভেম্বরে ডিমের বাজার স্বাভাবিক হয়ে আসবে।

বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর দাবি, ডিমের সরবরাহে ঘাটতি রয়েছে। ‘পিপলস পোলট্রি অ্যান্ড হ্যাচারি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহবুবুর রহমান বলেন, সাম্প্রতিক বন্যায় অনেক মুরগি মরে গেছে। এ ছাড়া মুরগির বাচ্চার অভাব রয়েছে। এসব কারণে মুরগি ও ডিমের সংকট দেখা দিয়েছে। সারা দেশের ডিমের চাহিদা চার-পাঁচটি করপোরেটের পক্ষে সরবরাহ করা সম্ভব নয়।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মুরগির খাবার ও বাচ্চার দাম নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে ডিমের দামও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। এমতাবস্থায় প্রশ্ন উঠেছে, ডিমের সিন্ডিকেট কি আবারও সক্রিয় হয়ে উঠেছে? নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য ডিমও মধ্যবিত্তদের নাগালের বাইরে চলে যাওয়ায় অনেকে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এখনই ডিমের দামের লাগাম টেনে ধরার আহবান জানিয়েছেন ক্রেতারা।

আরও যা পড়তে পারেন

কমেন্ট করুণ