Home বিশ্ব ইসরায়েলের ৩ স্তরের প্রতিরক্ষা ভেঙ্গে দিয়েছে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র

ইসরায়েলের ৩ স্তরের প্রতিরক্ষা ভেঙ্গে দিয়েছে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র

২৬ views

ইরানে গত বৃহস্পতিবার হামলা চালায় ইসরায়েল। এর জবাবে ইরান ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাচ্ছে। এ পর্যন্ত আড়াই থেকে তিন শ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে ইরান। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফের দাবি, ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র ঠেকিয়ে দেওয়া সম্ভব হয়েছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, এর অন্যতম কারণ ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা বেশ শক্তিশালী।

সিএনএনের খবরে বলা হয়েছে, ইরানের হামলা ঠেকানোর জন্য তিন ধরনের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ব্যবহার করছে ইসরায়েল। এগুলো হলো আয়রন ডোম, ডেভিডস স্লিং ও অ্যারো সিস্টেম। এর বাইরে ইসরায়েলের বেসামরিক মানুষদের রক্ষায় এগিয়ে এসেছে যুক্তরাষ্ট্র। এরপরও সবধরনের প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে ইসরায়েলের মাটিতে আঘাত হানছে ইরানের ক্ষেপনাস্ত্র।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, ইসরায়েলের অস্ত্রভান্ডারে যেসব অস্ত্র রয়েছে, সেগুলোর মধ্যে এখন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে ক্ষেপণাস্ত্রবিধ্বংসী ব্যবস্থা। এক দশক ধরে বিভিন্ন সংঘাতের সময় ইসরায়েলে হতাহতের ঘটনা কম হওয়ার পেছনে একমাত্র কারণ হলো এই আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা বা ক্ষেপণাস্ত্রবিধ্বংসী ব্যবস্থা। তাঁরা আরও বলছেন, কয়েক ধাপের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ব্যবহার করছে ইসরায়েল। এতে করে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ঠিকঠাক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারছে না।

এই প্রতিরক্ষাব্যবস্থার মধ্যে অন্যতম আয়রন ডোম। ২০০৭ সালে এই আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা তৈরি করে ইসরায়েল। ২০১১ সালে থেকে এটি ব্যবহার করছে তারা। তবে এর মাঝে বিভিন্ন কারিগরি উন্নত করেছে। ৭০ কিলোমিটার পাল্লার এই আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ভূমি থেকে ভূমিতে ছোড়া উচ্চমাত্রার বিস্ফোরক বহনকারী রকেট ঠেকিয়ে দিতে সক্ষম। এটি ১ হাজার ১০০টি বস্তুতে নিশানা করতে পারে। ইসরায়েল বলছে, এটি ৯০ শতাংশ নির্ভুলভাবে কাজ করে।

মূলত ক্ষেপণাস্ত্র ছাড়া যেসব ড্রোন, মর্টার বা রকেট ছোড়া হয়, সেগুলো আকাশেই ঠেকিয়ে দিতে পারে আয়রন ডোম। ১০ কিলোমিটার উঁচু পর্যন্ত লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হাতে পারে এই প্রতিরক্ষাব্যবস্থা। সূত্র বলছে, ইসরায়েলজুড়ে ১০টি স্থানে এই আয়রন ডোমের ব্যাটারি রয়েছে। এগুলো থেকে মূলত সংকেত পাঠানো হয়। এই সংকেত কাজে লগিয়ে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম তিন থেকে চারটি উৎক্ষেপণ যন্ত্র স্থাপন করা হয়েছে। এগুলোই মূলত রকেট ঠেকিয়ে দেয়।

যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিভিত্তিক সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের দেওয়া তথ্য অনুসারে, এই উৎক্ষেপণ যন্ত্রগুলো এক স্থানে থেকে আরেক স্থানে নিতে মাত্র কয়েক ঘণ্টা সময় লাগে। এই উৎক্ষেপণ যন্ত্রে যে ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ব্যবহার করা হয়, প্রতিপক্ষের ক্ষেপণাস্ত্র বা রকেট ঠেকিয়ে দেওয়ার জন্য সেগুলো বেশ ব্যয়বহুল। একটি আয়রন ডোমের একটি ক্ষেপণাস্ত্র তৈরিতে খরচ হয় ৪০ হাজার মার্কিন ডলার। যুক্তরাষ্ট্র এই আয়রন ডোম আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থার জন্য ২৯০ কোটি ডলার ব্যবহার করেছে।

যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল মিলে তৈরি করেছে ডেভিডস স্লিং আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা। প্রায় ৩০০ কিলোমিটার দূরে এটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, দূরপাল্লার রকেট ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রে আঘাত হানতে সক্ষম। এটি উড়তে পারে ১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত। এটাতে ব্যবহার করা হয় ১৫ ফুট লম্বা একটি ক্ষেপণাস্ত্র।

এ ছাড়া অ্যারো সিস্টেম নামের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থাও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যৌথভাবে তৈরি করেছে ইসরায়েল। এর মধ্যে অ্যারো-২ ও অ্যারো-৩ ব্যবহার করা হয়েছে। ক্ষেপণাস্ত্র আকাশে ওড়ামাত্র তা ধ্বংস করে দিতে পারে অ্যারো-২ সিস্টেম। আকাশে ১০০ কিলোমিটার উঁচুতে আঘাত হানতে সক্ষম এটি। আর অ্যারো-৩ সিস্টেম ২ হাজার ৪০০ কিলোমিটার দূরে পর্যন্ত আঘাত হানতে সক্ষম।

সূত্র : সিএনএন

আরও যা পড়তে পারেন

কমেন্ট করুণ