Home বিশ্ব পৃথিবীর ৫ পরিত্যক্ত শহর

পৃথিবীর ৫ পরিত্যক্ত শহর

মোহাম্মদ রবিউল্লাহ
৭০ views

একসময় যে শহরগুলো মানুষের ভিড়ে সরগরম থাকতো, সে শহরগুলো আজ ভূতুরে ও জনমানবহীন। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, যুদ্ধ, অর্থনৈতিক সংকট, পারমাণবিক দূষণের মতো নানা কারণে পৃথিবীর বহু শহর পরিত্যক্ত হয়ে গেছে। সেসব শহরের কিছু কিছু এলাকা সর্বসাধারণের জন্য নিষিদ্ধ হলেও এখন কিছু কিছু এলাকা পর্যটকদের জন্যে খুলে দেওয়া হয়েছে। হ্যালোবিডির এই আয়োজনে এমনই পাঁচ শহর সম্পর্কে জানবো।

প্রিপেয়াত, ইউক্রেন:

পরিত্যক্ত শহরের কথা বললে প্রথমেই প্রিপেয়াটের নাম আসে। ১৯৭০ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন চেরনোবিল নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্টকে সমর্থন করার পরই পৃথিবীর নবম নিউক্লিয়ার শহর হিসেবে ধরা হয় এটিকে। ১৯৮৬ সালের ২৬ এপ্রিল বিকেল পর্যন্ত এই শহরের জনসংখ্যা ছিল ৪৯ হাজারের বেশি।

তবে বিকেলে চেরনোবিল দুর্ঘটনার পরই শহরটি পরিত্যক্ত ও জনশূন্য হয়ে পড়ে। সরিয়ে নেওয়া হয় সব বাসিন্দাদের। শহরটির রেডিয়েশন এখন কমে এসেছে। অনেক পর্যটক শহরটি দেখতে গেলেও স্থায়ীভাবে বসবাস করেন না কেউ। এটি পরিত্যাক্ত শহর।

গার্নেট, যুক্তরাষ্ট্র: 

১৮৬০ সাল পর্যন্ত এখানে ছিল মানুষের বাস। কিন্তু আমেরিকায় অন্যতম পরিত্যক্ত শহরের নাম গার্নেট। এক সময়ের গোল্ডমাইন সমন্বিত শহর। ব্যাপকভাবে ব্যবসা বাণিজ্য হতো। অনেকের মতে, ১৮৯৮ সাল পর্যন্ত এখানে প্রায় এক হাজার মানুষ বসবাস করতো। তখন শহরটির নাম ছিল মিচেলো।

তবে সোনার খনির ব্যবসা বন্ধ হতেই গার্নেটের জৌলস হারিয়ে ধীরে ধীরে পরিত্যক্ত হতে শুরু করে। সবাই শহর ছেড়ে চলে যায়। ১৯১২ সালে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে প্রায় অর্ধেক শহর ধ্বংস হয়ে যায়। বর্তমানে এটিও একটি পর্যটন কেন্দ্র, তবে পরিত্যক্ত।

হাশিমা দ্বীপ, জাপান:

জাপানের দক্ষিণভাগে অবস্থিত এই দ্বীপ। নাগাসাকি শহর থেকে এর দূরত্ব মাত্র ১৫ কিলোমিটার। এই দ্বীপে এক সময় কয়লা আবিষ্কার হয়। তারও প্রায় ৮০বছর পর ১৮৮৬ সালে, সমুদ্রের নিচে খোঁজ মেলে কয়লার খনির। ১৯৫৯ সাল পর্যন্ত এই দ্বীপে বাস করতেন পাঁচ হাজারেরও বেশি মানুষ। কিন্তু কয়লার জোগান ফুরিয়ে আসতেই ১৯৭৪ সাল থেকে ধীরেধীরে ফাঁকা হতে শুরু করে দ্বীপটি।

২০০০ সাল পর্যন্ত হাশিমা দ্বীপ পরিত্যক্ত অবস্থাতেই ছিল। দ্বীপটি ভূতের দ্বীপ নামে পরিচিতি পায়। কিন্তু এরপর জাপান সরকার এই দ্বীপের কিছু বাড়ি মেরামত করলে পর্যটকদের আনাগোনা বাড়ে। ২০১৫ সাল থেকে এটি ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় স্থান পায়।

বোডি, যুক্তরাষ্ট্র:

উনিশ শতকের গোড়ায় ক্যালিফোর্নিয়ার বোডিতে সোনার খনির খোঁজ মেলে। সেই সময় লোকে লোকারণ্য হয়ে ওঠে এই শহর। ছোট্ট সুন্দর এই শহরটিতে এক সময় ৭ হাজার নাগরিক বসবাস করত।

কিন্ত বিশ শতকের শেষের দিকে শহরটির গড়িমা কমতে শুরু করে। শহর ছাড়তে শুরু করে মানুষজন। এমনকী রেলপথও পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে। এখন যেন ভূতের শহর হয়ে পড়ে রয়েছে বোডি।

তবে অবাক করা বিষয় হল, পরিত্যক্ত হলেও শহরের সবকিছুই একদম আগের মতো সাজিয়ে রাখা। পর্যটকরা গেলেও শহরের কোনও জিনিস তাঁদের হাত দেয়া হয় না।

কোলমানস্কোপ, নামিবিয়া:

মরুভূমির রাজ্যে যেন এক জনশূন্য ভূতুড়ে শহর নামিবিয়ার কোলমানস্কোপ। নামিব মরুভূমির কাছের একটি হীরের খনির কাছে গড়ে উঠেছিল এই কোলমানস্কোপ। ১৯৫০ সালের মাঝামাঝি সময়ে ভূতুড়ে শহরের বদনাম তৈরি হয় শহরটিকে ঘিরে।

এরপরই তা নিয়ে ভয় পেতে শুরু করেন মানুষজন। ছাড়তে শুরু করেন শহর। ধীরে ধীরে পরিত্যক্ত হয়ে যায় শহরটি। কালক্রমে গোটা শহরটিকে গিলে ফেলে মরুভূমি। যদিও এখনও মরুভূমির মাঝেই সেই শহরের কিছু বাড়ির নান্দনিক সব সাজসজ্জা দেখতে পাওয়া যায়, যা দেখলে যে কেউ তাজ্জব হয়ে যান।

আরও যা পড়তে পারেন

কমেন্ট করুন

Hello Bangladesh

বাংলাদেশের একটি অন্যতম অনলাইন সংবাদ পোর্টাল হ্যালো বাংলাদেশ। ২০২৪ সালে যাত্রা শুরু করা ‘হ্যালো বাংলাদেশ’ সর্বোচ্চ মান বজায় রেখে কনটেন্ট প্রকাশে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা দেশ বিদেশের সংবাদ, প্রযুক্তি, সংস্কৃতি, ইতিহাস, বিনোদন এবং উদ্ভাবনসহ নানা বিষয়ে প্রতিদিনের আপডেট আপনাদের কাছে পৌঁছে দিতে সদা প্রস্তুত।

Edtior's Picks

Latest Articles

u০০a৯২০২২u০০a০Soledad.u০০a০All Right Reserved. Designed and Developed byu০০a০Penci Design.