Home বিশ্ব ৩,৮০০ কোটি রুপির সম্পদ রেখে গেছেন রতন টাটা

৩,৮০০ কোটি রুপির সম্পদ রেখে গেছেন রতন টাটা

নিজস্ব প্রতিবেদক
১৩৫ views

মুম্বাইয়ে ব্রিচক্যান্ডি হাসপাতালে গত বুধবার রাতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ভারতের শিল্পজগতের উজ্জ্বলতম নক্ষত্র রতন টাটা। তার বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর। টাটা গোষ্ঠীকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছেন রতন টাটা। তার সময়েই টাটা গ্রুপের বৃদ্ধি সবচেয়ে বেশি।

টাটা গোষ্ঠীর ব্যবসা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে আছে এবং বাড়ির রান্নাঘর থেকে আকাশে বিমান পর্যন্ত। এই গ্রুপের ১০০টিরও বেশি তালিকাভুক্ত কোম্পানি রয়েছে এবং তাদের মোট টার্নওভার প্রায় ৩০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বিশ্বের অনেক দেশে টাটা গ্রুপের ব্যবসা ছড়িয়ে আছে। আর বংশ পরম্পরায় সেই ঐতিহ্য বহন করেছেন রতন টাটা নিজেও।

শিল্পজগতে তিনি এতটাই স্বচ্ছল ছিলেন যে তার বিরুদ্ধে কোনও আর্থিক তছরুপ এবং অন্যান্য অভিযোগের আঙুল ওঠেনি। এই বিষয়ে রতন টাটা বরাবর একজন ‘ট্রু জেন্টলম্যান’ ছিলেন। বিশ্বের সফলতম শিল্পপতিদের তালিকায় ভারতের আম্বানি-আদানিদের নাম বার বার উঠে আসলেও রতন টাটা সকলের মণিকোঠায় এক অন্যতম ভালবাসার স্থান দখল করে রেখেছে। জানা গিয়েছে মৃত্যুর সময় তিনি প্রায় ৩,৮০০ কোটি রুপির সম্পদ রেখে গেছেন। হারুন ইন্ডিয়ার ধনীদের তালিকায় ১২১ নম্বর স্থানে ছিলেন তিনি।

২৮ ডিসেম্বর ১৯৩৭ সালে জন্মগ্রহণকারী রতন টাটার সম্পদের এই পরিসংখ্যানটি তার বিশ্বব্যাপী ব্যবসার বিবেচনায় কম বলে মনে হতে পারে। মনে হতেই পারে, এত বড় গ্রুপের চেয়ারম্যানের সম্পত্তি এত কম। যদি আমরা এর পেছনের কারণ সম্পর্কে বলি, তার উপার্জনের একটি বড় অংশ দান করা হয়।

রতন টাটা তার উদারতার জন্য পরিচিত ছিলেন এবং ভারতের শীর্ষ জনহিতৈষীদের মধ্যে ছিলেন, যারা তার আয়ের একটি বড় অংশ টাটা ট্রাস্টে দান করতেন। এই দানগুলো টাটা ট্রাস্ট হোল্ডিং কোম্পানির অধীনে সংস্থাগুলোর দ্বারা করা মোট উপার্জনের ৬৬ শতাংশ অবদান রাখে।

সুনামি হোক বা করোনা মহামারির প্রাদুর্ভাব, রতন টাটা প্রতিটি সঙ্কটে সাহায্য করতে এগিয়ে ছিলেন। শুধু সামাজিক কাজেই নয়, আর্থিক সমস্যায় ভুগছেন এমন ছাত্রদের সাহায্য করার জন্যও তিনি সর্বদা অগ্রণী ছিলেন। ছাত্রদের জন্য অসংখ্য বৃত্তি দেন তিনি। জেএন টাটা এনডাউমেন্ট, স্যার রতন টাটা স্কলারশিপ এবং টাটা স্কলারশিপের মাধ্যমে ছাত্রদের সাহায্য দেওয়া হয়।

রতন টাটার আয়ের বেশিরভাগটাই আসত টাটা গ্রুপ ও টাটা সন্স থেকে। মাসিক বেতন পেতেন আড়াই কোটি রুপি। এছাড়া মুম্বাইয়ের কোলাবায় সমুদ্র সংলগ্ন এলাকায় তার বিলাসবহুল বাংলো রয়েছে। যার মূল্য প্রায় দেড়শো কোটি রুপি। কিন্তু তিনি তার আয়ের অনেকটাই অংশ দান করতেন। টাটা সন্সে তার যে শেয়ার ছিল সেখান থেকে তিনি যে অর্থ উপার্জন করতেন, তার বেশিরভাগটাই চ্যারিটেবল ট্রাস্টে দান করে দিতেন রতন টাটা।

এছাড়া ওলা, পেটিএমের মতো সংস্থায় তার বিনিয়োগ ছিল। টাটা গোষ্ঠীর ওয়েবসাইট অনুযায়ী জানা যায়, টাটা এন্টারপ্রাইজের ২৬টি সংস্থা তালিকাভুক্ত রয়েছে শেয়ার বাজারে। আর এই সংস্থাগুলোর সম্মিলিত বাজার মূলধন হল ৩৬৫ বিলিয়ন ডলার। আশা করা যাচ্ছে রতন টাটার পরে এবার উত্তরসূরী হিসেবে তার সৎ ভাই নোয়েল টাটা সিংহাসনে বসতে পারে।

আরও যা পড়তে পারেন

কমেন্ট করুণ