রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন আবাসিক ও অনাবাসিক এলাকার দেওয়ালগুলো ঠাসা ছোট ছোট বিজ্ঞাপনে। কোনোটা রঙিন কাগজের তো কোনোটা সাদা। বাহারি অফারে এসব বিজ্ঞাপন বা বিজ্ঞপ্তি ঝুলছে ঢাকার দেওয়ালে দেওয়ালে। বাসা ভাড়া, সিটভাড়া, প্রাইভেট পড়ানো থেকে শুরু করে মালামাল পরিবহনসহ সবধরনের সেবার জন্য তথ্য থাকে দেওয়ালে টানানো ছোট ছোট কাগজের বিজ্ঞাপনে।

রঙিন কাগজে মোড়া ছোট ছোট বিজ্ঞাপন, ছবি: হ্যালো বাংলাদেশ
ঝামেলা না থাকায় মানুষ নিজের প্রয়োজন অনুযায়ী পোস্টারে দেওয়া মোবাইল নম্বর বা ঠিকানায় যোগাযোগ করেন। নির্ধারিত মোবাইল নম্বরে কথা বলার পর পছন্দ হলে বাসা দেখতে যায়। নইলে সঙ্গে সঙ্গে অন্য বিজ্ঞাপনে মনোযোগ দেয়। গ্রীণরোডের দেওয়ালে টানানো একটি বিজ্ঞাপন দেখে বাসা ঠিক করছিলেন তিনজন। তারা জানান, কয়েকটা বিজ্ঞাপন দেখে বাড়িওয়ালার সঙ্গে কথা বলেছি। ভাড়া বেশি। তাই একটু কম ভাড়ার বাসা খুঁজছি।

রাজধানীর একটি দেওয়ালে লাগানো অসংখ্য বিজ্ঞাপন, ছবি: হ্যালো বাংলাদেশ
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন এই তিনজন। সারাদিন চাকরি করার পর সময় পান না। তাই রাতের বেলায় বের হয়েছেন বাসার খোঁজে। এজন্য দেওয়ালের বিজ্ঞাপনগুলো খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখে নির্ধারিত নম্বরে ফোন দিচ্ছেন তারা। মিরপুর আগারগাঁওয়ের একটি দেওয়ালে সিট ভাড়ার বিজ্ঞাপন দেখতে আসা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আরিফ হোসেন জানান, হঠাৎ মেস ছাড়তে হচ্ছে। দ্রুত একটা সিট লাগবে। তাই পুরো এলাকা চষে বেড়াচ্ছি একটা মোটামুটি মানের সিটের জন্য। শেষ পর্যন্ত পেয়েছি আপাতত সেখানেই উঠব।

একটি অ্যাপার্টমেন্টের গেটের সামনে লাগানো বাসা ভাড়ার নোটিশ, ছবি: হ্যালো বাংলাদেশ
শুধু বাসা বা সিট নয়, অন্যান্য আরও অনেক কিছুরই বিজ্ঞাপন থাকে এসব দেওয়ালের বিজ্ঞাপনে। তবে ফ্ল্যাট বাসার মালিকদের অনেকে আবার বাসার গেটের সামনেই সাইনবোর্ডে ঝুলিয়ে দেন বাসা ভাড়ার তথ্য। দেওয়া থাকে ফোন বা মোবাইল নম্বর। এ জন্য দেওয়ালে দেওয়ালে বিজ্ঞাপন ঝুলান না তারা। কলাবাগানের একজন বাড়িওয়ালা জানান, বাসা খুব বেশি ফাঁকা হয় না। যদি ভাড়াটিয়া ছেড়ে দেয় তবে গেটের সামনে নোটিশ টানিয়ে দিই। অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই ভাড়া হয়ে যায়। এ জন্য দেওয়ালে বিজ্ঞাপন দিতে হয় না।

দেওয়ালে লাগানো হারানো বিজ্ঞপ্তির বিজ্ঞাপন, ছবি: হ্যালো বাংলাদেশ
অবশ্য এসব বিজ্ঞাপন লাগানোর জন্য লোক ভাড়া নিতে হয় না বরং নিজেরাই তা লাগান দেওয়ালে। সাজ্জাদ হোসেন নামের একজন জানান, আমি একটা মেস চালাই। তিনটা সিট ফাঁকা আছে। থাকা-খাওয়া ও ইন্টারনেট সুবিধা আছে মেসে। আশা করি, দু’একদিনের মধ্যে সদস্য পেয়ে যাব।

বাংলামটরের দেওয়ালে লাগানো শর্তযুক্ত একটি বিজ্ঞাপন, ছবি: হ্যালো বাংলাদেশ
প্রসঙ্গগত, ঢাকায় মেস, ভাড়াটিয়া বা ভাড়া দেওয়া বাড়ির সংখ্যা কত এটার কোনো সঠিক হিসাব নেই। তবে পুলিশের সংগৃহীত তথ্য বলছে, রাজধানীতে প্রায় ১৯ লাখ পরিবার বাস করে। এর মধ্যে ভাড়াটিয়া ও বাড়িওয়ালা মিলিয়ে ১৬ লাখ ৮৬ হাজার ৪৩৩টি পরিবারের তথ্য রয়েছে পুলিশের কাছে। বাকিদের তথ্য সংগ্রহের কাজ চলমান রয়েছে।