বাংলাদেশের প্রথম মহাকাশচারী, এবং বিশ্বের প্রথম নারী হিসেবে চাঁদে পা রাখার মিশনে প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করেছেন রুতবা ইয়াসমিন। এতে করে তার চাঁদে যাওয়া নিশ্চিত না হলেও বাছাই পর্বে শুরুর দিকেই রয়েছেন। স্পেস নেশনের ‘মুন পাইওনিয়ার মিশন’-এ অংশ নিয়ে তিনি এই কৃতিত্ব অর্জন করেন।
রুতবা ইয়াসমিন যুক্তরাষ্ট্রের মাউন্ট হোলিওক কলেজ থেকে পদার্থবিজ্ঞানে স্নাতক ও গণিতে মাইনর ডিগ্রি অর্জন করেন। কোভিড-১৯ মহামারির সময় দেশে ফিরে তিনি ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে ডেটা সায়েন্সে উচ্চতর ডিগ্রি নেন।
২০২৪ সালে ইউনিভার্সিটি অব সাউথ আলাবামা থেকে ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। তার গবেষণার মূল বিষয় ছিল ‘মহাকাশ আবহাওয়া ও ভূ-চৌম্বকীয় ঝড় (জিওম্যাগনেটিক স্টর্ম)’। রুতবার মতে, এই ঝড়গুলো মহাকাশযান, স্যাটেলাইট ও পৃথিবীর আবহাওয়ায় বড় প্রভাব ফেলে।
মহাকাশশিল্পে মাত্র ১১ শতাংশ নারী বলে রুতবার আক্ষেপ রয়েছে। এই চিত্র বদলানো দরকার বলেও তিনি মনে করেন। ছোটবেলা থেকেই নারী মহাকাশচারী সুনীতা উইলিয়ামস তার অনুপ্রেরণা ছিল। মুন পাইওনিয়ার মিশনের প্রশিক্ষণে রুতবাকে স্পেসস্যুট পরে মহাকাশে কাজ করা, সিমুলেটেড সংকট মোকাবিলা ও মিশন কন্ট্রোলে যোগাযোগ রক্ষার কৌশল শিখেছেন।
এক পর্যায়ে জরুরি Extravehicular Activity (EVA ) অর্থাৎ, মহাকাশযানের বাইরে গিয়ে কাজ করে তিনি একটি বিপজ্জনক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। এছাড়া, ISRU (in-situ resource utilization) মডিউলের দিকনির্দেশনা দিয়ে তার দলকে সহায়তা করেন। সহজ ভাষায় ISRU এর মানে হলো চাঁদে গিয়ে সেখানকার মাটি, বায়ু খনিজ পদার্থ ব্যবহার করে টিকে থাকার কৌশল।
তিনি ‘MAG7’ (Magnificent Seven) দলের সদস্য ছিলেন। দলগত পরিকল্পনা, নেতৃত্ব ও চাপের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেওয়ার দক্ষতায় তারা মিশনটি সফলভাবে সমাপ্ত করেন। মহাকাশ অভিযানের জন্য শারীরিক ও মানসিক প্রস্তুতি জরুরি। ভালো ঘুম, সুষম খাবার ও মহাকাশের পরিবেশে মানিয়ে নেওয়ার দক্ষতা তাকে এই মিশনের জন্য প্রস্তুত করে। রুতবা চাঁদের নমুনা সংগ্রহ ও আর্টেমিস মিশনের মতো বড় প্রকল্পে কাজ করতে চান। তার লক্ষ্য, মহাকাশ গবেষণায় ইতিহাস গড়ে অন্য নারীদের জন্য পথ সুগম করে তোলা।
এই অভিযান বাংলাদেশের জন্য একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক, যা ভবিষ্যতে আরও নারীকে মহাকাশ গবেষণায় অনুপ্রাণিত করবে।