কোমি ব্যাস, পেশায় চিকিৎসক। তিন সন্তান, স্বামী নিয়ে সুখের সংসার। ভারত থেকে ব্রিটেনে গিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস করার স্বপ্ন দেখেছিলেন কোমি ব্যাস। কিন্তু ভাগ্যের কী পরিহাস! আহমেদাবাদ থেকে লন্ডনগামী এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান আকাশে ওড়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘটে গেল মর্মান্তিক দুর্ঘটনা।
কোমির সপরিবার জীবনের নতুন অধ্যায় শুরুর আগেই সব শেষ। নিহত হলেন চিকিৎসক পরিবারের পাঁচ সদস্যই। তাদের বিমানে উঠার পর শেষ সেলফি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইতিমধ্যে ভাইরাল। মর্মান্তিক এই ঘটনায় ভারতসহ পৃথিবী জুড়ে মানুষের হৃদয় নাড়িয়ে দিয়েছে।
চিকিৎসক কোমি ব্যাসের স্বামী প্রতীক যোশী বিগত ছয় বছর ধরে লন্ডনে রয়েছেন। তিনি পেশায় ছিলেন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়র। দীর্ঘদিন ধরে তাঁর স্ত্রী এবং তিন ছোট সন্তানকে লন্ডনে নিয়ে যাওয়ার জন্য চেষ্টা করছিলেন।
চাইছিলেন, সন্তানদের ভবিষ্যৎ গড়ে উঠুক সে দেশেই। অবশেষে সেই স্বপ্ন সত্যি হতে যাচ্ছিল। কিন্তু আহমেদাবাদের বিমান দুর্ঘটনায় এক লহমার মধ্যে সব শেষ।
ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম থেকে জানা যায়, বহু বছরের কষ্ট, কাগজপত্রের ঝামেলা আর অপেক্ষার পরে অবশেষে সেই স্বপ্ন পূরণের সময় এসেছিল। মাত্র দুই দিন আগে কোমি চাকরি ছেড়ে দেন। প্রিয়জনদের বিদায় জানিয়ে ব্রিটেনে নতুন জীবনের জন্য প্রস্তুত হচ্ছিলেন।
বৃহস্পতিবার সকালে কোমি স্বামী এবং তিন সন্তানকে নিয়ে এয়ার ইন্ডিয়া ফ্লাইট ১৭১-এ ওঠেন লন্ডনের উদ্দেশে। দু’ দিন আগেই স্ত্রীকে নিতে ভারতে এসেছিলেন প্রতীক। এদিন পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা তাঁদের বিদায় জানাতে বিমানবন্দরেও যান।
এরপর তারা বিমানে সপরিবারে হাসিমুখে একটি সেলফি তুলে আত্মীয়দের পাঠান। সেই সঙ্গে ক্যাপশন জুড়ে দেন- কিন্তু অভিশপ্ত বিমানের গেরোয় শেষমেশ লন্ডনে সংসার করার স্বপ্ন অধরাই রয়ে গেল দম্পতির।
বিমানটি দুর্ঘটনায় পড়ে পাঁচজনের কেউই বেঁচে নেই আর। মাত্র কয়েক সেকেন্ডে সব শেষ। তাঁদের মৃত্যুর খবরে বাঁশওয়ারা জুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তাঁদের এক ঘনিষ্ঠ পারিবারিক বন্ধু বলেন, “কোমিদের জন্য গোটা ভারত শোকাহত।”
