পাকিস্তানের করাচি শহরে সোনিয়া নামের একটি হাতি মারা গেছে। ১৫ বছর আলাদা থাকার পর বোন মধুবালার সাথে দেখা হয় তার। তবে প্রিয়জনকে ফিরে পাওয়ার আনন্দ স্থায়ী হয়নি। কারণ পুষ্টির অভাবে দুর্বল হয়ে দুই সপ্তাহ পরই করাচি সাফারি পার্কে মৃত্যু হয় হাতিটির।
২০০৯ সালে সোনিয়া, মালিকা, নুরজাহান ও মধুবালা নামের চারটি হাতি শাবককে তানজানিয়ার বন থেকে নিয়ে আসা হয়। কয়েক দিনের মধ্যে চারটি হাতি শাবককে আলাদা করা হয়। নুরজাহান ও মধুবালাকে করাচি চিড়িয়াখানায় আর মালিকা ও সোনিয়াকে সিটি সাফারি পার্কে রাখা হয়।
দীর্ঘ সময় ধরে অযত্ম ও অবহেলার কারণে অসুস্থ হয়ে ২০২৩ সালের এপ্রিলে মারা যায় নুরজাহান। নুরজাহান মারা যাওয়ার পর সাফারি পার্কে একা হয়ে পড়ে। ১৫ বছর অতিবাহিত হওয়ার মধুবালাকে চলতি বছরের ২৬ নভেম্বর সাফারি পার্কে স্থানান্তর করা হয়। যেখানে তার বোন মালিকা ও সোনিয়া আগে থেকেই বসবাস করছে। মালিকার বর্তমান বয়স ১৭, আর সোনিয়ার ১৯ বছর বয়স।
সাফারি পার্কের পরিচালক আমজাদ জায়েদী ৯ ডিসেম্বর জানান, সকালে সোনিয়া মারা গেছে। সাফারি পার্কে বসবাস করা তিন হাতির মধ্যে সোনিয়াও ছিল। তার মৃত্যুর পর লাহোর থেকে আন্তর্জাতিক একজন পশু চিকিৎসক মরদেহের ময়নাতদন্ত করেছেন। তার রিপোর্ট পাওয়ার পর সোনিয়ার অপ্রত্যাশিত মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। তবে আগের একটি পরীক্ষায় সোনিয়ার শরীরে প্রোটিনের ঘাটতি ছিল বলেও জানায় সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষ।

ছবির ডান পাশে অপুষ্টি রোগে আক্রান্ত সোনিয়া ছবি: গালফ টুডে
২০২১ সাল থেকে হাতির হুমকি নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক প্রাণী চিকিৎসক ডা. ফ্রাঙ্ক গোয়েরিৎজকে হাতির চিকিৎসার জন্য পাকিস্তানে নিয়ে আসার নির্দেশ দেয় সিন্ধু প্রদেশের উচ্চ আদালত। আদালতের নির্দেশের পর পর্যবেক্ষণ শেষে আন্তর্জাতিক ওই প্রাণী চিকিৎসক জানায়, হাতিগুলোর আরও ডায়েট ও চিকিৎসার প্রয়োজন আছে।
গত জুলাইয়ে দেশটির ইংরেজি দৈনিক দ্য ডনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সোনিয়ার পেছনের পায়ের মধ্যে ফোলাভাব ছিল। তবে সংক্রমণ হওয়ার পরও সে সেরে উঠে। পশু অধিকার কর্মীরা পাকিস্তানে প্রাণীদের, বিশেষ করে হাতির দুর্দশা কমাতে দীর্ঘদিন ধরে প্রচার চালাচ্ছেন। তাদের পর্যাপ্ত চিকিৎসা সেবা ও পুষ্টি সরবরাহ করার দাবিও জানিয়েছেন তারা।
তথ্যসূত্র: আরব নিউজ