মার্কিন ডলারের বিপরীতে ভারতীয় মুদ্রা রুপির দর পতন চলছেই। গত তিন দিন ধরে টানা দর হারিয়েছে রুপি। এর মধ্যে ৩ ডিসেম্বর ইতিহাসের সর্বনিম্ন অবস্থানে নেমে আসে রুপি। এদিন ভারতীয় মুদ্রার দর কমে প্রতি ডলার হয় ৮৪.৭৫ রুপি। যদিও দিন শেষে সামান্য বেড়ে হয় ৮৪.৬৮ রুপি। অন্যদিকে ডলারের সূচক বেড়ে হয় ১০৬.৫০। আর ২ ডিসেম্বর প্রতি ডলারের দাম দাঁড়িয়েছিল সর্বনিম্ন ৮৪ দশমিক ৭০ ভারতীয় রুপিতে।
‘আরবিআই’র প্রচেষ্টা
ভারতীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া-আরবিআই ডলার বিক্রি করে রুপি শক্তিশালী রাখার চেষ্টা করছে। রুপির দরপতন আরও বেশি হতো, কিন্তু আরবিআইর হস্তক্ষেপের কারণে তা কিছুটা থামানো গেছে।
দাম কমার যত কারণ
ভারতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধীর হওয়া ও বিদেশি পুঁজি বিনিয়োগ প্রবাহে সংকোচনের ফলে রুপির দাম কমেছে। এছাড়া ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকা নিয়ে গঠিত ব্রিকস অন্তর্ভুক্ত দেশগুলো যদি একটি সাধারণ মুদ্রা তৈরি করার চেষ্টা করে, তবে আমদানি করা পণ্যের ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে বলে হুমকি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের নব নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর প্রভাবও পড়ছে রুপির দামে।
ধারাবাহিক দরপতন উদ্বেগজনক
রুপির ধারাবাহিক দরপতনকে উদ্বেগজনক বলছেন ব্যবসায়ীরা। ভারতের দুর্বল জিডিপি প্রবৃদ্ধি বিনিয়োগকারীদের আস্থা কমাতে পারে। অন্যদিকে সাম্প্রতিক আরবিআইর বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমাও রুপির পতনকে ত্বরান্বিত করছে।
কমেছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ
টানা আট সপ্তাহ যাবৎ ভারতের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমেছে বলেও জানা গেছে। আগেই পূর্বাভাস ছিল চলতি অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বরে প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশের বেশি হবে, তবে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫.৪ শতাংশ হারে; যা ১৮ মাসের সর্বনিম্ন। এর প্রভাব পড়েছে রুপির দামেও।
বাড়ছে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ
রুপির দরপতনের সঙ্গে সঙ্গে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগও বাড়ছে। আমদানি-রপ্তানি থেকে শুরু করে বিদেশে পড়াশোনা করা শিক্ষার্থীদের, সকলেই প্রভাবিত হচ্ছেন। রুপির দরপতনের খেসারত ভোগ করতে হবে সাধারণ গ্রাহকদের।
তথ্যসূত্র: দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস ও রয়টার্স
