উপমহাদেশের তুমুল জনপ্রিয় মুখ দুই অঙ্গণের দুই তারকা অমিতাভ বচ্চন ও শচীন টেন্ডুলকার। একজন বলিউডের সুপার স্টার আরেকজন ক্রিকেটের। অভিনয় ও খেলার সুবাদে উপমহাদেশের বাইরেও পুরো বিশ্বে সমান জনপ্রিয় তারা। দুইজনের আন্তরিকতার জুড়ি মেলাও ভার।
২০০১ সালে গেম শো ফ্র্যাঞ্চাইজ হু ওয়ান্টস টু বি আ মিলিয়নিয়ার-এর ভারতীয় সংস্করণ কৌন বনেগা ক্রোড়পতি অনুষ্ঠানের সিজন ওয়ানে অমিতাভ বচ্চনের অতিথি হিসেবে হাজির হন শচীন। এই দুই কিংবদন্তীর উপস্থিতি দর্শকদের মধ্যে উম্মাদনা বাড়িয়ে দেয়। সেদিন অনুষ্ঠান দেখতে হুঁমড়ি খেয়ে পড়েন দর্শকরা।
বিগ বির আমন্ত্রণে দেড় বছরের শিশুপুত্র অর্জুন টেন্ডুলকারকে সাথে নিয়ে অনুষ্ঠানে আসেন লিটল মাস্টার। শুটিং চলাকালে শচীনের কোলে বসা ছিল দেড় বছরের অর্জুন। জনপ্রিয় ওই অনুষ্ঠান চলাকালেই কমলা খাচ্ছিল শচীনপুত্র। খাওয়া শেষে বিগ বির পরনের কুর্তায় হাত মুছে অর্জুন। সেই দৃশ্য দেখার পর কোন দিকে তাকাবেন শচীন তা ভেবে পাননি। আর বিগ বির সামনে লজ্জায় চোখ লাল হয়ে যায় লিটল মাস্টারের।

লিটল মাস্টার শচীন টেন্ডুলকার ও বলিউড শাহেনশাহ অমিতাভ বচ্চন, ছবি: ক্রিকটেকার ডটকম
১৭ বছর আগে ঘটনার স্মৃতি রোমন্থন করে সম্প্রতি শচীন হিন্দুস্তান টাইমসকে অমিতাভ বচ্চনের সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনার বর্ণনা করেন। ওই ঘটনায় অমিতাভ বচ্চনের আন্তরিকতা দেখে মুগ্ধ হয়ে তার ভূয়সী প্রশংসা করেন শচীন। বর্তমানে তার ছেলের বয়স ২৫ বছর। বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করে খেলছেন গোয়ার ডোমেস্টিক ক্রিকেটে একাডেমিতে।
অমিতাভ বচ্চনও সবসময় শচীন টেন্ডুলকারের প্রশংসা করেন। ২০১২ সালে উমাং ফেস্টিভালে শচীন টেন্ডুলকার স্টেজ চেয়ার ছেড়ে দেন অমিতাভ বচ্চনকে। সে সময় অমিতাভ বচ্চনও শচীনের ভূয়সী প্রশংসা করেন। এই প্রসঙ্গে বিগ বি বলেন, মঞ্চে শচীন আমাকে যে সম্মান দিয়েছেন, এ জন্য আমি কৃতজ্ঞ। শচীন দেশের সম্পদ। আমি তার সম্পর্কে যাই বলি না কেন, তা যথেষ্ট নয়। শচীন আমাদের দেশকে বিশ্বজুড়ে গর্বিত করেছেন।

২০২৪ সালে গোয়া বনাম কর্ণাটক ঘরোয়া ম্যাচে পুত্র অর্জুনকে টিপস দিচ্ছেন শচীন , ছবি: বিবিসি
পেশাদার অভিনেতা হিসেবে ২০২৪ সালে ‘কল্কি ২৮৯৮ এডি’ সিনেমায় অমিতাভ বচ্চনকে শেষবার দেখা যায়। বচ্চন তার কর্মজীবনে অসংখ্য পুরস্কার অর্জন করেছেন; তন্মধ্যে রয়েছে ৪টি শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ও ১৫টি ফিল্মফেয়ারসহ গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক পুরস্কার রয়েছে তার ঝুঁলিতে। অভিনয় ছাড়াও তাকে প্লেব্যাক সিঙ্গার, চলচ্চিত্র প্রযোজক, টেলিভিশন সঞ্চালক হিসেবেও দেখা গেছে। ১৯৮৪-৮৭ পর্যন্ত ভারতীয় সংসদে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ছিলেন।
অন্যদিকে ২০১২ সালের ২৩ ডিসেম্বর শচীন একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে ও ২০১৩ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক টি২০ ক্রিকেট থেকে অবসর নেন। আর ২০১৩ সালের ১৬ ডিসেম্বর মুম্বাই শহরের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ২০০তম টেস্ট ম্যাচ জয়লাভ করে টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নেন ক্রিকেটের ভারতীয় এই আয়কন। বিগ বি ও লিটল মাস্টারের প্রতি আগ্রহ আজও কমেনি দশর্ক-শ্রোতাদের।
তথ্যসূত্র: কইমই ডটকম, মিড ডে ও দ্য হিন্দুস্তান টাইমস