লন্ডন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠকের বিষয়ে জানাতে যুগপৎ আন্দোলনের অন্যতম শরিক গণতন্ত্র মঞ্চের সঙ্গে বৈঠক করেছে বিএনপি।
রোববার (২২ জুন) রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বিএনপির পক্ষে বৈঠকে অংশ নেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।
গণতন্ত্র মঞ্চের নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের হাসনাত কাইয়ুম ও ভাসানী অনুসারী পরিষদের রফিকুল ইসলাম বাবলু।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের বিষয়ে হওয়া বৈঠকই ছিল মূল আলোচ্য বিষয়। আমাদের আন্দোলনের সহযোদ্ধাদের ওই বৈঠকের বিষয়ে অবহিত করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘লন্ডন বৈঠকের পর আমরা একটি নির্বাচনী টানেলে প্রবেশ করেছি। এখন এটি সবাই মিলে কীভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়, সে বিষয়েই আলোচনা হয়েছে। সবাই লন্ডন বৈঠক নিয়ে সন্তুষ্ট।’
এ বিষয়ে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না হ্যালো বাংলাদেশকে বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে যা আলোচনা হয়েছে, তা ইতোমধ্যে সংবাদমাধ্যমে এসেছে। এর বাইরে নতুন কিছু বলা হয়নি। তারেক রহমান আমাদের বলেছেন, যারা বন্ধু ও সহযোগী হিসেবে আছেন, তাদেরকে আনুষ্ঠানিকভাবে বৈঠক সম্পর্কে জানানো প্রয়োজন। এ কারণেই এই বৈঠক।’
উল্লেখ্য, গত ১৩ জুন লন্ডনের ডরচেস্টার হোটেলে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে তারেক রহমানের একটি গোপন বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠক ঘিরে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা গুঞ্জন ও হিসাব-নিকাশ তৈরি হয়।
বৈঠক শেষে একটি যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হবে। যদিও এর আগে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা বলেছিলেন, নির্বাচন এপ্রিলে হবে।
এদিকে এই বৈঠক নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।
ইউনূস-তারেক বৈঠকের পরপরই প্রতিক্রিয়া জানিয়ে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী বলেন, ‘একটি দলকে খুশি করতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন এগিয়ে আনা হচ্ছে—এটি শহীদদের আত্মত্যাগের সঙ্গে প্রতারণার শামিল।’
অন্যদিকে এই বৈঠকের প্রতিবাদ হিসেবে ১৭ জুন ঐক্যমত্য কমিশনের দ্বিতীয় দফার বৈঠকে অংশ নেয়নি জামায়াতে ইসলামী। যদিও পরদিন ১৮ জুন দলের প্রতিনিধি দল বৈঠকে অংশ নেয়।
এর বিপরীতে, তারেক-ইউনূস বৈঠককে ইতিবাচক বলে উল্লেখ করে স্বাগত জানিয়েছে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি, এবি পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, ১২ দলীয় জোট, বাংলাদেশ এলডিপি, খেলাফত মজলিসসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল।