শীত আসি আসি করছে। শীত আসার আগের এই সময়টায় ঠোঁটের অবস্থা শোচনীয় হতে শুরু করে, অর্থাৎ শুষ্ক হতে থাকে। এমন শুষ্ক ঠোঁটে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। যেমন- ইনফেকশন, কালচে ভাব বা হাইপারপিগমেন্টেশন ইত্যাদি। এসব সমস্যা প্রতিরোধের জন্য এখন থেকে ঠোঁটের যত্ন নেওয়ার ব্যাপারে গুরুত্ব দিতে হবে।
স্বাস্থ্যকর ডায়েট
ডার্মাটোলজিস্ট বা চর্মরোগ বিশেষজ্ঞরা ঠোঁটের ত্বকের সুস্থতায় সবার আগে একটি ভালো ডায়েট মেনে চলার বিষয়কে গুরুত্ব দিয়েছেন। প্রচুর পরিমাণে শাকসবজি, মাছ, মাংস, ডিম, দুধ খেতে হবে। এছাড়া পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করলে শরীর ও ঠোঁট আর্দ্র থাকে।

ঠোঁটের যত্ন নিতে চাইলে ডায়েটে প্রচুর শাক-সবজি রাখতে হবে।
আর্দ্র ঠোঁট কম শুষ্ক ও ফাটলপ্রবণ হয়। তাই প্রতিদিন সবার অন্তত আট গ্লাস পানি পান করা উচিত। পাশাপাশি নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। আট ঘণ্টা ঘুমাতে হবে। এগুলো মেনে না চললে যত কিছুই করা হোক না কেন, কোনো লাভ হবে না।
ময়শ্চারাইজার
অনেক কারণে ঠোঁট শুষ্ক হতে পারে। এ অবস্থায় অবশ্যই ঠোঁটে ময়শ্চারাইজার লাগাতে হবে। বেছে নিতে হবে পুষ্টিসমৃদ্ধ লিপ বাম। শুষ্ক ঠোঁটের জন্য সবচেয়ে ভালো শিয়া বাটার, নারকেল তেল, কোকো বাটার, হায়ালুরনিক অ্যাসিড আছে— এমন লিপ বাম বেছে নিন। এর সঙ্গে মাথায় রাখতে হবে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির কথা। এ থেকে বাঁচতে আমরা আমাদের মুখ ও শরীরের ত্বকে সানস্ক্রিন ব্যবহার করি। কিন্তু বাদ পড়ে যায় ঠোঁট।

অবশ্যই ঠোঁটে পুষ্টিসমৃদ্ধ লিপ বাম ব্যবহার করতে হবে।
তাই বাইরে বের হওয়ার আগে এসপিএফযুক্ত লিপ বাম ব্যবহার করতে হবে। এটি ঠোঁটকে রোদে পোড়া, কালচে ভাব বা হাইপারপিগমেন্টেশন থেকে সুরক্ষা দেবে। এছাড়া লিপ বামের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন সবার বিশ্বস্ত ভ্যাসলিন। ঠোঁটের আর্দ্রতা রক্ষায় এটি কতটা কার্যকর, তা সবাই জানেন।
নিয়মিত এক্সফোলিয়েট করা
ঠোঁটের মৃত কোষ দূর করতে ও মসৃণ রাখতে নিয়মিত এক্সফোলিয়েট করতে হবে। ঠোঁট ম্যাসাজ করতে ও ফ্ল্যাকিনেস দূর করতে ঘরে তৈরি স্ক্র্যাব ব্যবহার করাই ভালো, যা তৈরিতে প্রয়োজন হবে মধু ও চিনি। ঘন মিশ্রণ তৈরি করে ঠোঁটে লাগিয়ে কিছুক্ষণ ম্যাসাজ করলেই মৃত কোষ উঠে আসবে।
ঠোঁটের যত্নে ঘি ও বিটরুট
ঘি ও বিটরুট ঠোঁটের জন্য অনেক বেশি উপকারী দুইটি প্রাকৃতিক উপাদান। বাড়তি যত্নের জন্য রুপ-রুটিনে এদের রাখা যেতে পারে। ঘি ঠোঁটের রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে পারে। এতে রয়েছে ভিটামিন এ, সি, ডি, ই এবং কে। এই উপাদানগুলো ঠোঁটের স্বাস্থ্যরক্ষাতে বেশ কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে।

ঘি ঠোঁটের রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে পারে।
ঘি ঠোঁট আর্দ্র করার পাশাপাশি এর কালচে ভাব বা হাইপারপিগমেন্টেশন দূর করতে সক্ষম। ঘরে কেউ চাইলে লিপ বামের পরিবর্তে এটি ব্যবহার করতে পারেন। তবে সবচেয়ে ভালো হয়, রাতে ঘুমানোর আগে ঠোঁটে ঘি ব্যবহার করা।
নরম, গোলাপি ঠোঁট পেতে চাইলে ব্যবহার করতে পারেন বিটরুটের মাস্ক। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা ঠোঁটের কালচে ভাব দূর করতে ম্যাজিকের মতো কাজ করে। এটি তৈরি করতে প্রয়োজন এক চামচ বিটরুট ও আধা চামচ মধু। এর মিশ্রণ তৈরি করে ঠোঁটে আধা ঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টা লাগিয়ে রাখলে চলবে।