প্রতীক্ষিত ঈদ চলে এসেছে। রাজধানী ঢাকা ছাড়ছে লাখো মানুষ। বৃহস্পতিবার (৫ জুন) থেকে শুরু হচ্ছে সরকারি ছুটি। ফলে এ দিন থেকেই বাড়ির উদ্দেশ্যে যাত্রা করবেন অনেকে। তবে বাড়ি ফেরার আনন্দ যেন হয় নিরাপদ, ঝামেলামুক্ত ও সুন্দর। তার জন্য কিছু প্রস্তুতি আবশ্যক। ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন ও নিশ্চিন্ত করতে জেনে নিন কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়-
বাসা-ঘরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) জানায়, ছুটির সময় চুরি-ডাকাতির ঝুঁকি বাড়ে। তাই ঘর তালাবদ্ধ করুন এবং তালা যেন মজবুত হয় নিশ্চিত করুন। আশেপাশের বিশ্বস্ত প্রতিবেশীকে জানান বাসা ফাঁকা থাকবে। সিসিটিভি থাকলে তা সচল আছে কিনা যাচাই করুন। ইলেকট্রিক লাইন, গ্যাস ও পানির সংযোগ বন্ধ রাখুন।
ফ্যান, টিভি, ফ্রিজ, কম্পিউটারসহ অন্যান্য ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতির সুইচ ও প্লাগ খুলে দিন। আগুন বা শর্টসার্কিটের ঝুঁকি কমবে। ফ্রিজে খাবার না থাকলে ফ্রিজ খালি করে বন্ধ করে দিতে পারেন।
ফ্লোর, বারান্দা, বাথরুম ব্লিচিং পাউডার দিয়ে পরিষ্কার করুন। অ্যারোসল ছিটিয়ে নিন। ঝুল পরিষ্কার করে দিন। পানি জমে থাকা রোধ করুন। বালতি, বদনা, ড্রাম খালি করে উল্টো করে রাখুন। কমোড ঢেকে দিন। কারন জমে থাকা পানিতে ডেঙ্গু মশার লার্ভা জন্মাতে পারে।
ঘর ত্যাগের আগে প্রতিটি রুমের ছবি তুলে রাখলে ফিরে এসে কোনো অসামঞ্জস্য চোখে পড়লে ব্যবস্থা নিতে সুবিধা হবে। সব দরজা ও জানালার তালা ভালোভাবে লাগানো হয়েছে কি না নিশ্চিত হোন। সব চাবি সঙ্গে নিতে ভুলবেন না।

ঈদের ছুটিতে ঢাকা ছাড়ছেন ঘরোমুখো মানুষ
যানবাহন ও যাত্রা পরিকল্পনা
আগেভাগে টিকিট বুক করুন। কারন শেষ সময়ে দাম ও ভিড় দুই-ই বাড়ে। নিজস্ব যানবাহন হলে ইঞ্জিন, ব্রেক ও টায়ার চেক করে নিন। বিকল্প রুট চিনে রাখুন। যেকোনো রুটে ট্রাফিক জ্যাম হলে কাজে লাগবে। এক্ষেত্রে গুগল ম্যাপ, বিআরটিএ ট্রাফিক আপডেট ও সড়ক পরিদর্শন অ্যাপ ব্যবহার করতে পারেন। চলছে বর্ষা মৌসুম তাই যাত্রা পথে ছাতা নিতে ভুলবেন না।
ব্যাগ ও জরুরি জিনিসপত্র
ব্যাগপত্র আগে থেকেই গুছিয়ে নিন। জাতীয় পরিচয়পত্র, টিকিট, প্রয়জনীয় ওষুধ, মোবাইল চার্জার ও নগদ কিছু টাকা হাতে রাখুন। মূল্যবান জিনিসপত্র সাবধানে ক্যারি-অন ব্যাগে রাখুন। শিশু ও বৃদ্ধদের জন্য অতিরিক্ত খাবার, পানি ও ওষুধ নিন।
নির্মাণাধীন ভবন বা ছাদে সুরক্ষা
খোলা বৈদ্যুতিক তার, ছাদে খোলা পানির ট্যাংক ঢেকে রাখার ব্যবস্থা নিন। নির্মাণসামগ্রী নিরাপদ স্থানে রাখুন যেন ঝড়-বৃষ্টিতে ক্ষয়ক্ষতি না হয়।
জরুরী প্রয়োজনে যোগাযোগের জন্য পুলিশ হটলাইন, ফায়ার সার্ভিস, সিটি করপোরেশন এবং স্বাস্থ্য জরুরি সেবা নম্বর সংগ্রহে রাখুন।
শুধু নিজে সতর্ক হলেই হবে না। আশেপাশের প্রতিবেশী ও সমাজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব। তাই সাবধানতা মেনে চললে ঈদ কাটবে নির্ভার ও আনন্দময়। আর ফিরে এসে বাড়ির পরিস্থিতিও থাকবে নিরাপদ ও সুরক্ষিত।