সম্প্রতি বৈশ্বিক হেলথ ট্রেন্ডে বেশ পরিচিতি পেয়েছে ‘অয়েল পুলিং’। সকালে ঘুম থেকে উঠে দাঁত ব্রাশ করার আগে এক চামচ নারিকেল তেল মুখে নিয়ে কিছুক্ষণ কুলি করা—এটিই ‘অয়েল পুলিং’ নামে পরিচিত একটি প্রাচীন আয়ুর্বেদিক পদ্ধতি। কয়েক হাজার বছর ধরে ভারতীয় উপমহাদেশে এই অভ্যাসটি চলে আসছে। তবে বর্তমান সময়ে এসে হুট করে এর জনপ্রিয়তা বাড়ছে। প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে সুস্থ থাকতে চাইলে নারিকেল তেলের অয়েল পুলিং হতে পারে এক চমৎকার অভ্যাস।
কী এই অয়েল পুলিং?
অয়েল পুলিং মূলত এমন একটি প্রক্রিয়া, যেখানে মুখে তেল নিয়ে তা ১৫-২০ মিনিট ধরে মুখের ভেতর এদিক-সেদিক ঘুরিয়ে কুলি করা হয়। এটি দাঁত, মাড়ি ও মুখগহ্বরের বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া দূর করতে সহায়ক। নারিকেল তেল অয়েল পুলিংয়ের জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় ও কার্যকরী। কারণ এতে রয়েছে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টিভাইরাল এবং অ্যান্টিফাংগাল উপাদান।

অয়েল পুলিং দাঁত, মাড়ি ও মুখগহ্বরের বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া দূর করতে সহায়ক, ছবি: দ্যা নিউইয়র্ক টাইমস
নারিকেল তেল দিয়ে কুলি করার উপকারিতা:
- নিয়মিত অয়েল পুলিং মুখের ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে, যা মুখের দুর্গন্ধের মূল কারণ। মাত্র কয়েকদিনে এর পার্থক্য বোঝা যায়।
- নারিকেল তেল প্রাকৃতিকভাবে দাঁতের ওপরে থাকা দাগ ও হলদে ভাব দূর করতে সাহায্য করে। দীর্ঘদিন ব্যবহার করলে দাঁত হয়ে ওঠে আরও উজ্জ্বল ও চকচকে।
- অয়েল পুলিং মাড়ির ফোলাভাব, রক্ত পড়া এবং ইনফেকশন রোধে সহায়তা করে। যারা জিনজিভাইটিসে ভোগেন, তাদের জন্য এটি দারুণ কার্যকর।
- আয়ুর্বেদ মতে, মুখগহ্বর শরীরের অনেক রোগের উৎসস্থল। অয়েল পুলিং মুখের জীবাণু দূর করে শরীরকে ডিটক্স করতে সাহায্য করে।
- অয়েল পুলিং শুধু মুখগহ্বর নয়, বরং সাইনাস ক্লিয়ার করা, ঘন ঘন ঠান্ডা লাগা, মাথাব্যথা এমনকি ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রেও উপকারী হতে পারে।

অয়েল পুলিং সাইনাসের সমস্যাও দূর করতে পারে, ছবি: থার্টি টু পার্লস ডেন্টাল ক্লিনিক
কীভাবে করবেন অয়েল পুলিং?
- প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ১ চামচ নারিকেল তেল মুখে নিন।
- তেলটি গলায় না নিয়ে ধীরে ধীরে মুখে ঘুরিয়ে ১৫-২০ মিনিট ধরে রাখুন।
- তেলটি ঘন হয়ে গেলে তা মুখ থেকে ফেলে দিন।
- এরপর উষ্ণ লবণজলে কুলি করে মুখ পরিষ্কার করে নিতে পারেন।
- তারপর স্বাভাবিকভাবে দাঁত ব্রাশ করুন।
উল্লেখ্য, কারো নারিকেল তেলে অ্যালার্জি থাকলে এর বিকল্প হিসেবে তিলের তেল বা সূর্যমুখীর তেল ব্যবহার করতে পারেন।