ঈদ আর সুস্বাদু খাবারের সমাহার- যেন সমার্থক। আর ঈদুল ফিতরের সকাল শুরু হয় মিষ্টিমুখ দিয়ে। এই মিঠাইয়ের তালিকায় সেমাই যেন এক অনিবার্য নাম। ঈদে আমাদের দেশে লাচ্ছা ও বাদামি ঝুরা সেমাইয়ের প্রচলন বেশি। তবে এবার চাইলে বানিয়ে দেখতে পারেন উপমহাদেশের ঐতিহ্যবাহী সেমাইয়ের পদ শির খুরমা।
শির খুরমার ইতিহাস
শির খুরমা নামটি ফার্সি ভাষা থেকে এসেছে, যেখানে ‘শির’ মানে দুধ এবং ‘খুরমা’ মানে খেজুর। এই সুস্বাদু খাবারটির উৎপত্তি মূলত পারস্যে, সেখান থেকে এটি মুঘল আমলে ভারতীয় উপমহাদেশে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। মুঘল রান্নার অংশ হিসেবে এটি রাজকীয় খাবার হিসেবে বিশেষ স্থান দখল করে। সময়ের সঙ্গে এটি উপমহাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে এবং স্থানীয় স্বাদ অনুযায়ী কিছুটা পরিবর্তিত হয়।
শির খুরমার সহজ রেসিপি
শির খুরমা বানানো খুবই সহজ এবং এতে সাধারণত কয়েকটি প্রধান উপকরণ লাগে—সেমাই, দুধ, চিনি, খেজুর, বাদাম ও কিসমিস।

শত বছর ধরে চলে আসছে শির খুরমার ঐতিহ্য, ছবি: পাকিস্তান ক্যাটারিং
যা যা লাগবে:
- বাদামি ভারমিচিলি সেমাই – ১ কাপ
- দুধ – ১ লিটার
- চিনি – ১/২ কাপ (স্বাদ অনুযায়ী)
- ঘি – ২ টেবিল চামচ
- খেজুর – ৫-৬টি (ছোট টুকরো করা)
- কাজু, বাদাম, পেস্তা – ১/৪ কাপ (কুচানো)
- কিসমিস – ২ টেবিল চামচ
- এলাচ গুঁড়া – ১/২ চা চামচ
- গোলাপ জল – ১ চা চামচ (ঐচ্ছিক)
প্রস্তুত প্রণালী:
- প্রথমে একটি প্যানে ঘি গরম করে তাতে বাদাম ও কিসমিস ভেজে তুলে নিন।
- এরপর সেই ঘিয়ে সেমাই হালকা বাদামি হওয়া পর্যন্ত ভাজুন।
- অন্য একটি পাত্রে দুধ জ্বাল দিয়ে ফুটিয়ে নিন।
- ফুটন্ত দুধে ভাজা সেমাই দিয়ে দিন এবং কম আঁচে রান্না করুন।
- এরপর চিনি, খেজুর ও ভাজা বাদাম দিন এবং নাড়তে থাকুন।
- কিছুক্ষণ পর এলাচ গুঁড়া ও গোলাপ জল দিন, তারপর আরও ৫ মিনিট রান্না করে চুলা বন্ধ করে দিন।
ব্যস! তৈরি হয়ে গেল মজাদার শির খুরমা! এটি গরম বা ঠাণ্ডা- দুইভাবেই পরিবেশন করতে পারেন।