ব্যস্ত জীবনের ক্লান্তি দূর করতে অনেকেই দুপুরে কিছুক্ষণ ঘুমিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। তবে একে ‘পাওয়ার ন্যাপ’ হিসেবে গ্রহণ করলে এর উপকারিতা আরও বহুগুণ বেড়ে যায়। গবেষণায় দেখা গেছে, মাত্র ১৫ মিনিটের একটি পাওয়ার ন্যাপ মানসিক এবং শারীরিকভাবে সুস্থ থাকতে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
পাওয়ার ন্যাপ কী?
পাওয়ার ন্যাপ হলো দিনের বেলায় সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য ঘুমানো, যা সাধারণত ১০ থেকে ২০ মিনিটের মধ্যে হয়ে থাকে। দীর্ঘ সময় ঘুমালে গভীর ঘুমের পর্যায়ে প্রবেশ করা হয়, যা জাগ্রত হওয়ার পর ক্লান্তি সৃষ্টি করতে পারে। তবে ১৫ মিনিটের পাওয়ার ন্যাপ শরীরকে চাঙা করে তুলতে এবং মস্তিষ্ককে পুনরুজ্জীবিত করতে সাহায্য করে।
পাওয়ার ন্যাপের উপকারিতা
- একটি স্বল্প সময়ের ঘুম কর্মদক্ষতা এবং সৃজনশীলতা বাড়িয়ে তোলে। এটি বিশেষ করে অফিসগামী ব্যক্তিদের জন্য খুবই উপকারী, কারণ এটি মনোযোগ বৃদ্ধি করে এবং কার্যক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
- পাওয়ার ন্যাপ নেওয়ার ফলে কর্টিসল হরমোনের মাত্রা কমে, যা দুশ্চিন্তা ও মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। এটি মস্তিষ্ককে প্রশান্ত রাখে এবং উদ্বেগ দূর করে।

পাওয়ার ন্যাপ সৃজনশীল চিন্তা ও মনোযোগ বাড়াতে সাহায্য করে, ছবি: দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট
- গবেষণায় দেখা গেছে, পাওয়ার ন্যাপ নেওয়ার ফলে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়। এটি নতুন তথ্য গ্রহণ ও সংরক্ষণ করতে সহায়তা করে, যা শিক্ষার্থী এবং গবেষকদের জন্য অত্যন্ত কার্যকর।
- দুপুরের একটি ছোট্ট ঘুম হৃদযন্ত্রের উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস করে।
- পাওয়ার ন্যাপ নেওয়ার ফলে মস্তিষ্কের নিউরাল অ্যাক্টিভিটি বৃদ্ধি পায়, যা সৃজনশীল চিন্তা ও মনোযোগ বাড়াতে সাহায্য করে।
সঠিকভাবে পাওয়ার ন্যাপ নেওয়ার টিপস
- ১০-২০ মিনিটের মধ্যে ন্যাপ নেওয়ার চেষ্টা করুন।
- কম আলো ও কম শব্দযুক্ত পরিবেশে ঘুমানো ভালো।
- ঘুম থেকে উঠে সঙ্গে সঙ্গে ভারী কাজ না করে কিছু সময় নিজের শরীরকে অভ্যস্ত হতে দিন।
- ন্যাপের আগে চা বা কফি পান করলে এটি ঘুমে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।
একটি ছোট্ট পাওয়ার ন্যাপ শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে দারুণ ভূমিকা রাখে। কর্মব্যস্ত জীবনে এটি সহজেই অন্তর্ভুক্ত করা যায় এবং সুস্থতার জন্য অত্যন্ত কার্যকর। তাই প্রতিদিন মাত্র ১৫ মিনিটের জন্য হলেও পাওয়ার ন্যাপ নেওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন এবং সুস্থ ও কর্মক্ষম জীবন উপভোগ করুন।