বহু ঘটন-অঘটনের মধ্য দিয়ে শেষ হতে চলেছে ২০২৪। বিশ্ববাসী নতুন বছর বরণ করার জন্য প্রস্তুত। পুরানো বছরের হতাশা, অপ্রাপ্তির হিসাবের খাতা বন্ধ করে নতুন আশা নিয়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানাবে সবাই। পৃথিবীর প্রতিটি দেশেই নিউ ইয়ার কিংবা নববর্ষ উদযাপনে সংস্কৃতি চালু রয়েছে। পৃথিবীর নানা প্রান্তের বিভিন্ন সংস্কৃতি ও জাতিগোষ্ঠীর লোকজন তাদের নিজস্ব ঐতিহ্যে ইংরেজি নববর্ষ পালন করেন। চলুন একনজরে জেনে নেই কিছু দেশের নববর্ষ উদযাপনের রীতি—
নিউজিল্যান্ড
খ্রিস্টীয় নববর্ষ প্রথম উদযাপন শুরু হয় নিউজিল্যান্ডের অকল্যান্ড দ্বীপে। আতশবাজি উৎসবে মেতে ওঠেন নিউজিল্যান্ডবাসী।
অস্ট্রেলিয়া
অকল্যান্ড দ্বীপের পর শুরু হয় সিডনিতে নববর্ষ উদযাপন। এ উপলক্ষে প্রায় ৮০ হাজার আতশবাজি ফোটানো হয়, সিডনিতে যা ১৫ লাখ লোক উপভোগ করে। এরপর সিডনির অপেরা হাউজে স্থানীয় সময় রাত ১২টা ১ মিনিটে আতশবাজির মধ্য দিয়ে নতুন বছর বরণ করে নেয় অস্ট্রেলীয়রা। পাশাপাশি সিডনির হার্বার ব্রিজেও আয়োজন করা হয় আতশবাজি উৎসবের।

সিডনির অপেরা হাউজে ১২টা ১ মিনিটে আতশবাজির মধ্য দিয়ে নতুন বছর বরণ করে নেয় অস্ট্রেলীয়রা, ছবি: রেড সিজন
জাপান
জাপানে বছরের প্রথম তিনটি দিন বেশ জাঁকজমকের সঙ্গে উদযাপন করা হয়। বর্ষবরণ নিয়ে রয়েছে তাদের অনেক ঐতিহ্য। এর মধ্যে একটি হলো, ৩১ তারিখ নিউ ইয়ারস ইভে মন্দিরে ঘণ্টা বাজানো। একবার, দুবার নয়, মোট ১০৮ বার ঘণ্টা বাজানো হয়। ১০৮ সংখ্যাটি জাপানিদের কাছে নশ্বর জগতের প্রলোভনের প্রতীক।
একেকটা ঘণ্টা একেকটা প্রলোভন দূর করা। আবার অনেকেই মনে করেন, ১০৮ বার ঘণ্টা বাজালে নতুন বছরে জীবনের ১০৮টি ইচ্ছা পূরণ হবে ও ১০৮টি বিপদ কেটে যাবে।

১০৮ বার ঘণ্টা বাজিয়ে নতুন বছর শুরু করেন জাপানিরা ছবি: বাউস এন্ড অ্যারোস প্যারিস
ডেনমার্ক
ড্যানিশরা কাঁচের প্লেট ভেঙে বর্ষবরণ করে। তারা মনে করেন, বছরের শুরুর দিনটিতে যদি ভাঙা কাঁচের প্লেট পাওয়া যায় দরজার সামনে, তবে তা শুভ সূচনার প্রতীক। ড্যানিশরা এ জন্য প্রতিবেশীদের বাড়ির সামনে বেশি বাসন ভাঙেন। তাদের বিশ্বাস, যার বাড়ির সামনে সবচেয়ে বেশি বাসন থাকবে, সে সবচেয়ে বেশি সৌভাগ্যবান। কারণ তার সবচেয়ে বেশি ভালো বন্ধু ও শুভাকাঙ্ক্ষী আছে।
স্পেন
৩১ ডিসেম্বর রাত ১২টা বাজার আগে স্পেনের বিভিন্ন এলাকার মানুষেরা নতুন বছরকে স্বাগত জানানোর জন্য কেন্দ্রীয় স্কয়ারস বা আইকনিক স্থানগুলোতে জড়ো হতে থাকে। যেমন, রাজধানীর মাদ্রিদে অবস্থিত রিয়াল কাসা দে কোররেও বা দ্যা রয়্যাল হাউজ অব দ্যা পোস্ট অফিসের সামনে মধ্যরাতে হাজার হাজার মানুষ জড়ো হয়। স্প্যানিশদের নতুন বছর বরণের আরেকটি ঐতিহ্য আছে। স্প্যানিশরা রাত ১২টা বাজার আগে ১২টা করে আঙুর খেয়ে থাকেন। কারণ তারা মনে করে এই আঙুর তাদের সৌভাগ্যের প্রতীক।

নতুন বছরে সৌভাগ্যের আশায় স্প্যানিশরা রাত ১২টার আগে ১২টা করে আঙুর খেয়ে থাকেন, ছবি: ম্যাশড
স্কটল্যান্ড
যুক্তরাজ্যের স্কটল্যান্ডে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান শুরু হয় ৩০ ডিসেম্বর থেকে। হাজারো মানুষ আগুনের মশাল নিয়ে পার্লামেন্ট স্কয়ার থেকে ক্যাল্টন হিল পর্যন্ত তৈরি করে ‘রিভার অব ফায়ার’ বা আগুনের নদী। নিজেদের ঐতিহ্যের নাচ-গানতো হয়ই, সঙ্গে থাকে হিমশীতল জলে সাঁতার কাটার দুঃসাহসিক আয়োজন।