বর্তমানে কম বয়সিদের মধ্যেও হাঁটুতে ব্যথা, কোমরে যন্ত্রণা, স্পন্ডালাইটিসের মতো সমস্যা দেখা দিচ্ছে। চিকিৎসকরা বলছেন, এমন সমস্যা আগেও ছিল তবে এখন মানুষ সচেতন হয়েছে। এই ধরনের সমস্যায় পড়লে সরাসরি ডাক্তারের কাছে যাচ্ছেন ও সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে সহজে সুস্থ হয়ে উঠছেন।
সুস্থ জীবনযাপন ও ব্যথা-যন্ত্রণামুক্ত জীবন কাটাতে গেলে ‘মডারেটেড লাইফস্টাইল’ জরুরি বলে মনে করেন চিকিৎসকরা। বিষয়টি ব্যাখ্যা করে চিকিৎসকরা বলছেন, মাসে ৩০ দিনের মধ্যে ২৫ দিন স্বাস্থ্যকর খাবার খেলেন আর ৫ দিন বিরিয়ানি। এতে কোনও ক্ষতি নেই। একইভাবে, এক্সারসাইজ় করতে হবে, কোনও দিন বেশি, কোনও দিন কম।’
প্রতিদিন যদি ১০ হাজার স্টেপ হাঁটা যায়, হাড়ের সুস্থতার জন্য এর চেয়ে ভালো কোনও উপায় নেই। একটানা ঘাড় গুঁজে কাজ করা, দীর্ঘক্ষণ এক জায়গায় বসে ল্যাপটপে কাজ করা, মোবাইল ঘাঁটা— এগুলো সমস্যা বাড়ায়। এই সমস্যা এড়াতে হলে এক্সারসাইজ করতেই হবে।
ভারতের বেঙ্গালুরু অ্যাপোলো হাসপাতালের চিকিৎসক প্রিয়াঙ্কা রোহতগির দাবি, একটানা ২ ঘণ্টা চেয়ারে বসে থাকা ধূমপানের মতো ক্ষতিকর। শরীরের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে যে ভাবতেও পারবেন না।
তার মতে, ‘গবেষণায় দেখা গেছে, ২ ঘণ্টা টানা চেয়ারে বসে কাজ করা একটি সিগারেট পান করার মতো ক্ষতিকর। এতে মৃত্যুঝুঁকিও বাড়তে পারে।
অলস জীবনযাত্রার ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে গবেষণা করছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পুষ্টিবিদ ড. জেমস লিভিন। তার মতে, বসে থাকা ধূমপানের চেয়ে ক্ষতিকর। এটি এইচআইভি ভাইরাসের চেয়ে বেশি মৃত্যুর জন্য দায়ী। গবেষণায় দেখা যায়, দীর্ঘক্ষণ বসে থাকার কারণে শরীরে বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার, হৃদরোগ ও ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, যারা দিনে ১৩ ঘণ্টা বা তার বেশি বসে থাকেন, তাদের অকালমৃত্যুর ঝুঁকি দ্বিগুণ বেড়ে যায়। আবার যারা টানা আধ ঘন্টা বসে থাকেন তাদের অকালমৃত্যুর ঝঁকি অনেক কম বলেও জানান লিভিন।
শরীরের প্রতিটি অংশ একে-অন্যের সঙ্গে যুক্ত। স্নায়ুতে সমস্যা দেখা দিলে হাড় ও মাংসপেশির ওপর চাপ পড়ে। একদিন হাঁটুতে ব্যথা, কাঁধে ব্যথা হতেই পারে। কিন্তু ব্যথা যদি দিনের পর দিন বাড়তে থাকে, সে ক্ষেত্রে ডাক্তারের কাছে যেতেই হবে।
হালের মেডিক্যাল সায়েন্স অনেক উন্নত। মানুষ এখন বেশিদিন বাঁচছেন। সময় থাকতে ডাক্তারের কাছে গেলে, রোগকে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় তাহলে আমাদের অবশ্যই যাওয়া উচিত-এমনটাই মনে করছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।