যুক্তরাষ্ট্রে গত বছর গৃহহীন মানুষের সংখ্যা ১৮ শতাংশ বেড়েছে। দীর্ঘ মেয়াদে উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও অতিরিক্ত আবাসন ব্যয়ের মতো কিছু কারণে গৃহহীন মানুষ এর সংখ্যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাড়ছে। সম্প্রতি প্রকাশিত ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব হাউজিং এন্ড আরবান ডেভেলপমেন্টের (এইচইউডি) এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত জানুয়ারি মাসে দেশটিতে গৃহহীন মানুষ এর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৭১ হাজার ৪৮০। এ সংখ্যা ২০২৩ সালের চেয়ে ১৮ শতাংশ বেশি। প্রতি ১০ হাজার মানুষের মধ্যে ২৩ জন গৃহহীন অবস্থায় রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে।
এইচইউডির তথ্য বলছে, গৃহহীন মানুষ এর সংকট দিন দিন আমেরিকায় অবণতির দিকে যাচ্ছে। শহরের ফুটপাতে তাঁবু ঘেরে বা খোলা স্থানে বাস করা এখন অনেক শহরের সাধারণ ব্যাপার। সংকট মোকাবেলায় কেন্দ্রীয় ও অঙ্গরাজ্য সরকার বিভিন্ন কৌশল হাতে নিয়েছে।
প্রকাশিত তথ্য বলছে, গত এক বছরে ১৮ বছরের কম বয়সীদের মধ্যে গৃহহীন মানুষ এর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি বেড়েছে, যা ৩৩ শতাংশ। দেশটিতে গত বছর মোট দেড় লাখ শিশু গৃহহীন সংকটের মধ্যে পতিত হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রে গৃহহীন মানুষ এর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৭১ হাজার ৪৮০ জন, ছবি: এনডিভি
অন্যদিকে দেশটিতে কৃষ্ণাঙ্গ মানুষেরাও উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় গৃহহীন রয়েছেন। দেশটির মোট জনসংখ্যার ১২ শতাংশ ও দরিদ্র্য জনসংখ্যার ২১ শতাংশ কৃষ্ণাঙ্গ। এই কৃষ্ণাঙ্গরা মোট গৃহহীন মানুষের প্রায় ৩২ শতাংশ।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল লো ইনকাম হাউজিং কোয়ালিশনের তথ্য বলছে,২০২১ সালের জানুয়ারি মাসের তুলনায় ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে দেশটিতে মধ্যম পর্যায়ের বাড়িভাড়া গড়ে ২০ শতাংশ বেড়েছে। এ কারণে মধ্যম ও নিম্ন আয়ের পরিবারগুলো আবাসন খরচের ক্ষেত্রে বাড়তি চাপে রয়েছে, যার ফলে গৃহহীন মানুষ এর সংখ্যাও বাড়ছে।
এর বাইরে প্রাকৃতিক দুর্যোগে মানুষের বাস্তুচ্যুতি, ক্রমবর্ধমান অভিবাসন ও কোভিড মহামারি চলাকালে চালু করা গৃহহীনতা প্রতিরোধ কর্মসূচি বন্ধের ফলেও গৃহহীন মানুষ এর সংখ্যাটি আমেরিকায় বেড়েছে বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি।
সরকারি তথ্য বলছে, সাম্প্রতিক বছরগুলো বাড়ি ভাড়া আকাশচুম্বী হওয়ায় পাশাপাশি বাড়ির দামও বেড়েছে অবিশ্বাস্যভাবে। করোনায় ক্ষত-বিক্ষত মানুষরা ঘুরে দাঁড়ানোর পরিক্রমায় ফেডারেল সরকারের পক্ষ থেকে তেমন কোনো সহায়তা পায়নি। অন্যদিকে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বেড়েই চলছে। বাড়ি ভাড়াও বেড়েছে অকল্পনীয় হারে।
অথচ বেতন-ভাতা বৃদ্ধি করা হয়নি। অধিকন্তু স্বল্প আয়ের মানুষের কর্মঘণ্টাও হ্রাসের গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। এমনি একটি নিদারুণ পরিস্থিতির মধ্যে হাবুডুবু খাওয়া আমেরিকানদের ঘাড়ে নতুন যন্ত্রণা ভর করেছে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে আসা অবৈধ অভিবাসীরা- এমন অভিমতও পোষণ করা হচ্ছে ক্ষোদ বাইডেন প্রশাসনের পক্ষ থেকেও।
তথ্যসূত্র: জিও নিউজ