চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের তৃতীয় মাস সেপ্টেম্বরে মোবাইলে আর্থিক লেনদেন বেড়েছে। এই মাসে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৬৮ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। একক মাসের যা তৃতীয় সর্বোচ্চ লেনদেন। আগের মাস আগস্টে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৯২১ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছিল। এ হিসাবে এক মাসের ব্যবধানে লেনদেন বেড়েছে ৭ হাজার ১৪৭ কোটি টাকা। গত জুলাইয়ে লেনদেনের অঙ্ক ছিল ১ লাখ ২২ হাজার ৯২২ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংক বুধবার (১৩ নভেম্বর) মোবাইলে আর্থিক লেনদেনের হালনাগাদ এই তথ্য প্রকাশ করেছে।
গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের শেষ মাস জুনে ১ লাখ ৫৫ হাজার ৮৩৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছিল, যা ছিল একক মাসের হিসাবে সবচেয়ে বেশি। এর আগে কখনোই এক মাসে এত টাকা লেনদেন হয়নি। এর আগে সবচেয়ে বেশি ১ লাখ ৫৩ হাজার ৭৫৮ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছিল গত মার্চ মাসে।
মোবাইল ফোনের সাহায্যে অন্যকে টাকা পাঠানো, মোবাইল রিচার্জ, বিভিন্ন পরিষেবা ও কেনাকাটার বিল পরিশোধ, টিকেট কেনাসহ কত সেবা যে মিলছে, তা এক দমে বলা খুবই কঠিন। সব মিলিয়ে বিকাশ, রকেট, নগদ ও উপায়ের মতো মোবাইলে আর্থিক সেবা (এমএফএস) বাংলাদেশের সাধারণ মানুষকে আর্থিক স্বাধীনতা ও স্বাচ্ছন্দ্য এনে দিয়েছে।
চলতি বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে মোবাইলে লেনদেনের অঙ্ক ছিল এক লাখ ২৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। দ্বিতীয় মাস ফেব্রুয়ারিতে লেনদেন হয় ১ লাখ ৩০ হাজার ১৪০ কোটি টাকা।
এপ্রিল ও মে মাসে লেনদেন হয় যথাক্রমে ১ লাখ ৪৪ হাজার ৯২৯ কোটি ও ১ লাখ ৪০ হাজার ৯৫২ কোটি টাকা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, গত বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরে লেনদেনের অঙ্ক ছিল ১ লাখ ২৪ হাজার ৫৪৮ কোটি টাকা; নভেম্বরে হয়েছিল ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৭৯ কোটি টাকা।
তার আগের মাস অক্টোবরে এক লাখ ২০ হাজার ৫৯৬ কোটি টাকা লেনদেন হয়। সেপ্টেম্বরে লেনদেন হয় এক লাখ ৮ হাজার ৩৭৮ কোটি ২৩ লাখ টাকা। আগস্টে লেনদেনের অঙ্ক ছিল এক লাখ ৯ হাজার ৫৫৫ কোটি টাকা।
২০২২-২৩ অর্থবছরের শেষ চার মাসেই (মার্চ, এপ্রিল, মে ও জুন) মোবাইলে লাখ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছিল। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রথম মাস জুলাইয়ে তা কমে লাখ কোটি টাকার নিচে—৯৮ হাজার ৩০৬ কোটি টাকায় নেমে আসে।
এরপর থেকে প্রতি মাসেই লাখ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হচ্ছে। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে মোবাইলে লেনদেন হয়েছিল ৩২ হাজার ১১৬ কোটি টাকা। এভাবেই বাংলাদেশে মোবাইলে আর্থিক সেবা বা এমএফএস ব্যবহার প্রত্যাশার চেয়েও দ্রুত গতিতে বাড়ছে।
মোবাইল লেনদেনে গ্রাহক সংখ্যা বেড়েই চলেছে। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে মোট গ্রাহক সংখ্যা ছিল ৬ কোটি ৭৬ লাখ ৭০ হাজার ৪৬৮। সেপ্টেম্বরে সেই গ্রাহক সাড়ে ৩ গুণ বেড়ে ২৩ কোটি ৩৭ লাখ ৭৩ হাজার ৫২৩ তে দাঁড়িয়েছে।
একজন গ্রাহক একাধিক এমএফএস সেবায় হিসাব খুলতে পারেন। খাত-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রকৃতপক্ষে ঠিক কত নাগরিক এমএফএসের আওতায় এসেছেন, তা বলা যাচ্ছে না। তবে প্রতিটি পরিবারেই সেবাটি পৌঁছে গেছে, এটা বলা যায়।