ঈদের আগেই বাজারে আসছে ১০০০, ৫০ ও ২০ টাকার নতুন নোট। তবে এসব নোটে কোনো ব্যক্তির ছবি থাকবে না। বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রাকৃতিক দৃশ্য, ঐতিহ্যবাহী স্থাপনার ছবি থাকবে নোটগুলোতে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমাদের টাকা ছাপানো শুরু হয়ে গেছে। তিনটি নোট শিগগিরই বাজারে আসছে। এগুলো হচ্ছে ২০, ৫০ ও ১০০০ টাকার নোট। ঈদের আগেই এসব নোট আপনারা দেখতে পাবেন। নতুন নোটে কোনো ব্যক্তির ছবি থাকবে না। এখানে আমাদের প্রাকৃতিক দৃশ্য, আমাদের কিছু ঐতিহ্যবাহী ভবন, প্রাণী প্রভৃতির ছবি থাকবে।”
টাকায় মসজিদ-মন্দির-প্যাগোডার মতো ধর্মীয় স্থাপনার ছবি থাকবে কি না, তা জানতে চান এক সাংবাদিক। এ প্রসঙ্গে গভর্নর বলেন, “ঐতিহাসিকভাবে বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ যেসব স্থাপনা রয়েছে সেগুলো থাকবে। সেটা মসজিদই হোক বা মন্দিরই হোক, সেখানে আমরা কোনো পার্থক্য দেখছি না।”
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, এত দিন বাংলাদেশ ব্যাংকের নোটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি ছিল। জুলাই অভ্যুত্থানের পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবিসহ নোট নিয়ে বিতর্ক ওঠায় গত ১০ মার্চ বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সব ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের চিঠি দিয়ে নতুন নোট বিনিময় কার্যক্রম বন্ধ রাখতে বলা হয়।
পাশাপাশি ব্যাংকের শাখায় যেসব নতুন নোট গচ্ছিত আছে, তা বিনিময় না করে সংশ্লিষ্ট শাখায় সংরক্ষণের কথা বলা হয়। এরপর থেকে নতুন নোটের বিনিময় পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। ফলে বাজারে ছেঁড়াফাটা নোট বাড়তে থাকে।
এদিকে টাঁকশালের কর্মকর্তারা জানান, নতুন নকশার নোট ছাপাতে সাধারণত এক থেকে দেড় বছর সময় লাগে। গত বছরের আগস্টে ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। গত ডিসেম্বরে নতুন নকশার নোট বাজারে আনার সিদ্ধান্ত হয়।
তারই ধারাবাহিকতায় চলতি মাসে নতুন নকশার নোট ছাপানো শুরু হয়। তবে একসঙ্গে তিনটি নোটের বেশি ছাপানোর সক্ষমতা নেই টাঁকশালের। তাই প্রথম ধাপে ২০, ৫০ ও ১০০০ টাকার নোট ছাপানো হচ্ছে।
বঙ্গবন্ধুর ছবি ছাড়া সবশেষ নোট ছাপা হয়েছিল ২০০৯ সালে। তখন গভর্নরের দায়িত্বে থাকা সালেহ উদ্দিন আহমেদ এখন অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা। ওই সময় ছাপা লাল রঙের ৫০০ টাকা এবং এক হাজার টাকার কিছু নোট এখনো দেখা যায়।