ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে দেশের অর্থনীতি। গত বছর ইউরোপীয় ইউনিয়নে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি ৪ দশমিক ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। রপ্তানিকারকদের মতে, দুর্ঘটনাপরবর্তী মন্দা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দেয় এটি।
ইউরোস্ট্যাটের তথ্য অনুসারে, বাংলাদেশ গত ক্যালেন্ডার বছরের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর সময়কালে ইউরোপীয় বাজারে পোশাক রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে ১৮ দশমিক ২৭ বিলিয়ন ইউরো, যা ২০২৩ সালে অর্জিত ১৭ দশমিক ৪৪ বিলিয়ন ইউরোর তুলনায় বেশি। ২০১৫ সালে ১১ দশমিক ৫৪ বিলিয়ন ইউরো আয়ের নিম্নমুখী অবস্থা থেকে গত দশকে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি ৫৮ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।
রপ্তানিকারকরা এই স্থিতিশীল বৃদ্ধির একাধিক ব্যাখ্যা দিয়েছেন, যার মধ্যে রয়েছে শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা, রানা প্লাজা ধসের পর কর্মস্থলের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং মানসম্মত পণ্য উৎপাদন। এই অগ্রগতির ফলে ক্রেতাদের আস্থা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং ব্যবসায়িক পরিবেশ উন্নত হয়েছে, যা বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি খাতকে এগিয়ে নিতে সহায়তা করেছে।
২০২৪ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মোট পোশাক আমদানি ৮৫ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ইউরোতে পৌঁছে, যা ২০২৩ সালের ৮৪ দশমিক ৩২ বিলিয়নের তুলনায় ১ দশমিক ২৭ শতাংশ বেশি। বাংলাদেশের প্রধান প্রতিযোগীদের মধ্যে, চীন ২ দশমিক ৩ শতাংশ, পাকিস্তান ১১ দশমিক ৬ শতাংশ এবং কম্বোডিয়া ২০ দশমিক ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করে। পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে, বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সাবেক সভাপতি ফজলুল হক এই প্রবৃদ্ধিকে ‘উৎসাহব্যঞ্জক ‘ বলে অভিহিত করেছেন।
ইউরোস্ট্যাটের তথ্য অনুযায়ী, চীন ২০২৪ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নে ২৪ দশমিক শূণ্য ৪ বিলিয়ন ইউরো মূল্যের পোশাক রপ্তানি করেছে, যা ২০২৩ সালের ২৩ দশমিক ৪৯ বিলিয়ন ইউরোর তুলনায় বেশি। তুরস্ক থেকে ইইউর আমদানি ২০২৪ সালে ৬ দশমিক ৭ শতাংশ হ্রাস পেয়ে ৯ দশমিক ৩০ বিলিয়ন ইউরো হয়েছে। ভিয়েতনাম ৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করে ২০২৪ সালে ৩ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন ইউরো আয় করেছে। পাকিস্তান এবং কম্বোডিয়া যথাক্রমে ৩ দশমিক ৫১ বিলিয়ন এবং ৩ দশমিক ৮৯ বিলিয়ন ইউরো আয় করেছে। ভারত ২০২৪ সালে ইইউতে ৪ দশমিক ১৭ বিলিয়ন ইউরো মূল্যের পোশাক রপ্তানি করেছে, যা ২০২৩ সালের তুলনায় ১ দশমিক ৯ শতাংশ বেশি।