Home বাণিজ্য রেমিট্যান্স প্রেরণে ফের শীর্ষে সৌদি আরব

রেমিট্যান্স প্রেরণে ফের শীর্ষে সৌদি আরব

ইকবাল হোসেন
৪৮ views

যুক্তরাষ্ট্রকে পেছনে ফেলে রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় প্রেরণে আবার শীর্ষে উঠে এলো সৌদি আরব। গত মে মসে বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২২ কোটি ৩৬ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে দেশে। সৌদি আরব থেকে এসেছে আড়াই গুণের বেশি—৫৩ কোটি ৩৪ লাখ ডলার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের রেমিট্যান্স প্রবাহের দেশভিত্তিক হালনাগাদ প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

এতে দেখা যায়, শুধু মে মাস নয়, এপ্রিল মাসে যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে সৌদি আরব থেকে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসেছিল ৩৩ কোটি ৮ লাখ ডলার; সৌদি থেকে এসেছিল ৪৯ কোটি ১৪ লাখ ডলার।

অথচ সবাইকে চমকে দিয়ে বিদায়ী ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের আগের মাসগুলোতে (জুলাই থেকে মার্চ) সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে; ধারেকাছেও ছিল না সৌদি আরব। যেমন—গত মার্চ মাসে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানকারী প্রবাসীরা ৫৪ কোটি ৬১ লাখ ডলার দেশে পাঠিয়েছিলেন। সৌদি আরবের প্রবাসীরারা পাঠিয়েছিলেন ৪৪ কোটি ৮৪ লাখ ডলার।

শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, জুলাই থেকে মার্চ—এই নয় মাসে সৌদি আরবের চেয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকেও বেশি রেমিট্যান্স এসেছে দেশে। এমনকি কোনো কোনো মাসে যুক্তরাজ্য থেকেও সৌদির চেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে।

গত ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে (১২ মাস, ২০২৩ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২৪ সালের ৩০ জুন) সবচেয়ে বেশি প্রবাসী আয় এসেছিল সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে— ৪৬০ কোটি (৪.৬০ বিলিয়ন) ডলার। সৌদি আসে তার প্রায় অর্ধেক ২৭৪ কোটি (২.৭৪ বিলিয়ন) ডলার। যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসেছিল সৌদির চেয়ে বেশি ২৯৬ কোটি (২.৯৬ বিলিয়ন) ডলার।

হঠাৎ করে সৌদি আরব থেকে কেনো বেশি রেমিট্যান্স আসছে—এ প্রশ্নের উত্তরে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান হ্যালো বাংলাদেশকে বলেন, সৌদিতে সবচেয়ে বেশি প্রবাসী অবস্থান করেন, সেখান থেকে বেশি রেমিট্যান্স আসবে— এটাই তো স্বাভাবিক। বছরের পর বছর তাই তো হয়ে আসছে। মাঝে পরিবর্তিত পরিস্থিতির কারণে সৌদি আরব পেছনে পড়ে গিয়েছিল। এখন সেটা ঠিক করা হয়েছে। তাই সৌদি থেকে বেশি রেমিট্যান্স আসছে।

তিনি বলেন, এখন থেকে ব্যাংকগুলোকে যে দেশের রেমিট্যান্স, সেই দেশের আয় হিসেবে দেখানোর নির্দেশনা যথাযথভাবে মেনে চলতে বলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। যে কারণে পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক এক নির্দেশনা জারি করেছে, যাতে প্রতিটি ব্যাংক প্রকৃত উৎস দেশ অনুযায়ী রেমিট্যান্স হিসাব করে রিপোর্ট প্রদান করে। এই নির্দেশনা কার্যকর হওয়ায় এখন রেমিট্যান্স সঠিক উৎস দেশ চিহ্নিত হচ্ছে এবং তথ্য উপস্থাপনেও স্বচ্ছতা ফিরেছে বলে মনে করছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা।

এপ্রিল ও মে মাসে কম আসলেও চলতি অর্থ বছরের ১১ মাসের (জুলাই-মে) হিসাবে বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে। দেশটি থেকে ৪৪৯ কোটি ৪৯ লাখ (৪.৪৯ বিলিয়ন) ডলার এসেছে।

এপ্রিল ও মে মাসে সৌদি আরব থেকে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স আসায় অর্থ বছরের ১১ মাসে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও সৌদি আরব থেকে প্রায় সমান রেমিট্যান্স এসেছে দেশে। এই ১১ মাসে সৌদি থেকে এসেছে ৩৮০ কোটি (৩.৮০ বিলিয়ন) ডলার। আর আমিরাত থেকে এসেছে ৩৮৪ কোটি (৩.৮৪ বিলিয়ন) ডলার।

অথচ গত ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে সৌদি আরবের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ রেমিট্যান্স আসে আমিরাত থেকে। ওই অর্থ বছরে সৌদি থেকে ২৭৪ কোটি ১৫ লাখ (২.৭৪ বিলিয়ন) ডলার আসে। আর আমিরাত থেকে আসে ৪৬০ কোটি (৪.৬০ বিলিয়ন) ডলার। আর যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২৯৬ কোটি ১৬ লাখ (২.৯৬ বিলিয়ন) ডলার এসেছিল।

 

 

 

আরও যা পড়তে পারেন

কমেন্ট করুণ