Home বাণিজ্য ৮০ বছরে ষষ্ঠ বিয়ে করলেন বিশ্বের চতুর্থ ধনী

৮০ বছরে ষষ্ঠ বিয়ে করলেন বিশ্বের চতুর্থ ধনী

হ্যালো বাংলাদেশ ডেস্ক
৭৬ views

সম্প্রতি ফোর্বসের বিশ্বে ধনকুবেরদের তালিকায় চার নম্বরে উঠে এসেছে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ওরাকলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা বিশ্বের চতুর্থ ধনী ল্যারি এলিসন। শুধু সে কারণেই নয়, আরও একটি কারণে সংবাদ শিরোনামে উঠে এসেছেন তিনি। ৮০ বছর বয়সে ষষ্ঠ বার বিয়ে করেছেন ল্যারি এলিসন। খবর সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের

আমেরিকার অন্যতম ধনকুবের এলিসনের ষষ্ঠ স্ত্রীর পরিচয় প্রকাশ্যে আসতেই জোর আলোচনা শুরু হয়েছে সংবাদমাধ্যমগুলোতে। মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্রী ও চীনের বাসিন্দা জোলিন ঝু হলেন বিশ্বের চতুর্থ ধনকুবেরের ঘরনি। আমেরিকায় আন্তর্জাতিক গবেষণায় স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করতে এসেছিলেন ঝু।

৮০ বছরের ল্যারির এই দাম্পত্যসঙ্গীর বয়স ৩৩। ৪৭ বছরের ছোট তরুণীর সঙ্গে ২০২৩ সালে ল্যারি বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হলেও সে সম্পর্কে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে চাননি ওরাকল কর্তা। যার ফলে ঝু-এর পরিচয় নিয়ে ধোঁয়াশা ছিল বিভিন্ন মহলে। নভেম্বর মাসে মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুটবল দলের জন্য কয়েকশো কোটি ডলার চুক্তির পর ঝু সমাজিকমাধ্যমে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসেন।

মিশিগান বুস্টার দলের পক্ষ থেকে সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে এই চুক্তির জন্য ওরাকল কর্তা এলিসন ও তার স্ত্রীকে ধন্যবাদ জানানো হয়। সেই পোস্টকে ঘিরে ঝু-এর পরিচয় নিয়ে তার নিজের দেশেও ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে বলে সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। চিনা তরুণী জোলিন ঝু-এর আসল নাম কেরেন ঝু। লেখাপড়ার জন্য তিনি আমেরিকা পাড়ি দিয়েছিলেন ২০১০ সালে।

২০১২ সালে মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন জোলিন। সংবাদমাধ্যমের তথ্য বলছে, এলিসনের সঙ্গে ঝু-এর আলাপ ২০১৭ সাল থেকেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলা সংক্রান্ত নানা অনুষ্ঠানে হাজির থাকতেন ঝু। সেখান থেকেই ল্যারির সঙ্গে পরিচয় ও সম্পর্ক। ২০১৯ সালে একটি টেনিস প্রতিযোগিতায় পর পর কয়েক দিন তাদের দু’জনকে একসঙ্গে দেখা গিয়েছিল।

Larry Ellison1

ষষ্ঠ স্ত্রী জোলিন ঝু সঙ্গে ল্যারি এলিসন। ছবি: ইএপি

সেই সময় ল্যারি তার পঞ্চম স্ত্রী নিকিতার সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ ছিলেন। ২০২০ সালে ৩৮ বছর বয়সি নিকিতার সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ হয় তাদের। নিকিতা একজন ইউক্রেনীয়-আমেরিকান মডেল। তার আগে আরও চারটি বিয়ে করেছিলেন ওরাকলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা। ১৯৬৭ সালে আদা কুইনকে প্রথম বিয়ে করেন বিশ্বের চতুর্থ ধনী ল্যারি। ৭৪ সালে তারা আলাদা হয়ে যান।

তারপর আরও তিন জনকে বিয়ে করেন ল্যারি। কোনও বিয়ের স্থায়িত্বই বেশি দিন হয়নি। দুই সন্তানও রয়েছে তার। এক ছেলে ও এক মেয়ে।

নিকিতার সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ হওয়ার পর এলিসন কখনওই প্রকাশ্যে স্বীকার করেননি তার সঙ্গে ঝু-এর সম্পর্কের কথা। নতুন সম্পর্ক নিয়ে প্রথম থেকে লুকোছাপা করে গিয়েছেন দু’জনেই। এমনকি তাদের দাম্পত্যও রহস্যে মো়ড়া। তারকা দম্পতির বয়সের বড় পার্থক্যও পাপারাৎজিদের মধ্যে কৌতূহলের জন্ম দিয়েছে।

ঝু-এর পারিবারিক পটভূমি সম্পর্কে বিশদে জানা না-গেলেও চীনা সমাজিকমাধ্যমগুলোর দাবি, ঝু-এর বাবাও একটি সংস্থার সিইও। লিয়াওনিংয়ে অবস্থিত সেই সংস্থাটি চিকিৎসা সংক্রান্ত যন্ত্রপাতি তৈরি করে। ঝু-এর পরিবারও যথেষ্ট বিত্তশালী।

অন্য কয়েকটি সূত্র আবার দাবি করেছে, জোলিন মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। চীনের লিয়াওনিংয়ের উত্তর-পূর্ব ইউকাইয়ের একটি স্কুলে পড়াশোনা করেছিলেন। স্কুলটি বিদেশি ভাষা শিক্ষার জন্য বহুল পরিচিত। পরবর্তী কালে তিনি ম্যাসাচুসেটসের সাইমন্‌স রকের বার্ড কলেজে ভর্তি হন বলে দাবি করা হয়েছে।

আমেরিকায় পড়তে আসার পর ঝু একটি ভাড়াবাড়িতে থাকতেন। ২০২০ সালের পর তার ঠিকানা পাল্টে যায়। কলেজের প্রথম বছরে যে অ্যাপার্টমেন্টে ঝু থাকতেন, সেখানে তার সঙ্গে থাকতেন আরও এক ছাত্র অ্যাং ঝু। দু’জনের পদবি এক হলেও তাদের মধ্যে কী সম্পর্ক ছিল তা জানা যায়নি। তারা দম্পতি ছিলেন, না ভাই-বোন তা নিয়ে কোনও তথ্যই প্রকাশ্যে আসেনি।

স্নাতক হওয়ার পর ঝু ক্যালিফোর্নিয়ার বে এরিয়াতে বসবাস করতে থাকেন। সেখানেই থাকতেন বিশ্বের চতুর্থ ধনী ল্যারিও। সেখানে তিনি একটি অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া নেন। ঝু বর্তমানে আমেরিকার নাগরিক। আমেরিকায় ভোট দেওয়ার নথিতে তার ঠিকানা হিসাবে যেটি দেখানো হয়েছে সেটির মালিকও ল্যারি। ফ্লোরিডার একটি বিশাল সম্পত্তি বলে চিহ্নিত এটি। ২০২২ সালে এলিসন শত কোটি ডলারে সম্পত্তিটি কেনেন। ৩৩টি কামরা ও ৩৮টি শৌচাগার রয়েছে এই প্রাসাদোপম বাড়িটিতে। এ ছাড়া হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের লানাই নামের একটি দ্বীপ কেনেন তিনি। ২০১২ সালে ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকার বিনিময়ে দ্বীপটির মালিকানা হাতে পান বিশ্বের চতুর্থ ধনী ল্যারি এলিসন। লানাই কেনার পর রাতারাতি এই জায়গার ভোল বদলে ফেলেন তিনি। লানাইয়ে বহু বিলাসবহুল পাঁচতারা হোটেল তৈরি করেন তিনি। তৈরি করেন বিলাসবহুল রিসোর্ট। বিশ্বের চতুর্থ ধনী ব্যক্তি ল্যারি পাঁচটি বাড়ির একটি কমপ্লেক্সও তৈরি করেছেন লানাই দ্বীপপুঞ্জে।

এলিসন ৩৭ বছর ধরে ওরাকলের সিইও ছিলেন। তিনি ২০১৪ সালে পদত্যাগ করেন। বর্তমানে ওরাকলের ৪০ শতাংশের মালিকানা রয়েছে তার হাতে। ১৯৪৪ সালের ১৭ আগস্ট জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ৮০ বছর বয়সি এই আমেরিকান ধনকুবের তার কর্মজীবন শুরু করেছিলেন অ্যাম্পেক্স কর্পোরেশনে একজন কম্পিউটার প্রোগ্রামার হিসাবে। তার বর্তমান সম্পত্তির পরিমাণ ১৪১ বিলিয়ন ১৪ হাজার ১০০ কোটি ডলার।

আরও যা পড়তে পারেন

কমেন্ট করুণ