পরিবেশবান্ধব গ্রিন শীপ ইয়ার্ডের যন্ত্রপাতি আমদানিতে আগাম কর ও ভ্যাট অব্যাহতির আদেশ দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। পরিবেশের দূষণ কমাতে জাহাজ ভাঙা শিল্প মালিকদের জন্য এ শুল্ক ছাড় দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
এনবিআরের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে জাহাজ ভাঙা শিল্পের মুলধনী যন্ত্রপাতি আমদানি ২৬ শতাংশ শুল্ক দিতে হয় শিল্প মালিকদের। নতুন আদেশের ফলে ১৫ শতাংশ ভ্যাট ও ৫ শতাংশ আগাম কর থেকে ছাড় পারে আমদানিকারকরা।
গ্রিন শিপ ইয়ার্ডের মালিকরা এখন থেকে মুলধনী যন্ত্রপাতি আমদানিতে ৫ শতাংশ কাস্টমস ডিউটি ও ১ শতাংশ অগ্রিম আগাম কর দিয়ে আমদানি চালান খালাস করতে পারবে।
জাহাজ ভাঙা শিল্পের জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ ইয়ার্ডগুলোকে গ্রিন শিপ ইয়ার্ড করায় আগ্রহ বাড়াতেই এ আদেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান এনবিআর কর্মকর্তারা। এতে গ্রিন শিপ ইয়ার্ডের দিকে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বাড়বে।
গত রোববারের ওই আদেশে বলা হয়, ২০২৩ সালের জুনে বাংলাদেশ ‘হংকং ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশনে’ সই করায় ২০২৫ সালের ২৬ জুনের মধ্যে সব জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণে গ্রিণ শিপ ইয়ার্ডে উন্নীত করতে হবে। এ সময়ের পর বাংলাদেশ গ্রিন শিপ ইয়ার্ড ব্যাতীত জাহাজ আমদানি করতে পারবে না।
এতে আরও বলা হয়, এ সুবিধায় আমদানিকৃত মুলধনী যন্ত্রপাতি শুধু গ্রিন শিপ ইয়ার্ডেই ব্যবহার করতে হবে এবং ৫ বছরের মধ্যে তা হস্তান্তর বা বিক্রি করা যাবে না। যদি এ সময়ের মধ্যে এসব যন্ত্রপাতি বিক্রি বা স্থানান্তর করা হয় তাহলে সুবিধা নেওয়া আগাম কর ও ভ্যাট পরিশোধ করতে হবে।
এ সুবিধা ২০২৫ সালের ২৬ জুন পর্যন্ত বলবৎ থাকবে বলে আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ শিপ ব্রেকার্স অ্যান্ড রিসাইকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএসবিআরএ) তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে ছোট-বড় ৫০টি শিপ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ ইয়ার্ড রয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ৬টির গ্রিন শিপ ইয়ার্ডের সনদ রয়েছে। গ্রিন শিপ ইয়ার্ডের প্রক্রিয়ায় আছে আরও অন্তত ১০-১৩টি শিপ ইয়ার্ড।
১৯৬০ সালের দিকে চট্টগ্রাম সীতাকুন্ড এলাকায় এ শিল্পের সুচনা হয় এবং দেশে প্রতিবছর গড়ে ১৫০-২০০টি পুরাতন জাহাজ এসব শিপ ইয়ার্ডে ভাঙা হয় বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
জানা গেছে, ‘হংকং ইন্টারন্যাশনার কনভেনশন অনুযায়ী আগামী জুনের মধ্যে গ্রিন শিপ ইয়ার্ড ছাড়া অন্য কোনো শিপ ইয়ার্ড পুরোনো জাহাজ আমদানি করতে পারবে না। ফলে বেশিরভাগ সচল শিপ ইয়ার্ডকে গ্রিন শিপ ইয়ার্ডে উন্নীত করতে হলে বিপুল পরিমাণ যন্ত্রপাতি প্রয়োজন। সরকারের এ সিদ্ধান্তের কারণে এ খাতের বিনিয়োগকারীরা তাদের ইয়ার্ডগুলোকে গ্রিন শিপ ইয়ার্ডে উন্নীত করতে উৎসাহিত হবে।