বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে পৌঁছেছেন জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে যোগ দিতে। ড. ইউনূস এমন এক সময়ে জাতিসংঘের এই অধিবেশনে যোগ দিয়েছেন যার মাত্র দেড় মাস আগে বাংলাদেশে বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে। গত ১৫ বছরে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকারকে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে হটানো হয়েছে এবং একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। এই অধিবেশন বাংলাদেশের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি দেশের আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি পুনর্গঠনের, বৈদেশিক সাহায্য ও সহযোগিতা অর্জনের এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে আলোচনা করার একটি সুযোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে। ২৭ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিতব্য ড. ইউনূসের ভাষণে এই পরিস্থিতির প্রতিফলন ঘটবে এবং বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ কৌশল নির্ধারণে ভূমিকা রাখবে।

গুরুত্বের কারণসমূহ:
- আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি পুনর্গঠন: গত ১৫ বছর ধরে মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের বিষয়গুলো নিয়ে পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছিল। এই সম্মেলন বাংলাদেশের জন্য একটি সুযোগ, যাতে তারা তাদের নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতা তুলে ধরতে পারে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে নিজেদের ভাবমূর্তি পুনর্গঠন করতে পারে।
- সাহায্য ও বিনিয়োগের আহ্বান: বাংলাদেশ বর্তমানে অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছে। এবারের সম্মেলনে বৈদেশিক সাহায্য ও বিনিয়োগ আনার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। ড. ইউনূস ও তার প্রতিনিধিদল বিভিন্ন দেশের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে আর্থিক সহযোগিতা চাওয়ার সুযোগ পাবেন।
- গণতন্ত্র ও মানবাধিকার: বর্তমান সরকারের কর্মকর্তারা আন্তর্জাতিক মহলে নতুন রাজনৈতিক পরিবর্তনের চিত্র তুলে ধরার চেষ্টা করবেন। এটি গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
- বিশ্বজনীন ইস্যুতে অংশগ্রহণ: এবারের অধিবেশন থেকে রোহিঙ্গা সংকট, জলবায়ু পরিবর্তন, নিরাপদ অভিবাসন ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো তুলে ধরা হবে। এসব ইস্যুতে বাংলাদেশের অবস্থান স্পষ্ট করা আন্তর্জাতিক সহযোগিতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
- ভারত সম্পর্ক: প্রতিবেশী দেশ ভারতকে নিয়ে আলোচনা গুরুত্বপূর্ণ। ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে, যা দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নে সহায়ক হতে পারে।
এখন বাংলাদেশের জন্য আন্তর্জাতিক মহলে নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী করার এবং প্রয়োজনীয় সহযোগিতা অর্জনের একটি স্বর্ণালী সুযোগ রয়েছে। এই সম্মেলন দেশের ভবিষ্যৎ কৌশল নির্ধারণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।