আবাসন ভাতা, প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট অনুমোদনসহ তিন দফা দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার উদ্দেশে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের লংমার্চ কর্মসূচিতে লাঠিচার্জ, টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকসহ আহত হয়েছেন অর্ধশত।
আহতদের মধ্যে প্রায় ৩০ জন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। প্রতিবাদে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা রাজধানীর কাকরাইল মসজিদ এলাকায় সড়কে সামনে বসে পড়েন। আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর কাকরাইল মসজিদ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশের সঙ্গে জবি শিক্ষার্থীদের ধস্তাধস্তি, ছবি: হ্যালো বাংলাদেশ
সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল সাড়ে ১১টার দিকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখে রওনা হন। প্রথমে গুলিস্তান মাজার গেটে বাধার সম্মুখীন হন তারা। বাধা অতিক্রম করে তারা মৎস্য ভবনের দিকে যেতে থাকেন। লংমার্চটি সেখানে পৌঁছালে দ্বিতীয় দফায় পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। এবারও তারা বাধা উপেক্ষা করে যমুনা অভিমুখে এগিয়ে যেতে থাকেন। তবে শিক্ষার্থীদের লংমার্চটি কাকরাইল মসজিদ এলাকায় পৌঁছালে অতর্কিতভাবে পুলিশ টিয়ারগ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড, গরম পানি নিক্ষেপ করতে শুরু করে।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ শতাধিক আহত হয়েছেন। টিয়ারগ্যাসে আহত হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্দিন, সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহাতাব হোসেন লিমন। এ সময় বেশ কয়েকজন সাংবাদিক আহত হন। তাদের মধ্যে রয়েছেন- ঢাকা ট্রিবিউন এর জবি প্রতিনিধি সোহান ফরাজি ও দৈনিক সংবাদের জবি প্রতিনিধি মেহেদী।

সতর্ক অবস্থা সেনা সদস্যরা, ছবি: হ্যালো বাংলাদেশ
আহত শিক্ষক সমিতির সেক্রেটারি ড. মো. রইছ উদ্দিন বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার বিচার ও দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা এখানে অবস্থান করব।’ রমনা জোনের ডিসি মাসুদ বলেন, যমুনার সামনে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
আন্দোলনকারীদের তিন দফা দাবি হলো- আবাসনব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০% শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন বৃত্তি ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে কার্যকর করতে হবে; জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কাটছাঁট না করেই অনুমোদন করতে হবে; জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ পরবর্তী একনেক সভায় অনুমোদন করে অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়ন করতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. তাজাম্মুল হক বলেন, ‘আমার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ হামলা চালিয়েছে। শিক্ষার্থীদের ন্যায্য আন্দোলনে পুলিশ অমানবিক আচরণ করেছে। এর বিচার না হওয়া পর্যন্ত এখন থেকে যাওয়া হবে না।’