দেশের সবচেয়ে দরিদ্র জেলা মাদারীপুর। এ জেলার দারিদ্র্যের হার ৫৪ দশমিক ৪ শতাংশ। মাদারীপুরের উপজেলাগুলোর মধ্যে সর্বনিম্ন দারিদ্র্য ৫০ শতাংশ। এর মধ্যে ডাসার উপজেলার দারিদ্র্যের হার সবচেয়ে বেশি ৬৩ দশমিক ২ শতাংশ। এ ছাড়া জেলা হিসেবে সবচেয়ে ধনী নোয়াখালী।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) প্রকাশিত ‘বাংলাদেশের দারিদ্র্য মানচিত্র ২০২২’ শীর্ষক জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। এতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল-ভিত্তিক অর্থনৈতিক বৈষম্যের চিত্র ফুটে উঠেছে।
বিবিএসের দারিদ্র্য মানচিত্রে দেখা যায়, দেশের বিভাগীয় দারিদ্র্য সবচেয়ে বেশি বরিশাল বিভাগে-২৬ দশমিক ৬ শতাংশ। সবচেয়ে কম দারিদ্র্য চট্টগ্রাম বিভাগে-১৫ দশমিক ২ শতাংশ। ঢাকা জেলার সামগ্রিক দারিদ্র্যের হার ১৯.৬ শতাংশ। আর সামগ্রিকভাবে দেশের দারিদ্র্যের হার ১৯.২ শতাংশ। এ হিসাবে ঢাকায় দারিদ্র্যের হার সারা দেশের চেয়ে বেশি।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী মানুষের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এ এলাকার ১৯.১ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করেন। ঢাকার পল্টনে দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী মানুষের সংখ্যা সবচেয়ে কম। এই এলাকার মাত্র ১ শতাংশ জনগোষ্ঠী দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করেন। ঢাকায় দারিদ্র্যের হার কম এমন এলাকাগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ধানমন্ডি– যেখানে মাত্র ১.৫ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করেন। এরপরে রয়েছে গুলশান (৩.২ শতাংশ), মোহাম্মদপুর (৪.৬ শতাংশ), রামপুরা (৬.৩ শতাংশ), বাড্ডা (৭.৪ শতাংশ), বনানী (১১.৩ শতাংশ) এবং মিরপুর (১২.৯ শতাংশ)।
২০১৭ সালের ক্রয়ক্ষমতা সমতার ভিত্তিতে নির্ধারিত আন্তর্জাতিক দারিদ্র্যসীমা হলো দৈনিক আয় ২.১৫ ডলার। অর্থাৎ, দৈনিক ২.১৫ ডলারের কম আয় করা মানুষ দরিদ্র বলে গণ্য হবেন।
প্রতিবেদনে দেশজুড়ে বিত্তশালী ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে বিস্তর অর্থনৈতিক বৈষম্যের চিত্র উঠে এসেছে। দেশে দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে চলমান লড়াইয়ে সামনে আসা বিভিন্ন চ্যালেঞ্জগুলোকেও চিহ্নিত করা হয়েছে।
প্রকাশনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের মো. মাহবুব হোসেন। বিশেষ অতিথি বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির উপপ্রধান সিমোন লসন পার্চমেন্ট। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিবিএসের মহাপরিচালক মো. মিজানুর রহমান।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ, সংস্থা, জাতিসংঘ ও উন্নয়ন সংস্থা, উন্নয়ন সহযোগী, বিবিএস ও এসআইডির কর্মকর্তা, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।